কলকাতা, 24 ফেব্রুয়ারি : আজ পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে আনিশ খানের ৷ আর সেদিনই আমতার ছাত্রনেতা আনিশ খানের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গঠিত সিট (SIT) দ্বিতীয়বার আনিশ খানের দেহের ময়নাতদন্তের অনুমতি চেয়েছিল আনিশের পরিবারের কাছে ৷ যদিও কবর থেকে ছেলের দেহ তুলে সিট-কে দিয়ে তদন্ত করানোয় সায় ছিল না আনিশের পরিবার ৷ ফলে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে আদালতকে ৷ আজ হাইকোর্ট জানিয়েছে, জেলা বিচারকের তত্ত্বাবধানে এই ময়নাতদন্ত করা হবে ৷ আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে বিশেষ তদন্তকারী দলকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷
গত সপ্তাহের শুক্রবার রাতে মৃত্যু হয় আনিশ খানের ৷ পরিবারের অভিযোগ, বাড়িতে পুলিশ এসে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করেছে তাঁদের ছেলেকে ৷ সেই ঘটনায় রীতিমতো তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি ৷ আনিশের রহস্য-মৃত্যু উদঘাটন করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয় ৷ বুধবার সেই দল আনিশের বাড়ি গিয়ে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের কথা বলে ৷ যদিও সিবিআই তদন্তে অনড় মৃতের পরিবার এতে সায় দেয়নি ৷ পরিবারের দাবি, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এবং ফরেন্সিক রিপোর্ট দেখে যদি প্রমাণিত হয় যে আনিশকে হত্যা করা হয়েছে, তাহলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে চাইবেন না তাঁরা ।
আনিশের পরিবার সিট-এর তদন্তে ভরসা না রাখলেও কলকাতা হাইকোর্টের আস্থা দেখিয়েছে ৷ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা প্রশ্ন করেন, রাজ্য যে সিট গঠন করেছে তাতে কারা রয়েছেন ? রাজ্যের তরফে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, মিরাজ খালিদ, জ্ঞানবন্দ সিং ও ধ্রবজ্যোতি দে নামে তিন পুলিশ কর্তা রয়েছেন এই কমিটিতে । তিনি বলেন, "পরিবারকে ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে । আমরা চাইছি ন্যায়বিচার পাক মৃতের পরিবার ৷ তাই সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্ত চালানোর চেষ্টা হচ্ছে । মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস আমরা পরিবারের কাছে চেয়েছি ।" এর পাশাপাশি এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পোস্ট মর্টেম করার আগে পরিবারকে জানানো হয়নি ৷ এই অভিযোগ ঠিক নয় ৷ কারণ পরিবারের সামনেই ভিডিয়োগ্রাফি থেকে শুরু করে অনেক কিছুই করা হয়েছে ৷"
আরও পড়ুন : Anish Khan Death Case : পরিবারের দাবি মেনে এখনই আনিশের ময়নাতদন্ত নয়
এরপর মৃতের পরিবারের তরফে সওয়ালকারী আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে বিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন, দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত এবং মোবাইল ফোন তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে তাঁর কী মতামত ? বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, "দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য একজন কোর্ট অফিসার নিয়োগ করা হোক ৷ যাঁর তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত করা হবে ৷" পাশাপাশি মোবাইল ফোনের বিষয়ে তিনি বলেন, "একজন জেলা বিচারকের তত্ত্বাবধানে রাখা হোক আনিশের মোবাইল ফোন ৷"
এরপরই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা আনিশ খানের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন ৷ পাশাপাশি পরিবারের কাছে থাকা মোবাইল ফোন তদন্তের কাজে তুলে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি ৷ মোবাইল ফোনটি হায়দরাবাদে পাঠানো হবে ৷ এই দুটির রিপোর্ট আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে সিট-কে ৷