কলকাতা, 23 মার্চ: নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam Case) এর আগে দেখা গিয়েছে, কালো টাকা সাদা টাকায় পরিণত করার জন্য একাধিক নকল সংস্থা বা সেল কোম্পানি খুলেছেন অভিযুক্তরা । কিন্তু একাধারে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বর্তমানে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ধৃত অয়ন শীল (Ayan Sil Latest News) দেখেছিলেন অন্য স্বপ্ন । তাঁর ইচ্ছা ছিল একটি টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক হওয়ার ।
সে জন্যই বর্তমানে আর্থিকভাবে কোন কোন বিষয়ের উপর জোর দেওয়া উচিত, তার জন্য বেশ কয়েকজন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছিলেন অয়ন । ইতিমধ্যেই অয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং তাঁর অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া নথিপত্র ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, তিনি একাধিকবার দিল্লিতে গিয়েছিলেন । সেখানেই একটি নামকরা বেসরকারি চ্যানেলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে কাজ করতে চেয়েছিলেন অয়ন । আর তার জন্যই বিভিন্ন ভাবে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন তিনি ।
তার সল্টলেকের ভাড়া বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, সেই বিনিয়োগের পরিমাণ হতে পারত প্রায় 100 কোটি টাকা । পাশাপাশি চ্যানেলের বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কেনার জন্য তিনি বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে কথাও বলেছিলেন বলে জানা গিয়েছে । ইতিমধ্যেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে এসেছে এমনই বেশ কয়েকটি সংস্থার কর্ণধারের নাম । কারা তাঁদের সঙ্গে অয়ন শীলের পরিচয় করিয়ে দিলেন সেই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ।
তদন্তকারীদের অনুমান, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে ধৃত অয়ন শীল কোনও ভুয়ো কোম্পানি না খুলে তাঁর কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করার জন্য একটি চ্যানেল খোলার ভাবনাচিন্তা করেছিলেন । তদন্তকারীদের অভিযোগ, এই চ্যানেলে বিনিয়োগ করলেই তাঁর কোটি কোটি কালো টাকা সাদা টাকায় রূপান্তরিত হতে পারত । এছাড়াও চ্যানেলের মালিক হলে একাধিক সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠা বসাও করতে পারতেন অয়ন । যদিও বর্তমানে সেটি আর বাস্তবায়িত হয়নি ।
আরও পড়ুন: বান্ধবীকে হন্ডা সিটি গাড়ি উপহার দিয়েছিলেন অয়ন, দাবি ইডির
কিন্তু অয়ন শীলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, এটি যদি বাস্তবায়িত হত সে ক্ষেত্রেও অয়ন শীলের কাছে কোনও বাধা আসত না । তদন্তকারীদের দাবি, গোটাটাই নিয়োগ দুর্নীতির লভ্যাংশের টাকা । রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে 90টিরও বেশি পৌরসভায় নিজের বরাত আদায় করে নেন অয়ন শীল । পাশাপাশি তিনি হয়ে ওঠেন আইটি কোম্পানির মালিক । টলিউডেও টাকা ঢালতে থাকেন অয়ন ।
সেই অয়নের বিরুদ্ধেই ছাপাখানা সংস্থার সঙ্গেও গাঁটছড়া বাঁধার অভিযোগও রয়েছে ৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা তদন্ত নেমে জানতে পেরেছেন যে, অয়নের বাড়ি এবং অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া ওএমআর শিটগুলি ছাপা হয়েছিল শিয়ালদার কলেজ স্ট্রিটের একটি ছাপাখানা থেকে । ছাপাখানাটির সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা ।