কলকাতা, 4 এপ্রিল: শেষ আপডেট করা হয়েছে 1 এপ্রিল । তারপর থেকে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে কোরোনা সংক্রান্ত বুলেটিন বন্ধ । আচমকা বুলেটিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।
দিনটা ছিল 4 ফেব্রুয়ারি । ওইদিন থেকে প্রায় রোজ নিয়ম করে দিনের শেষে রাজ্যের কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেওয়া হত বুলেটিন । যেখানে থাকত কতজনকে সংক্রমিত সন্দেহে নজরে রাখা হয়েছে । কতজন বাড়িতে নজরবন্দী। হাসপাতাল আইসোলেশনে কতজন রয়েছেন । কতজনের স্যাম্পেল টেস্টের জন্য নেওয়া হয়েছে । কতজনের টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া গেছে । তাঁদের মধ্যে কতজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ । কতজন সুস্থ হয়েছেন । এবং মৃত্যু হয়েছে কতজনের । এইসব নানা তথ্য পাওয়া যেত একনজরে । কিন্তু, সেই বুলেটিন শেষবার দেওয়া হয়েছে 1 এপ্রিল । তারপর থেকেই বুলেটিন বন্ধ ।
1 এপ্রিল ছড়িয়ে যায় রাজ্যে কোরোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা 6 । ওইদিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী জানান 6 নয়, মৃতের সংখ্যা 3 । মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক । বিরোধীরা অভিযোগ তুলতে শুরু করে, তথ্য চাপার চেষ্টা করছে রাজ্য । পরেরদিন নবান্নে কোরোনা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ দল একটা দাবি করে । রাজ্য সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডাঃ ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 53 । ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে 7 জনের। রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে সেই দাবি করেন তিনি । একইসঙ্গে জানান, গত 24 ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন 16 জন । তার ঘণ্টা দুয়েক পর সন্ধে 6টা নাগাদ রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, আক্রান্তের সংখ্যা 34, আর মৃতের সংখ্যা 3 । মুখ্যসচিব রীতিমতো অঙ্ক কষে বুঝিয়ে দেন, কেন এই পরিসংখ্যান । মুখ্যসচিবের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যের সব মিলিয়ে কোরোনা আক্রান্ত 53 জন । তারমধ্যে তিনজন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন । অর্থাৎ সংখ্যা কমে দাঁড়াল 50 । এই 50 জনের মধ্যে 9 জনের পরবর্তী রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে । যে 7 জনের মৃত্যুর কথা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে চারজন অন্য কারণে মারা গেছেন । সেই কারণে তাঁদের ক্ষেত্রে কোরোনা সংক্রমণে মৃত্যু হিসেবে ধরা হচ্ছে না । অর্থাৎ 41 থেকে চার বাদ দিলে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে 37 । আর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, রাজ্যে পজ়িটিভ আক্রান্তের সংখ্যা 38 । অথচ শেষদিনের বুলেটিনে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর দাবি করেছিল, আক্রান্তের সংখ্যা 37।
কিন্তু কেন এই লিখিত বুলেটিন দেওয়া বন্ধ করে দিল স্বাস্থ্য দপ্তর ? প্রশাসনের একটি মহলের ব্যাখ্যা, তারপর থেকে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিবের মতো কর্তারা নিজেরাই জানাচ্ছেন আপডেট । তবে কি সেই কারণে স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন বন্ধ হয়ে গেল ? উঠছে প্রশ্ন ।