জলপাইগুড়ি , 28 ডিসেম্বর : "আমাকে নদী থেকে বালি তুলতে দিতে হবে । তা যদি না হয় তাহলে আমাকে বাড়ি ছাড়তে হবে ।" এমনই হুঁশিয়ারি দিল প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি নারায়ণ রায় ওরেফ তরুণ থাপা । অভিযোগ, তরুণ দীর্ঘদিন ধরে শিকারপুরের মন্থনি এলাকা থেকে শ্মশান সংলগ্ন নদী থেকে বালি তুলে বিক্রি করছিল । দু'দিন আগে সেই এলাকা পরিদর্শনে যান জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত কুমার রায় । তিনি রাজগঞ্জের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিককে ফোন করে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বলেন । এরপর থেকে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলা বন্ধ হয়ে যায় ।
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে নারায়ণ রায় ওরফে তরুণ থাপা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, " যখন আমি জেল থেকে বের হই তখন তৎকালীন এসপি সাহেব আমাকে প্রাথমিকভাবে বালি তোলার অনুমতি দিয়েছিলেন । তাই-ই আমি তুলছিলাম । এখান থেকে রোজগার করে আমি সংসার চালাই । আমার বিরুদ্ধে 22 টা কেস রয়েছে । স্থানীয় বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য তপন রায় আমাকে নদী থেকে বালি তুলতে দিচ্ছে না । আমার সংসার চালানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে । এমন অবস্থায় যদি বালি তোলার অনুমতি না পাই, তাহলে আমাকে ফের বাড়ি ছাড়তে হবে ।"
এদিকে শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তপন রায় বলেন, "স্থানীয় মানুষের অভিযোগ ছিল এলাকার শ্মশানঘাট থেকে বালি তুলে নেওয়া হচ্ছে । এরপর স্থানীয়রা শ্মশানঘাট বাঁচানোর দাবিতে রাস্তা অবরোধও করেছিল । সেখানে প্রশাসনিক কর্তারা এসে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে সেখান থেকে আর বালি তোলা হবে না । তারপরেও বালি তোলা হচ্ছে । আমি শ্মশানঘাট বাঁচানোর জন্য লড়াই করছি । আমাকে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে । আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব । " বিজেপির সাংসদ জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, "শ্মশান এলাকার বালিও পাচার হয়ে যাচ্ছে তা মানা যায় না । বিষয়টি প্রশাসনকে দেখতে বলেছি । "
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত(হেড কোয়ার্টার) পুলিশ সুপার সন্দীপ মণ্ডল বলেন, বিষয়টি কিছুই জানি না । আমি খোঁজ নিয়ে দেখব ।
নারায়ণ রায় ওরফে তরুণ থাপা কামতাপুর আন্দোলনে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন । কেএলও জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছিলেন । এমনকী, 2013 সালের জলপাইগুড়ি বজরাপাড়া বোমবাজিতে ছয়জন মারা গিয়েছিল । তাতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে নারায়ণ রায় ধরা পড়েছিল । প্রশ্ন উঠছে, অবৈধভাবে এতদিন নদী থেকে কীভাবে বালি তুলছিল নারায়ণ । ফের সে কী করেই বা বালি তোলার অনুমতি চায় ?