হাওড়া, 24 জুন : কোরোনা সংক্রমণের সঙ্গে সমঝোতা নয়, হাওড়া স্টেশন সুরক্ষিত রাখতে এই মন্ত্রই নিল রেল ৷ এমনিতে টানা আড়াই মাস বন্ধ ছিল যাত্রীবাহী ট্রেন ৷ কিছুদিন আগে কিছু ক্ষেত্রে চালু হয়েছে দূরপাল্লার গাড়ি । দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে স্পেশাল ট্রেন । পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দুই বিভাগই ফের সচল । ফলে, হাওড়া স্টেশন হয়ে এরাজ্য থেকে যেমন অন্যত্র পাড়ি দিচ্ছেন মানুষ, তেমনি অন্য রাজ্য থেকেও এরাজ্যে ফিরছেন অনেকেই । এর জেরে দেশের অন্যতম ব্যস্ত স্টেশনে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে । আশঙ্কার সেই মেঘ কাটাতে প্রস্তুত রেল ৷ দাবি করলেন পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের DRM ইশাক খান । তাঁর কথায়, "কোরোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যতরকম ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব, তা নেওয়া হচ্ছে । চলছে যাত্রীদের সচেতন করার কাজ । এছাড়া সকলে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কি না সেই বিষয়ে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে রেলপুলিশ ৷ স্টেশন চত্বরে CCTV-র মাধ্যমে চলছে নজরদারি ।"
কিন্তু, মারণ ভাইরাসের কামড় ঠেকাতে কতটা প্রস্তুত হাওড়া স্টেশন?
মে মাস পর্যন্ত RPF কর্মীরা থার্মাল গানে তাপমাত্রা পরীক্ষা করে স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছিলেন । বাধ্যতামূলক ছিল মাস্ক । মাস্ক ছাড়া স্টেশনে ঢোকা যাবে না, আগেই জানানো হয়েছিল ৷ কিন্তু, জুনে স্টেশনে ঢোকার মুখে বসানো হয়েছে নতুন স্বয়ংক্রিয় মেশিন । প্রবেশকারীর শরীরের তাপমাত্রা, তিনি মাস্ক পরেছেন কি না খুঁটিনাটি দেখে তবেই স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে মেশিন । স্বাভাবিকের থেকে তাপমাত্রা বেশি হলেই সিগনাল ও আওয়াজ দেবে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র ৷
বদল হয়েছে আরেকটি ক্ষেত্রেও ৷ আগে ট্রেন ছাড়ার সময়ের 1 ঘণ্টা 30 মিনিট আগে স্টেশন চত্বরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল । এতে স্টেশনের বাইরে ভিড় জমছিল । লঙ্ঘিত হচ্ছিল সামাজিক দূরত্ব । নতুন নিয়মে যাত্রীদের ইচ্ছেমতো স্টেশন চত্বরে আগেভাগে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে । এতে ভিড় এড়ানো যাবে বলে মনে করছে রেল ৷ এইসঙ্গে স্টেশনের মাইকে অহরহ স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত ঘোষণা চলছে ৷ এবং চলছে স্টেশন চত্বর স্যানিটাইজ়েশনের কাজ ৷
কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, দিনে 5 বার স্টেশন চত্বর স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে। প্রতিটি ট্রেন ছাড়ার পরেও প্ল্যাটফর্ম স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে । এর জন্য সাফাই বিভাগকে বিশেষভাবে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ এছাড়াও সাধারণভাবে যে পরিছন্নতার কাজ চলে তাও চলবে । রেকগুলিকে স্যানিটাইজ়েশনের জন্য সাইডিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে । শুধু হাওড়া নয়, হাওড়া ডিভিশনের যে যে স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াচ্ছে সর্বত্রই নিয়মিত স্যানিটাইজ়েশনের কাজ চলছে । সব মিলিয়ে সংক্রমণ রুখতে মরিয়া রেল ৷
DRM ইশাক খান বলেন, "আমি ETV ভারতের মাধ্যমে যাত্রীদের অনুরোধ করতে চাই, তাঁরা যেন স্টেশনের ভিতরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন । এতে আমরা সুস্থ থাকব ।"