কলকাতা, 20 এপ্রিল : এক সময় কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কার হয়েছিল এই বাংলাতেই । মহামারীর আকার নিয়েছিল কালাজ্বর । মানুষকে বাঁচাতে সেই ওষুধ আবিষ্কার করেছিলেন U N ব্রহ্মচারী । প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিকেলস অতীতেও জীবনযাত্রার এবং বেঁচে থাকার দিশা দেখিয়েছে তাদের বিভিন্ন উৎপাদন এবং উদ্ভাবনী শক্তিতে । তাই আর্থিক স্বাচ্ছন্দ ফিরে পেলে কোরোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ওষুধ এখন সবচেয়ে বেশি কার্যকর, সেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি করতে প্রস্তুত রয়েছে বেঙ্গল কেমিকেলস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস । ঐতিহাসিক এই প্রতিষ্ঠান ভারতের প্রথম ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি । 1901 সালে কলকাতায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয় । তারপর থেকেই একের পর এক মানবহিতের কাজে এগিয়ে এসেছে তারা ।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরির ছাড়পত্র মিলেছে । বরাত পেলে প্রতিদিন 10 লাখ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি করবে বেঙ্গল কেমিকেলস । এক সময় এই বেঙ্গল কেমিকেলস থেকেই বিভিন্ন মারণ রোগের জীবনদায়ী প্রায় 700 ওষুধ তৈরি হত । কোরোনা নিধনে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি করার দু'টি মেশিন রয়েছে । আধ ঘণ্টায় 5 লাখ ওষুধ তৈরি হতে পারে । কিন্তু ওষুধ তৈরির জন্য যে সমস্ত কাঁচামালের সামগ্রী প্রয়োজন তা না থাকায় কিছুই আর করা যাবে না, বললেন এই সংস্থার প্রাক্তন কর্মচারী এবং ট্রেড ইউনিয়নের নেতা মৃণাল রায়চৌধুরি । তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারকে বরাত দেওয়ার জন্য এবং কাঁচামালের সরবরাহ করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে । কিন্তু উভয় সরকারই নিরুত্তর । তাই যথেষ্ট সম্ভাবনাময় বেঙ্গল কেমিকেলস এখন ধুঁকছে । বর্তমানে এই ওষুধটি তৈরির কাঁচামাল এই কম্পানির কাছে নেই ।
আশ্চর্যের কথা ওষুধটি তৈরির কাঁচামাল আসত চিন থেকে । কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগ নিয়ে যদি চিন থেকে কাঁচামাল নিয়ে আসে তাহলেই ওষুধটি বাংলা থেকে উৎপাদিত হবে । এখন প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় সরকার কি ওষুধ তৈরির বরাত দেবে সরকারি এই সংস্থাটিকে? ইতিমধ্যে দু'টি বেসরকারি সংস্থা থেকে দেশের সরকার ওষুধ তৈরি করাচ্ছে । মৃণাল রায় চৌধুরি আরও জানান, বেঙ্গল কেমিকেলস থেকে ওষুধ তৈরি হলে সস্তায় গরিব মানুষ কিনে খেতে পারতেন । কেন্দ্রীয় সরকার যাদের বরাত দিয়েছে সেখানে ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের কতটা ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকবে সেটাই প্রশ্নের মুখে ।