কলকাতা, 18 ফেব্রুয়ারি: কলকাতার কোনও ট্রামলাইন যেন আপাতত বুজিয়ে দেওয়া না হয় । কলকাতার ঐতিহ্য রক্ষা করতে ফের সচেতন হতে নির্দেশ হাইকোর্টের । হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আপাতত ট্রাম লাইন বুজিয়ে দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে । যতদিন না আদালতের নির্দিষ্ট করে দেওয়া কমিটি কলকাতার সমস্ত লাইন পরিদর্শন করে আদালতে রিপোর্ট না-দিচ্ছে ততদিন এই নির্দেশ থাকবে ।
রাজ্যের আইনজীবী তালে মাদুস সিদ্দিকি বলেন, ‘‘রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ-সহ অন্যান্যদের নিয়ে গঠিত ট্রাম সংরক্ষণ কমিটিকে জানিয়েছি যাতে অন্তত একটা রুটে (ময়দান থেকে খিদিরপুর) পিপিপি মডেলে ট্রাম চালানো যায় । প্রধান বিচারপতির প্রস্তাব মতোই যাতে কোনও বেসরকারি সংস্থা এতে যুক্ত হয়, তাদের আহ্বান জানানো হয়েছে ।’’
এদিন রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, আলিপুর এরিয়াতে ট্রাম লাইন বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছিল । সেখানে দীর্ঘদিন (15-20 বছর) ধরে ট্রাম চলাচল বন্ধ ছিল । তবে কারা এটা করেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয় । পুলিশ খতিয়ে দেখছে । পরিবহন দফতর বলছে, তারা এখনও জানে না কারা করেছে । কারণ পরিবহন দফতর এই রকম নির্দেশ দেয়নি । এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের । 19 ফেব্রুয়ারি কমিটি বৈঠকে বসবে । তাতে লাইন বুজিয়ে ফেলার বিষয়টি আলোচনায় উঠবে । বৈঠক সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতকে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
আগের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘‘ট্রাম রাজ্যের ঐতিহ্য । তা তুলে দেওয়া খুব সহজ কাজ । কিন্তু রাজ্যকে ট্রাম বাঁচাতে উদ্যোগ নিতে হবে । বহু দেশে ট্রাম চলে । কোথাও কোথাও রাস্তার একেবারে মাঝখান দিয়ে ।’’
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্যের ঐতিহ্য ট্রাম বাঁচাতে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা । সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ একাধিকবার নির্দেশে জানিয়েছে, রাজ্যের ঐতিহ্য ট্রামকে বাঁচাতে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন । প্রয়োজনে ট্রামকে নতুন প্রজন্মের কাছে আকর্ষণীয় করতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজ্যকে কাজ করতে নির্দেশও দিয়েছে হাইকোর্ট ।