কলকাতা, 13 জুলাই : উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত মামলার শুনানি হবে 20 জুলাই ৷ বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাগুলির শুনানি হবে ৷ উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপরে 9 জুলাই স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । তারপরও ফের জটিল হতে থাকে পরিস্থিতি ৷ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন রাজীব ব্রম্ভ নামে এক চাকরিপ্রার্থী সহ আরও কয়েকজন ৷ তাঁদের দাবি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত হবেন তাঁরা ৷
তবে ইতিমধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে নিয়োগ-প্রক্রিয়া চালাচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই তা চালাতে পারবে । 21 জুন স্কুল সার্ভিস কমিশন 14 হাজার 339 টি পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করেছিল । কিন্তু সেই তালিকায় প্রার্থীদের কোনও নম্বর উল্লেখ না থাকায় হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয় । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রথমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন ।
পরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে আদালতে ডেকে বিচারপতি নির্দেশ দেন, যদি এক সপ্তাহের মধ্যে কমিশন সমস্ত সফল, অকৃতকার্য প্রার্থীদের নম্বর সহ লিস্ট প্রকাশ করতে পারে, এবং তিনি যদি তাতে সন্তুষ্ট হন, তাহলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে সমস্ত রকম স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হবে । সেইমতো 8 জুলাই সমস্ত প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর সহ তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন । 9 জুলাই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মামলার শুনানিতে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেন ।
তারপরও একাধিক চাকরি প্রার্থীর অভিযোগ তাঁদের কোনও ভুল ত্রুটি না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ইন্টারভিউ লিস্ট থেকে বাদ গিয়েছেন । তাঁরা সমস্ত ডকুমেন্ট আপলোড করেন ৷ কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে তাঁদের ডকুমেন্টস আপলোড করা হয়নি । ফলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা বঞ্চিত হবেন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে । তাই আগে তাঁদের অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হোক । তারপর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করুক স্কুল সার্ভিস কমিশন ।
আরও পড়ুন : Post Poll Violence : নিহত বিজেপি কর্মীর ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
আপাতত এই সমস্ত অভিযোগের উপর আগামী 20 জুলাই শুনানি করা হবে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে । উল্লেখ্য মামলার গেরোয় রাজ্যে প্রায় গত পাঁচ বছর ধরে কোনও শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব হয়নি । সে ব্যাপারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগের দিনই উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন । তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার সময় জানিয়েছিলেন, এমনিতেই বছরের-পর-বছর নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে । তারপর তিনি আর সময় নষ্ট করতে চান না । কিন্তু ফের ডিভিশন বেঞ্চে যেভাবে একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে তাতে যেকোনও সময় নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে চাকরি প্রার্থীরা ।