ETV Bharat / state

বাকি 6 দফায় বাম প্রচারের পোস্টার গার্ল মীনাক্ষী - সিপিএমের প্রচার

সিপিএম-এর প্রার্থী তালিকায় এ বার তারুণ্যের উজ্জ্বল উপস্থিতি ৷ নন্দীগ্রামের মতো হেভিওয়েট কেন্দ্রে মমতা-শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে বামেদের বাজি ছিল মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ৷ এ বার তাঁকেই বাকি 6 দফার ভোটে প্রচারের মুখ করতে চাইছে সিপিএম ৷

West Bengal Assembly Election 2021
মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়
author img

By

Published : Apr 2, 2021, 10:02 PM IST

কলকাতা, 2 এপ্রিল: বৃদ্ধতন্ত্র নয়, এখন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের রাজ্য সিপিএমের সদর দফতরে যৌবনের আবাহন । চলতি বিধানসভা নির্বাচনের বাম প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখের সারি । যেখানে শিক্ষা এবং তারুণ্যের তেজ হাত ধরাধরি করে হাঁটছে । সেই রেশ ধরেই বাকি ছ দফা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে বামজোটের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে প্রচারের মুখ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সিপিএম ।

সদ্য শেষ হওয়া দ্বিতীয় দফার ভোটে নন্দীগ্রামের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ছিল "ডার্বির" উত্তাপ । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কার্যত "ডুয়েল" ছিল লক্ষ্মীবারের ভোটের দিনলিপিতে প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় । সেখানে বামজোটের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ছিলেন আন্ডারডগ । প্রচারের আলো সেভাবে তাঁকে ঘিরে আবর্তিত হয়নি । তবে সময় যত গড়িয়েছে ততই মীনাক্ষী নিজেকে মেলে ধরেছেন । হেনস্থার শিকার হয়েছেন । তবু হাল ছাড়েননি । যেখানে অন্য দুই "হেভিওয়েট"দল বুথে এজেন্ট দিতে পারা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন, সেখানে নিঃশব্দে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বুথে এজেন্টদের বসা নিশ্চিত করেছেন । লাল সাদা সালোয়ার, সাদা ওড়না জড়িয়ে, মুখে মাস্ক দিয়ে অক্লান্ত দৌড়ে নন্দীগ্রামের মুড়ো থেকে ল্যাজায় চষে বেড়িয়েছেন । তাঁর এই অক্লান্ত দৌড় নন্দীগ্রামের ভোটারদের নজর কেড়েছে । শুধু এই কেন্দ্রে আশি শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে ।

উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে মহিলা ভোটারদের যোগদান । যা নতুন অঙ্কের জন্ম দিতে পারে । কারণ নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের পরে এই অঞ্চলে রাজনৈতিক ভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়েছিল সিপিএম । সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েও সিপিএমের প্রার্থী বলেছেন, জাত ধর্ম নয় ভাতের লড়াইয়ের কথা । যা নন্দীগ্রামের মানুষ স্বীকার করছেন । তাই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে উপেক্ষা করতে পারা যাচ্ছে না, বরং তাঁকে গেমচেঞ্জার মনে করা হচ্ছে ।

তাঁর এই লড়াইয়ের রেশ হলদি নদীর পাড় ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের বাকি ভোটের পটচিত্রে । এখান থেকেই নতুন স্ট্যান্স নিতে চলেছে রাজ্য সিপিএম । নতুন প্রজন্মকে ভোটের ময়দানে তুলে ধরার পরে এ বার মীনাক্ষীকে প্রচারের মুখ করতে চায় বামেরা । ভোট পরবর্তী চব্বিশ ঘণ্টায় মীনাক্ষী দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক ক‍রলেন । শনিবার থেকে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়বেন দলের বাকিদের প্রচারে । শনিবার সকালে সিঙ্গুরে জোটের বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যের হয়ে দেখা যাবে তাঁকে । বিকেলে মীনাক্ষী প্রচার করবেন ডায়মন্ড হারবারে । যদিও সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলছেন, "আমরা দলগত লড়াইয়ে বিশ্বাস করি । নির্বাচন কোনও ব্যক্তি নির্ভর লড়াই নয় ৷"

