ETV Bharat / state

Minor Unnatural Death: কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ! সিবিআইকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ বিচারপতির

কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ বাবা ৷ সিবিআইকে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি ৷ আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি ৷

High Court
কলকাতা হাইকোর্ট
author img

By

Published : Jun 29, 2023, 8:01 PM IST

আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী

কলকাতা, 29 জুন: কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর বাবা। সিবিআইকে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল। আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ওইদিন সিবিআইকে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।

জানা গিয়েছে, 2018 সালের 30 অক্টোবর মাসে মালদা কালিয়াচক আবাসিক মিশনের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যু হয় ৷ মিশনের হস্টেলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে সে আত্মহত্যা করে বলে দাবি করে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার কথা স্কুলেরই এক অভিভাবকের মারফৎ জানতে পারেন ছাত্রীর বাবা। খবর পাওয়ার পরেই চাঁচল থেকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছয় ছাত্রীর পরিবার। ততক্ষণে চিকিৎসক জানিয়ে দেন, ছাত্রী আর বেঁচে নেই। এরপরেই স্কুল এবং আবাসিক কর্তৃপক্ষের কাছে মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে চান বাবা ৷ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, মেয়ে পাঁচতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে । কর্তৃপক্ষের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি ছিল বলে মনে করে ওই ছাত্রীর বাবা ।

তাঁর দাবি, মেয়ের দেহের কোন অংশেই আঘাতের চিহ্ন ছিল না ৷ পাশাপাশি হাড়ে কোন আঘাত লাগেনি । মেয়েকে পরিকল্পনা করে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ৷ কালিয়াচক থানায় আবাসিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয় ছাত্রীর পরিবার ৷ আবাসিক কর্তৃপক্ষ এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত এবং যে কারণে পুলিশ 306 এবং 120 ধারায় মামলা রুজু করে বলে অভিযোগ করে পরিবার। নিম্ন আদালতে পুলিশ চার্জশিটে উল্লেখ করেছিল যে, এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত পলাতক ৷ মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের সহযোগিতায় বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পেয়ে যান এবং বেশ কয়েকজন নিরুদ্দেশ হয়ে যান ।

আরও পড়ুন: কালিয়াচকে দেহ উদ্ধারের 17 দিন পর নাবালিকার বাড়িতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন, উঠছে প্রশ্ন

মেয়ের মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও আবেদন জানিয়েছিলেন বাবা ৷ কিন্তু সেখান থেকেও কোন সুরাহা পাননি বলে অভিযোগ । নিম্ন আদালতের রায়ের পুনঃবিবেচনার আর্জি মঞ্জুর করে মালদা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট । যদিও নিম্ন আদালত পুলিশকে দিয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন । সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নাজিমুল হক ।

মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, একজন মানুষ যদি পাঁচতলা ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে তাহলে তার শরীরের হাড় আস্ত থাকে না ৷ কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্টে সেরকম কিছুই উল্লেখ নেই । শুধু তাই নয়, রিপোর্টে কোথাও বোন ইনজুরি (হাড়ে আঘাত) ছিল না বলেও উল্লেখ করা হয় এবং শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না। স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় মেয়েটির বাবাকে জানায়নি এবং এই ঘটনার পরে অনেকক্ষণ ছাত্রী জীবিত অবস্থায় ছিল ৷ তা সত্ত্বেও তার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আইনজীবীর ।

আরও পড়ুন: কালিয়াচকে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গ্রেফতার এক, অপরাধ স্বীকারোক্তি ধৃতের

আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, সেদিনের ঘটনা যে ব্যক্তি মৃতের বাবাকে ফোনে জানিয়েছিলেন তাঁর সাক্ষ্য পর্যন্ত নেয়নি পুলিশ ৷ তাহলে সেই পুলিশের উপর আবার তদন্তের ভরসা করা যায়? ঘটনার আগের দিন ছাত্রীর বাবা স্কুলে দেখা করতে যায় মেয়ে ও ছেলের সঙ্গে। ছেলে এবং মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য আবাসিক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি বলে জানা গিয়েছে ৷ কিন্তু আবাসিক কর্তৃপক্ষ তাঁর ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও 16 বছর বয়সি মেয়েকে কোন এক অজ্ঞাত কারণে আটকে দেয় বলে তিনি জানান এবং সেই রাতেই মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে । এই ঘটনায় বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল রাজ্য সরকার এবং সিবিআইকে নোটিশ ইস্যুর নির্দেশ দিয়েছেন ।

আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী

কলকাতা, 29 জুন: কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর বাবা। সিবিআইকে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল। আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ওইদিন সিবিআইকে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।

জানা গিয়েছে, 2018 সালের 30 অক্টোবর মাসে মালদা কালিয়াচক আবাসিক মিশনের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যু হয় ৷ মিশনের হস্টেলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে সে আত্মহত্যা করে বলে দাবি করে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার কথা স্কুলেরই এক অভিভাবকের মারফৎ জানতে পারেন ছাত্রীর বাবা। খবর পাওয়ার পরেই চাঁচল থেকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছয় ছাত্রীর পরিবার। ততক্ষণে চিকিৎসক জানিয়ে দেন, ছাত্রী আর বেঁচে নেই। এরপরেই স্কুল এবং আবাসিক কর্তৃপক্ষের কাছে মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে চান বাবা ৷ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, মেয়ে পাঁচতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে । কর্তৃপক্ষের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি ছিল বলে মনে করে ওই ছাত্রীর বাবা ।

তাঁর দাবি, মেয়ের দেহের কোন অংশেই আঘাতের চিহ্ন ছিল না ৷ পাশাপাশি হাড়ে কোন আঘাত লাগেনি । মেয়েকে পরিকল্পনা করে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ৷ কালিয়াচক থানায় আবাসিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয় ছাত্রীর পরিবার ৷ আবাসিক কর্তৃপক্ষ এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত এবং যে কারণে পুলিশ 306 এবং 120 ধারায় মামলা রুজু করে বলে অভিযোগ করে পরিবার। নিম্ন আদালতে পুলিশ চার্জশিটে উল্লেখ করেছিল যে, এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত পলাতক ৷ মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের সহযোগিতায় বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পেয়ে যান এবং বেশ কয়েকজন নিরুদ্দেশ হয়ে যান ।

আরও পড়ুন: কালিয়াচকে দেহ উদ্ধারের 17 দিন পর নাবালিকার বাড়িতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন, উঠছে প্রশ্ন

মেয়ের মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও আবেদন জানিয়েছিলেন বাবা ৷ কিন্তু সেখান থেকেও কোন সুরাহা পাননি বলে অভিযোগ । নিম্ন আদালতের রায়ের পুনঃবিবেচনার আর্জি মঞ্জুর করে মালদা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট । যদিও নিম্ন আদালত পুলিশকে দিয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন । সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নাজিমুল হক ।

মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, একজন মানুষ যদি পাঁচতলা ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে তাহলে তার শরীরের হাড় আস্ত থাকে না ৷ কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্টে সেরকম কিছুই উল্লেখ নেই । শুধু তাই নয়, রিপোর্টে কোথাও বোন ইনজুরি (হাড়ে আঘাত) ছিল না বলেও উল্লেখ করা হয় এবং শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না। স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় মেয়েটির বাবাকে জানায়নি এবং এই ঘটনার পরে অনেকক্ষণ ছাত্রী জীবিত অবস্থায় ছিল ৷ তা সত্ত্বেও তার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আইনজীবীর ।

আরও পড়ুন: কালিয়াচকে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গ্রেফতার এক, অপরাধ স্বীকারোক্তি ধৃতের

আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, সেদিনের ঘটনা যে ব্যক্তি মৃতের বাবাকে ফোনে জানিয়েছিলেন তাঁর সাক্ষ্য পর্যন্ত নেয়নি পুলিশ ৷ তাহলে সেই পুলিশের উপর আবার তদন্তের ভরসা করা যায়? ঘটনার আগের দিন ছাত্রীর বাবা স্কুলে দেখা করতে যায় মেয়ে ও ছেলের সঙ্গে। ছেলে এবং মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য আবাসিক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি বলে জানা গিয়েছে ৷ কিন্তু আবাসিক কর্তৃপক্ষ তাঁর ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও 16 বছর বয়সি মেয়েকে কোন এক অজ্ঞাত কারণে আটকে দেয় বলে তিনি জানান এবং সেই রাতেই মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে । এই ঘটনায় বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল রাজ্য সরকার এবং সিবিআইকে নোটিশ ইস্যুর নির্দেশ দিয়েছেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.