কলকাতা, 7 অগস্ট: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম কেউ জামিন পেলেন ৷ সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট জামিন দিল এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া শতরূপা ভট্টাচার্যকে । তিনি নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর স্ত্রী ৷ একই মামলায় মানিকও গ্রেফতার হয়ে জেল হেফাজতে রয়েছেন ৷
এ দিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মানিকের স্ত্রীকে 2 লক্ষ টাকার ব্য়ক্তিগত বন্ডে জামিন দিয়েছেন ৷ জামিন দেওয়ার সময় আদালত জানিয়েছে যে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় শতরূপা ভট্টাচার্যের কাছ থেকে এমন কিছু পায়নি ইডি, যে কারণে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে হবে ।
তবে জামিন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একাধিক শর্তও দিয়েছে আদালত ৷ যে শর্তগুলিকে আগামিদিনে মেনে তাঁকে চলতে হবে ৷ সেই শর্তগুলি হল, তাঁকে নিম্ন আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে । তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে । তিনি রাজ্যের বাইরে যেতে পারবেন না ।
গত 4 অগস্ট মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানতে চেয়েছিলেন, শতরূপা ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের এত মাস পরে হঠাৎ কি এমন হল যে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি ? পাশাপাশি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য ছিল, "কোনও আদালতে আগে কী হয়েছে সেটা নিয়ে ভাবছি না । মূল দোষী তাঁর স্বামী মানিক ভট্টাচার্য । শতরূপার প্রমাণ নষ্ট বা পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে । কিন্তু 7 জানুয়ারি থেকে সময় পেয়েছেন । এত দিন কি করলেন ? হঠাৎ কি হল যে কাস্টডিয়াল ট্রায়াল দরকার হয়ে পড়ল ?"
এদিন ইডি সদুত্তর দিতে না পারায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ শতরূপা ভট্টাচার্যর জামিন মঞ্জুর করেছেন । সেই জামিন দিতে গিয়ে আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, শতরূপা ভট্টাচার্য কারও কাছ থেকে কোন টাকা নিয়েছেন এই মর্মে কোনও প্রমাণ ইডি-র কাছে নেই । তিনি পালিয়ে যেতে পারেন এবং নথি বিকৃত করতে পারেন, এই মর্মে আশঙ্কাও প্রকাশ করেনি ইডি । গত 7 জানুয়ারি অর্থাৎ যেদিন তিনি বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন জানান, সেদিনই তাঁর জামিন পাওয়া উচিত ছিল ।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে মানিককে জেলে জিজ্ঞাসাবাদ! মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এপিডিআরের
তবে এ দিনের শুনানিতে অবশ্য ইডি-র তরফে শতরূপা ভট্টাচার্যকে এই দুর্নীতির লেডি ম্যাকবেথ বলে উল্লেখ করেছে ৷ বিদেশ ভ্রমণের কথা উল্লেখ করেছেন ৷ দুর্নীতির টাকায় খোলা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথাও উল্লেখ করা হয় ইডি-র তরফে ৷