দমদম , 22 মার্চ : এক মাস আগে পরিবারের সঙ্গে রাজস্থান বেড়াতে গিয়েছিলেন৷ সেই সময় বাড়িতে ফিরেছিলেন তাঁর আমেরিকা থাকা ছেলে ৷ তবে কি বাইরে গিয়েই এসেছে জীবাণু, নাকি ছেলের মাধ্যমে হয়েছে সংক্রমণ ? নাকি উৎসস্থল অন্য কোথাও এই সকল প্রশ্নই উঠে আসছে দমদমের কোরোনা আক্রান্ত প্রৌঢ়ের ক্ষেত্রে ৷ কীভাবে তাঁর শরীরে মারণ এই ভাইরাসের সংক্রমণ হল তার উৎস নিয়ে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে দক্ষিণ দমদম পৌরসভাকে ৷
বর্তমানে কোভিড 19 এর পরীক্ষার জন্য আক্রান্ত প্রৌঢ়ের পরিবারের দুই জন সদস্য, কর্মচারী ও শাশুড়ির নমুনা সংগ্রহের জন্য বাঙ্গুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠান হয়েছে ৷ এর পাশাপাশি ওই অঞ্চলে থাকা আরও পাঁচ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে ।
এই বিষয়ে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার পৌর পারিষদ গোপা পাণ্ডে বলেন, "প্রতিবেশীরা জানিয়েছে ওই ব্যক্তির ছেলে পড়াশোনার জন্য আমেরিকায় থাকেন । তাঁকে ফেব্রুয়ারি মাসে দেখা গিয়েছিল এলাকায় ৷ গতমাসে তাঁরা রাজস্থানও বেড়াতে গিয়েছিলেন । তাই বাইরে থেকে যে তিনি সংক্রমণ এনেছেন তা উ়ড়িয়ে দেওয়া যায় না । তাই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন এমন আরও চারজনের নমুনা সংগ্রহের জন্য আজ বাঙ্গুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । সমস্যা হলে পৌরসভা পাশে আছে তবে অযথা প্রতিবেশীদের আতঙ্কিত এবং গুজব ছড়াতে বারণ করেছি ''।
এছাড়াও,আক্রান্ত ব্যক্তি কয়লাঘাটার কর্মচারী ছিলেন । তিনি সেলস কাউন্টারে বসতেন । ফলে কাউন্টারে বসার কারণে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে হত তাঁকে । সেখান থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না । আজ দক্ষিণ দমদমের পৌর-পারিষদ গোপা পাণ্ডে পুলিশ প্রশাসন এবং মহকুমা শাসককে সঙ্গে নিয়ে আক্রান্তের বাড়িতে যান । পরিবারের সদস্যরা খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন । পরে তাঁদের বুঝিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় ।
অন্যদিকে, পৌরসভার কর্মচারীরাও ওই বাড়িতে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন । গোপা পাণ্ডে উদ্যোগী হয়ে তাঁদের জন্য অ্যাপ্রন, মাস্ক, স্যানিটাইজার ও জুতোর ব্যবস্থা করলে তাঁরা আক্রান্তের বাড়িতে যেতে রাজি হয়ে যায় । পৌরসভার কর্মচারীদের সহযোগিতায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহের জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় । কোরোনা সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য দক্ষিণ দমদম পৌরসভার তরফে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে । সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার পৌর পারিষদ, কাউন্সিলর, লেকটাউন ও দমদম থানার আধিকারিক ও স্থানীয় সমাজকর্মীদের যুক্ত করা হয়েছে । কেউ কোরোনায় সন্দিগ্ধ বা আক্রান্ত হয়েছেন অথবা গুজব ছড়াচ্ছেন এই ধরণের খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানাতে বলা হয়েছে ।