ওয়াশিংটন, 30 ডিসেম্বর: বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর একদল কট্টরপন্থী মৌলবাদী মানুষের অত্যাচার, হামলার একাধিক ঘটনা সাম্প্রতিককালে সামনে এসেছে ৷ বর্তমানে সে দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে রীতিমতো 'অস্তিত্ব সংকটে'র আশঙ্কায় ভুগছেন সংখ্যালঘু মানুষজন ৷ এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন গেল আমেরিকার 47 তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ৷ এই আর্জি জানিয়ে ট্রাম্পের কাছে স্মারকলিপি জমা দিল আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের সংগঠন ৷
তাদের দাবি, খুব শীঘ্রই মৌলবাদী শক্তির অধীনে চলে যাবে বাংলাদেশ ৷ আর তা হলে শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, এর বিরূপ ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বিশ্বে ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা ৷ সেই সঙ্গে, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার সনতনী নেতা প্রভু চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির ক্ষেত্রেও ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা ৷
চলতি বছরের অগস্টের বাংলাদেশে গণঅভ্যুথানে আওয়ামি লীগের নেত্রী তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় ৷ এরপর, দেশ ছেড়ে চলে যান শেখ হাসিনা ৷ এই ঘটনার জেরে বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রশাসনিক পরিকাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শান্তিতে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ৷
এরপর সে দেশের একাধিক জায়গা থেকে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক অত্যাচার, হামলার ঘটনা সামনে আসতে থাকে ৷ চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর-সহ একাধিক এলাকায় হিন্দু মন্দিরে হামলা, দেব-দেবীর মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ৷ এই আবহে গত 25 নভেম্বর ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় ইসকনের সন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে ৷ তাঁর গ্রেফতারির পর পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ৷
সংগঠনের তরফে দেওয়া স্মারকলিপিতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশকে নিযুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷ এর ফলে সে দেশে অভ্যন্তরীণ জাতিগত ও ধর্মীয় নিপীড়ন বন্ধ হতে পারে বলে আশা সংগঠনের ৷ পাশাপাশি, সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রবর্তনেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ৷ প্রস্তাবিত তালিকায় রয়েছে সংখ্য়ালঘুদের জন্য একটি পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী ও ধর্মীয় চর্চা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখতে ঘৃণ্য অপরাধ ও ঘৃণাভাষণের বিরুদ্ধে আইন তৈরি করা ৷