কলকাতা, ১৭ মার্চ : কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জাল নথি দেওয়ার অভিযোগ উঠল অরিন্দম রায় নামে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে । অভিযুক্ত ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি (HC Orders Against Lawyer) দেবাংশ বসাক ৷ পাশাপাশি বার কাউন্সিলকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ৷
হাইকোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা এই আইনজীবীকে এর আগেও হাইকোর্ট জাল নথি জমা দেওয়ার দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল। পুলিশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে একটি চক্র বহু লোককে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ উঠেছিল ৷ পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজন ধরা পড়ে এই ঘটনায় । গত বছর ডিসেম্বরে তাদের জামিনের মামলা আসে হাইকোর্টে। মূল মামলা নবগ্রাম থানার হলেও, এই মামলায় ধৃতদের হয়ে এই আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলির অফিসে ভুল নথি জমা দেন বলে অভিযোগ ৷ নবগ্রাম থানার বদলে মুর্শিদাবাদের অন্য একটি থানায় থাকা তুলনায় হালকা মামলার নথি জমা দেন ওই আইনজীবী ৷ সেই অনুযায়ী জেলা পুলিশ কেস ডায়েরি পাঠায়। সেই নথি দেখে ধৃতদের বিরুদ্ধে হালকা মামলা থাকায় সরকারি কৌঁসুলি আর জামিনের আবেদনে আপত্তি করেননি। কিন্তু আদালতে সঠিক নথিই জমা দেননি ওই আইনজীবী ৷ ফলে, আদালতের কাছে নবগ্রাম মামলার নথি জমা পড়ায় সেই মামলাতেই জামিন হয়ে যায় অভিযুক্তদের।
আরও পড়ুন : গরু পাচার মামলায় সিবিআই সমনকে চ্যালেঞ্জ অনুব্রতর, রায়দান স্থগিত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের
কিন্তু সম্প্রতি, ওই অন্য থানার মামলাটির সূত্র ধরে গোটা ঘটনাটি সামনে আসে ৷ সরকারি কৌঁসুলি রুদ্রদীপ্ত নন্দীর সন্দেহ হওয়ায় তিনি মূল বিষয়টি আদালতে জানান। তারপরে বেশ কয়েকদিন ধরে এই নিয়ে অভিযুক্ত আইনজীবী অরিন্দম রায়কে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশ বসাক । ১১ মার্চের শুনানিতে আদালত ক্ষুব্ধ হয়ে ওই আইনজীবীকে গ্রেফতারের হুঁশিয়ারি দেন ৷ হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশ বসাক ওই অভিযুক্ত আইনজীবীকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন ৷ কিন্তু 11 মার্চ শুনানির দ্বিতীয়ার্ধে ফের আদালতে এই মামলা উঠতেই জানা যায় ওই আইনজীবী পালিয়ে গিয়েছেন ৷
বিচারপতি পুলিশকে নির্দেশ দেন বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ওই অভিযুক্ত আইনজীবীকে হাজির করানোর ৷ পুলিশ নির্দেশ কার্যকর করতে না পারলে ব্যর্থতার দায় তাদের নিতে হবে বলেও মন্তব্য করে আদালত ৷ ওই আইনজীবীর লাইসেন্স বাতিলের ব্যাপারে ভাবতে আদালত বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, আইনজীবীর এমন জালিয়াতি বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর প্রবণতা। এদিন অভিযুক্ত ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