আরও পড়ুন: নির্বাচনের সময় মোদিবাবু বাংলাদেশে গিয়ে বলছে, আমায় ভোট দাও : মমতা

এ বারের ভোটে তাঁদের প্রার্থী তালিকা তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার মিশেল, মত সায়নদীপ মিত্রের । "আমাদের দল সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে । অন্য দলে যেখানে প্রার্থী না হতে পারার হতাশায় বিক্ষোভ, মারামারি হয়, সেখানে আমাদের দলে প্রবীণরা ব্যাটন তুলে দেন নতুনের হাতে," কামারহাটি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের ফাঁকে বলছেন সায়নদীপ । এই কেন্দ্রে গতবারের জয়ী প্রার্থী মানস মুখোপাধ্যায় শারীরিক কারণে সরে দাঁড়িয়েছেন ।

সিঙ্গুরের বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য বলছেন, "অতীত থেকে শিক্ষা নিচ্ছে এখানকার মানুষ । একটা চক্রান্ত হয়েছিল তা পরিষ্কার । যাঁরা সেই চক্রান্তের নেপথ্য নায়ক তাঁরা সেদিনের চক্রান্তের কথা নিজের মুখে বলছেন । গত দশ বছর ধরে যুবকের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ এবং রাজ্যের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা হয়েছে । নতুন প্রজন্মের কাছে সেই বার্তা তুলে ধরছি আমরা । কৃষি আমাদের ভিত্তি শিল্প ভবিষ্যৎ সেই স্লোগান দিয়ে হাল ফেরানোর ডাক দিচ্ছি । হাজার একরে শিল্পের সম্ভাবনা শেষ করে এগারো একরে নতুন শিল্প হওয়ার কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী । যার সম্বন্ধে তাঁর নিজের ধারণাই পরিস্কার নয় । নন্দীগ্রামে মীনাক্ষী লড়াই ছুড়ে দিয়েছে । বাকিরা তাঁদের কেন্দ্রে লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে । জনগণের আশীর্বাদ আমরা পাব বলে বিশ্বাস করি । একমাত্র জোটের প্রার্থীরাই মানুষের কথা বলেছেন ৷"

যাঁকে নিয়ে এত কথা, যাঁকে নিয়ে নতুনের আবাহন, সেই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলছেন, "নন্দীগ্রামে এখন আছি । দলের সবার সঙ্গে বৈঠক করেছি । এ বার দল যা নির্দেশ দেবে, দায়িত্ব দেবে, তা পালন করার চেষ্টা করব ।"

কলকাতা, 2 এপ্রিল: বৃদ্ধতন্ত্র নয়, এখন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের রাজ্য সিপিএমের সদর দফতরে যৌবনের আবাহন । চলতি বিধানসভা নির্বাচনের বাম প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখের সারি । যেখানে শিক্ষা এবং তারুণ্যের তেজ হাত ধরাধরি করে হাঁটছে । সেই রেশ ধরেই বাকি ছ দফা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে বামজোটের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে প্রচারের মুখ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সিপিএম ।

সদ্য শেষ হওয়া দ্বিতীয় দফার ভোটে নন্দীগ্রামের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ছিল "ডার্বির" উত্তাপ । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কার্যত "ডুয়েল" ছিল লক্ষ্মীবারের ভোটের দিনলিপিতে প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় । সেখানে বামজোটের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ছিলেন আন্ডারডগ । প্রচারের আলো সেভাবে তাঁকে ঘিরে আবর্তিত হয়নি । তবে সময় যত গড়িয়েছে ততই মীনাক্ষী নিজেকে মেলে ধরেছেন । হেনস্থার শিকার হয়েছেন । তবু হাল ছাড়েননি । যেখানে অন্য দুই "হেভিওয়েট"দল বুথে এজেন্ট দিতে পারা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন, সেখানে নিঃশব্দে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বুথে এজেন্টদের বসা নিশ্চিত করেছেন । লাল সাদা সালোয়ার, সাদা ওড়না জড়িয়ে, মুখে মাস্ক দিয়ে অক্লান্ত দৌড়ে নন্দীগ্রামের মুড়ো থেকে ল্যাজায় চষে বেড়িয়েছেন । তাঁর এই অক্লান্ত দৌড় নন্দীগ্রামের ভোটারদের নজর কেড়েছে । শুধু এই কেন্দ্রে আশি শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে ।

উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে মহিলা ভোটারদের যোগদান । যা নতুন অঙ্কের জন্ম দিতে পারে । কারণ নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের পরে এই অঞ্চলে রাজনৈতিক ভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়েছিল সিপিএম । সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েও সিপিএমের প্রার্থী বলেছেন, জাত ধর্ম নয় ভাতের লড়াইয়ের কথা । যা নন্দীগ্রামের মানুষ স্বীকার করছেন । তাই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে উপেক্ষা করতে পারা যাচ্ছে না, বরং তাঁকে গেমচেঞ্জার মনে করা হচ্ছে ।

তাঁর এই লড়াইয়ের রেশ হলদি নদীর পাড় ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের বাকি ভোটের পটচিত্রে । এখান থেকেই নতুন স্ট্যান্স নিতে চলেছে রাজ্য সিপিএম । নতুন প্রজন্মকে ভোটের ময়দানে তুলে ধরার পরে এ বার মীনাক্ষীকে প্রচারের মুখ করতে চায় বামেরা । ভোট পরবর্তী চব্বিশ ঘণ্টায় মীনাক্ষী দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক ক‍রলেন । শনিবার থেকে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়বেন দলের বাকিদের প্রচারে । শনিবার সকালে সিঙ্গুরে জোটের বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যের হয়ে দেখা যাবে তাঁকে । বিকেলে মীনাক্ষী প্রচার করবেন ডায়মন্ড হারবারে । যদিও সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলছেন, "আমরা দলগত লড়াইয়ে বিশ্বাস করি । নির্বাচন কোনও ব্যক্তি নির্ভর লড়াই নয় ৷"

আরও পড়ুন: নির্বাচনের সময় মোদিবাবু বাংলাদেশে গিয়ে বলছে, আমায় ভোট দাও : মমতা

এ বারের ভোটে তাঁদের প্রার্থী তালিকা তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার মিশেল, মত সায়নদীপ মিত্রের । "আমাদের দল সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে । অন্য দলে যেখানে প্রার্থী না হতে পারার হতাশায় বিক্ষোভ, মারামারি হয়, সেখানে আমাদের দলে প্রবীণরা ব্যাটন তুলে দেন নতুনের হাতে," কামারহাটি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের ফাঁকে বলছেন সায়নদীপ । এই কেন্দ্রে গতবারের জয়ী প্রার্থী মানস মুখোপাধ্যায় শারীরিক কারণে সরে দাঁড়িয়েছেন ।

সিঙ্গুরের বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য বলছেন, "অতীত থেকে শিক্ষা নিচ্ছে এখানকার মানুষ । একটা চক্রান্ত হয়েছিল তা পরিষ্কার । যাঁরা সেই চক্রান্তের নেপথ্য নায়ক তাঁরা সেদিনের চক্রান্তের কথা নিজের মুখে বলছেন । গত দশ বছর ধরে যুবকের স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ এবং রাজ্যের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা হয়েছে । নতুন প্রজন্মের কাছে সেই বার্তা তুলে ধরছি আমরা । কৃষি আমাদের ভিত্তি শিল্প ভবিষ্যৎ সেই স্লোগান দিয়ে হাল ফেরানোর ডাক দিচ্ছি । হাজার একরে শিল্পের সম্ভাবনা শেষ করে এগারো একরে নতুন শিল্প হওয়ার কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী । যার সম্বন্ধে তাঁর নিজের ধারণাই পরিস্কার নয় । নন্দীগ্রামে মীনাক্ষী লড়াই ছুড়ে দিয়েছে । বাকিরা তাঁদের কেন্দ্রে লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে । জনগণের আশীর্বাদ আমরা পাব বলে বিশ্বাস করি । একমাত্র জোটের প্রার্থীরাই মানুষের কথা বলেছেন ৷"

যাঁকে নিয়ে এত কথা, যাঁকে নিয়ে নতুনের আবাহন, সেই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলছেন, "নন্দীগ্রামে এখন আছি । দলের সবার সঙ্গে বৈঠক করেছি । এ বার দল যা নির্দেশ দেবে, দায়িত্ব দেবে, তা পালন করার চেষ্টা করব ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.