জলপাইগুড়ি, 20 মে : আদালতের নির্দেশ ছিল বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়ার । কিন্তু তাও বাড়িতে ঢুকতে দিল না ছেলেরা । এমনই অবস্থা হল জলপাইগুড়ির জেলার অশোক নগরের এক বৃদ্ধার । নাম উষারানি কর । সত্তরোর্ধ্ব এই বৃদ্ধের করুন পরিণতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী ।
অভিযোগ, 2010 সালে উষারানি করের দুই ছেলে রমেনচন্দ্র কর ও জয়দেব কর নিজেদের তিন বোনকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন । এর কিছুদিন পরই তাঁরা মাকেও মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেন । এমন কী বৃদ্ধার জমি হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে রমেন ও জয়দেবের বিরুদ্ধে । রমেনচন্দ্র কর পেশায় ব্যবসায়ী এবং জয়দেব কর পেশায় শিক্ষক । নিজের নামে বাড়ি থাকা সত্ত্বেও উষারানিকে মেয়েদের কাছেই থাকতে হয় এত বছর ।
এই বিষয়ে উষারানী কর বলেন, "আমার দুই ছেলে আমাকে ঠিকমতো খেতে দিত না । ওষুধ দিত না । আমাকে মারধর করত । আমার তিন মেয়েকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তারা । পরে আমাকেও মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় । বাধ্য হয়েই আমি এতদিন মেয়েদের বাড়িতে ছিলাম ।"
ঘটনার ব্যাপারে বৃদ্ধার আইনজীবী পাঞ্চালিদেব সিকদার বলেন, "বৃদ্ধাকে তাঁর ছেলেরা মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর তিনি দীর্ঘদিন মেয়েদের কাছেই ছিলেন । কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেয়েরা আদালতের দ্বারস্থ হন মাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য । আদালত সামান্য সময়ের মধ্যেই বৃদ্ধার পক্ষে রায় দেয় । আদালতের নির্দেশ থাকে, পুলিশি নিরাপত্তায় বৃদ্ধাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার । এমন কী দুই ছেলেকে মায়ের জন্য মাসিক ৫০০০ টাকা করে দিতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই আজ তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে আনা হলে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেন না তিনি । দেখা যায়, বাড়িতে তালা লাগানো আছে । দীর্ঘ সময় অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা করার পরও সমস্যা মেটেনি । তাই পুরো বিষয়টি আবারও আদালতকে জানানো হবে ।"