কলকাতা, 20 এপ্রিল: ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় আপত্তি নেই, তবে আন্দোলনে রাজনীতির রঙ লাগালে তাতে আপত্তি আছে বলে সাফ জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মহার্ঘভাতা নিয়ে আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদেরদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আপত্তি নেই বলেও ঘুরিয়ে অভিষেকের অভিযোগ, তাঁদের আন্দোলন মঞ্চটিকে রাজনীতির মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার অভিষেক জানান, কেউ তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইলে তিনি বসবেন ৷
এদিন আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রার বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন অভিষেক ৷ সেই সঙ্গে, রাজ্যের প্রায় 60 হাজার পঞ্চায়েত বুথে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের হাতেও তুলে দিয়েছেন তিনি ৷ অভিষেকের স্পষ্ট দাবি, কোনও বন্ধ ঘরে নয়, পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাই হবে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে ৷ এরপরই সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিএ এবং চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি ৷ অভিষেকের স্পষ্ট বক্তব্য, "এই আন্দোলনকারীদের আন্দোলনে যেন রাজনীতির রঙ না লাগে।"
তৃণমূল ভবনে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ডিএ নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমার আপত্তি নেই। তবে আপনারা জানেন আমি 24 তারিখ বেরিয়ে যাচ্ছি।" এরপরই তাঁর সংযোজন, "আমার মনে হয় এই মঞ্চ একটা রাজনৈতিক মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেটা না করলেই ভালো হত।"
প্রসঙ্গত মহার্ঘভাতা নিয়ে সরকারি কর্মীদের আন্দোলন মঞ্চে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের দেখা গিয়েছে ৷ এদিন অভিষেকের বক্তব্যে সেই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী যারা এক বছর আগে আমার সঙ্গে এসে দেখা করেছিলেন, তাঁরা আমাকে অনুরোধ করেছিলেন আমাদের কর্মসূচিতে আপনি একদিন আসুন। আমি ওঁদের জানিয়েছিলাম, আমি চাই না এই মঞ্চে কোনও রাজনৈতিক রঙ লাগুক। সেই জন্য আমি বলেছিলাম যাব না। কোনও আন্দোলনের মঞ্চকে রাজনৈতিক রঙে রাঙানো ঠিক নয়।"
তিনি আরও বলেন, "আমার মনে হয়, যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের বোঝা উচিত, কীভাবে এক লক্ষ 15 হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আপনি আগে তো দেশের কথা, রাজ্যের কথা ভাবুন। নিজের কথা তো ভাববেনই। কিন্তু কী প্রতিকূলতা-সমস্যার মধ্যে দিয়ে একটা সরকার চলছে সেটাও তো দেখবেন।" তাঁর মতে, এত কিছুর পরও তিন হাজার কোটি টাকা বিপুল কর্মযজ্ঞে খরচ করছে রাজ্য সরকার ৷ নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে লক্ষীর ভাণ্ডার দেওয়া হচ্ছে ৷ অভিষেক বলেন, "আপনাদের নিশ্চিতভাবে কোনও দাবি, কোনও অভিযোগ থাকতেই পারে। এমনভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসা উচিত যেন তাতে কোনও রাজনৈতিক রঙ না লাগে। এটা যদি সুনিশ্চিত করতে পারেন আমি খুব খুশি হব।"
আরও পড়ুন: নেতারা নন, পঞ্চায়েতে প্রার্থী ঠিক করবেন গ্রামের মানুষই: অভিষেক
প্রসঙ্গত, মহার্ঘভাতা নিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যের পর আন্দোলনকারীদের তরফে অবশ্য এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।