কলকাতা, 16 ডিসেম্বর: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জামিন সংক্রান্ত মামলায় (Anubrata Bail Case) ফের দুই পক্ষের বক্তব্য জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ । আগামী 23 ডিসেম্বরের মধ্যে দুপক্ষকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে হবে । ওই দিন ফের শুনানি হবে এই মামলার ।
শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলের তরফে আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, "সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে । কিন্তু সিবিআই বলছে, তদন্ত এখনও চলছে । ইতিমধ্যে ইডি যে মামলা করেছে, তা দিল্লি এবং কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে । সিবিআই বারবার বলছে অনুব্রত প্রভাবশালী ব্যক্তি । নিম্ন আদালতের বিচারক তাঁর রায়ে বলেছেন তদন্তে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগাযোগ নেই ।"
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, "গরুপাচারে অভিযুক্ত এনামুল মামলায় আবেদনকারীর নাম আছে ।" জবাবে কপিল সিবাল বলেন, "এনামুল মূল মামলার মাস্টারমাইন্ড । অনুব্রত তা নন । তিনি পাবলিক সার্ভেন্ট নন ।"
বিচারপতি ফের জানতে চান, "আপনার কাছ থেকে কোনও তথ্য বা মেটিরিয়াল পাওয়া গিয়েছে?" উত্তরে আইনজীবী বলেন, "কিছুই পাওয়া যায়নি । আদালতের কাছে কোনও তথ্য পেশ করা হয়নি ।" নিম্ন আদালতের বিচারক হুমকি পেয়েছেন এর থেকে বড় কী তথ্য থাকতে পারে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি । তিনি বলেন, স্বাক্ষীরা হুমকি পেয়েছেন বলে কেস ডাইরিতে আছে । এর পালটা হিসেবে আইনজীবী ফের বলেন, "কেস ডাইরিতে আছে, কিন্তু বিচারকের রায়ে সেটা কোনও ভাবেই নেই । তাই কেস ডাইরির তথ্য কখনওই গ্রহণযোগ্য নয় । আর সিবিআই যে তথ্য দিচ্ছে তার কোনও নথি আমরা পাইনি ।"
আরও পড়ুন: অনুব্রতর মামলা রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে ফেরাল দিল্লি হাইকোর্ট
আইনজীবীর এই বক্তব্য শুনে বিচারপতি বলেন, "এটা ঠিক, চার্জশিট পেশের পর আবেদনকারীর অধিকার আছে নথি পাওয়ার । এখানে যদি না দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে নিম্ন আদালতের কাছ থেকে তা পেতে বাধ্য । সে রকম হলে আপনারা নথি নিন, 23 ডিসেম্বর ফের মামলা শোনা হবে । কিন্তু এখানে দেখাচ্ছে 9/12/22-এ অনুব্রত কিছু নথি গ্রহণ করেছেন । আপনার সঙ্গে ক্লায়েন্টের যোগাযোগের অভাব আছে ৷"
সিবিআইয়ের আইনজীবী এ দিন বলেন, "অন্য একটি ঘটনায় বাংলায় সিবিআই হেফাজতে একজনের মৃত্যু হয়েছে । অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে । যেহেতু তিনি অনুব্রত মণ্ডলের মামলায় তদন্তকারী অফিসার । তাঁর বিরুদ্ধে 302 ধারা দেওয়া হয়েছে ।" এ কথা শোনার পর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, "আপনার হেফাজতে যদি কারও মৃত্যু হয়ে থাকে, তাহলে সেই দায় আবেদনকারীর উপর বর্তায় না নিশ্চয় !" সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন । তা শুনে বিচারপতি বলেন, "তার মানে সেটার দায় কি সিবিআই এড়িয়ে যেতে পারে ?"
এই সময় অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, "তিনি যদি বিচারককে হুমকি দিয়ে থাকেন, তাহলে জামিন বাতিল করবেন ।" বিচারপতি উল্লেখ করেন, "আদালত নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে । তবে সিবিআইকে উপযুক্ত তথ্য আদালতের কাছে পেশ করতে হবে ।" দু পক্ষের এই সওয়াল-জবাব শোনার পরই আদালতের নির্দেশ, উভয়পক্ষকে হলফনামা দিয়ে আদালতের কাছে তাঁদের বক্তব্য পেশ করতে হবে । 23 ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি ।