ETV Bharat / state

নিয়োগপত্র বাতিলের পরও চুঁচুড়া পৌরসভায় চারজন ! বিক্ষোভ অস্থায়ী মজুরদের

পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে নিয়োগপত্র বাতিল করা হয় ৷ কিন্তু অভিযোগ, তারপরও বহাল তবিয়তে চুঁচুড়া পৌরসভায় কাজ করছেন চারজন ৷ আর তারই প্রতিবাদে সকাল থেকে পৌরসভার গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অস্থায়ী কর্মীরা ৷

Agitation for Corruption
বিক্ষোভ অস্থায়ী মজুরদের
author img

By

Published : Jul 3, 2020, 4:07 AM IST

চুঁচুড়া, 2 জুলাই : মজদুর ও পিওন পদে কর্মী নিয়োগ হয়েছিল ৷ কিন্তু তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, তাতে নাম রয়েছে এক কাউন্সিলরেরও ৷ শুধু তাই নয়, নাম রয়েছে আরও দুই কাউন্সিলরের ছেলেদেরও । তারপর থেকেই চুঁচুড়া পৌরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলতে শুরু করে বিরোধীরা । এরপরই পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে নিয়োগপত্র বাতিল করা হয় ৷ কিন্তু অভিযোগ, তারপরও বহাল তবিয়তে পৌরসভায় কাজ করছেন চার জন ৷ আর তারই প্রতিবাদে সকাল থেকে পৌরসভার গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অস্থায়ী কর্মীরা ৷ তাঁদের প্রশ্ন, নিয়োগপত্র বাতিল হওয়ার পরও কীভাবে পৌরসভার কমিউনিটি হলে রয়েছেন এই চারজন ৷

Agitation for Corruption
এই চার জনই পৌরপ্রশাসকের অনুমতিতে পৌরসভার কমিউনিটি হলে থাকছেন

1 মার্চ চুঁচুড়া পৌরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের জন্য একটি লিখিত পরীক্ষা হয় । পরীক্ষা দেন প্রায় 8 হাজার চাকরিপ্রার্থী । চার দিনের মাথায় অর্থাৎ 4 মার্চ সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় । তাতে 300 জনের নামের তালিকা প্রকাশিত হয় । কয়েকদিন পর তাঁদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় । সেখান থেকে চূড়ান্ত 76 জনকে নির্বাচন করা হয় । প্রত্যেককে নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় । কিন্তু তারপরই আবার 54 জনের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয় । আর সেই তালিকায় দেখা যায়, নাম রয়েছে পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর সৌমিত্র মালাকারের । পাশাপাশি তালিকার নাম রয়েছে 9 নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর সুপর্ণা সেনের ছেলে সাত্ত্বিক সেনের । নাম রয়েছে 13 নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দেব অধিকারীর ছেলে সৌদীপ্ত অধিকারীর । শুধু তাই নয়, 12 জুন তাঁরা কাজে যোগদানও করেছেন । তবে, বাকি 19 জনকে এখনও কাজে যোগদান করানো হয়নি । আর এই পুরো বিষয়টাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলে বিরোধীরা ।

এই সংক্রান্ত আরও খবর : কর্মী নিয়োগের তালিকায় কাউন্সিলরের নাম ! কাঠগড়ায় চুঁচুড়া পৌরসভা

বিরোধীদের চাপে পড়ে নিয়োগে অনিয়মের কথা স্বীকার করেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভার নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম হয়েছে ৷ নিয়োগের মধ্যে অস্বচ্ছতা রয়েছে ৷ যে নিয়োগ হয়েছে তাতে ভুল রয়েছে ৷ আগামীদিনে আইন অনুযায়ী চুঁচুড়া পৌরসভায় কর্মী নিয়োগ হবে ৷ BJP এইসব আন্দোলন করে ঘোলা জলে মাছ ধরছে ৷ আমি ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছি, এই নিয়োগ বাতিল হবে ৷ " কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা হওয়ার পর তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷

আজ নতুন করে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হন পৌরসভার অস্থায়ী কর্মীরা ৷ তাঁরা জানান, নিয়োগপত্র বাতিল হওয়ার পরও চারজন এখনও পৌরসভার কমিউনিটি হলেই রয়েছেন ৷ তাঁদের অভিযোগ, এই সবকিছুর পিছনে হাত রয়েছে পৌরপ্রশাসক গৌরিকান্ত মুখোপাধ্যায়ের ৷

কমিউনিটি হলে যে চারজন রয়েছেন তাঁরাও স্বীকার করেছেন যে এতে পৌর প্রশাসকের সম্মতি রয়েছে ৷ এই চার জনের কেউ মুর্শিদাবাদ, কেউ মালদা, কেউ নদিয়ার বাসিন্দা ৷ তাঁদের মধ্যেই একজন বলেন, "আমাদের চিঠি দিয়ে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য 23 মার্চ আসতে বলা হয়েছিল ৷ আমরা এখানে আসার পর জয়েনিং লেটার দেওয়া হয় ৷ তারপর মাঝখানে টাকা আনতে বাড়ি গিয়েছিলাম ৷ এখন কমিউনিটি হলেই আছি ৷ তার জন্য পৌরপ্রশাসককে দরখাস্ত করে অনুমতিও নিয়েছি ৷"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : চুঁচুড়া পৌরসভায় কর্মী নিয়োগে অস্বচ্ছতার কথা স্বীকার কল্যাণের, নিয়োগপত্র বাতিলের নির্দেশ

বিক্ষোভরত অস্থায়ী মজদুর রাধেশ্যাম শঙ্খ বণিক বলেন, "নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা সত্ত্বেও কোনও কিছুই মানছেন না পৌরপ্রশাসক গৌরিকান্ত মুখোপাধ্যায় । বেশ কয়েকজনকে পৌরসভার কমিউনিটি হলগুলিতে বহাল তবিয়তে রেখে দিয়েছে । যতক্ষণ না এই নিয়োগ বাতিল করা হবে ততক্ষণ এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে ।"

এই বিষয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, "আমি পৌরসভার এই ব্যাপারের মধ্যে নেই । যারা আন্দোলন করছে তারাও আমার কাছে আসেনি । নিয়োগ দেওয়া ও বাতিল করা সবটাই সরকারের ব্যাপার । এর মধ্যে চেয়ারম্যানের কোনও ভূমিকা নেই । সরকার বলেছে চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছে ৷ সরকার বলেছে চেয়ারম্যান তাড়িয়ে দেবে । এখানে চেয়ারম্যান জামাই আদরের কেউ না । এই আন্দোলন পৌরসভার গেটে করে সাধারণ মানুষের সমস্যা তৈরি করছে । এর পিছনে CPI(M) ও BJP-র মদত আছে । অস্থায়ী কর্মীরা কোনওদিন ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পায়নি । এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত ছাড়া কিছু না ।"

চুঁচুড়া, 2 জুলাই : মজদুর ও পিওন পদে কর্মী নিয়োগ হয়েছিল ৷ কিন্তু তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, তাতে নাম রয়েছে এক কাউন্সিলরেরও ৷ শুধু তাই নয়, নাম রয়েছে আরও দুই কাউন্সিলরের ছেলেদেরও । তারপর থেকেই চুঁচুড়া পৌরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলতে শুরু করে বিরোধীরা । এরপরই পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে নিয়োগপত্র বাতিল করা হয় ৷ কিন্তু অভিযোগ, তারপরও বহাল তবিয়তে পৌরসভায় কাজ করছেন চার জন ৷ আর তারই প্রতিবাদে সকাল থেকে পৌরসভার গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অস্থায়ী কর্মীরা ৷ তাঁদের প্রশ্ন, নিয়োগপত্র বাতিল হওয়ার পরও কীভাবে পৌরসভার কমিউনিটি হলে রয়েছেন এই চারজন ৷

Agitation for Corruption
এই চার জনই পৌরপ্রশাসকের অনুমতিতে পৌরসভার কমিউনিটি হলে থাকছেন

1 মার্চ চুঁচুড়া পৌরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের জন্য একটি লিখিত পরীক্ষা হয় । পরীক্ষা দেন প্রায় 8 হাজার চাকরিপ্রার্থী । চার দিনের মাথায় অর্থাৎ 4 মার্চ সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় । তাতে 300 জনের নামের তালিকা প্রকাশিত হয় । কয়েকদিন পর তাঁদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় । সেখান থেকে চূড়ান্ত 76 জনকে নির্বাচন করা হয় । প্রত্যেককে নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় । কিন্তু তারপরই আবার 54 জনের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয় । আর সেই তালিকায় দেখা যায়, নাম রয়েছে পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর সৌমিত্র মালাকারের । পাশাপাশি তালিকার নাম রয়েছে 9 নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর সুপর্ণা সেনের ছেলে সাত্ত্বিক সেনের । নাম রয়েছে 13 নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দেব অধিকারীর ছেলে সৌদীপ্ত অধিকারীর । শুধু তাই নয়, 12 জুন তাঁরা কাজে যোগদানও করেছেন । তবে, বাকি 19 জনকে এখনও কাজে যোগদান করানো হয়নি । আর এই পুরো বিষয়টাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলে বিরোধীরা ।

এই সংক্রান্ত আরও খবর : কর্মী নিয়োগের তালিকায় কাউন্সিলরের নাম ! কাঠগড়ায় চুঁচুড়া পৌরসভা

বিরোধীদের চাপে পড়ে নিয়োগে অনিয়মের কথা স্বীকার করেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "হুগলি-চুঁচুড়া পৌরসভার নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম হয়েছে ৷ নিয়োগের মধ্যে অস্বচ্ছতা রয়েছে ৷ যে নিয়োগ হয়েছে তাতে ভুল রয়েছে ৷ আগামীদিনে আইন অনুযায়ী চুঁচুড়া পৌরসভায় কর্মী নিয়োগ হবে ৷ BJP এইসব আন্দোলন করে ঘোলা জলে মাছ ধরছে ৷ আমি ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছি, এই নিয়োগ বাতিল হবে ৷ " কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা হওয়ার পর তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷

আজ নতুন করে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হন পৌরসভার অস্থায়ী কর্মীরা ৷ তাঁরা জানান, নিয়োগপত্র বাতিল হওয়ার পরও চারজন এখনও পৌরসভার কমিউনিটি হলেই রয়েছেন ৷ তাঁদের অভিযোগ, এই সবকিছুর পিছনে হাত রয়েছে পৌরপ্রশাসক গৌরিকান্ত মুখোপাধ্যায়ের ৷

কমিউনিটি হলে যে চারজন রয়েছেন তাঁরাও স্বীকার করেছেন যে এতে পৌর প্রশাসকের সম্মতি রয়েছে ৷ এই চার জনের কেউ মুর্শিদাবাদ, কেউ মালদা, কেউ নদিয়ার বাসিন্দা ৷ তাঁদের মধ্যেই একজন বলেন, "আমাদের চিঠি দিয়ে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য 23 মার্চ আসতে বলা হয়েছিল ৷ আমরা এখানে আসার পর জয়েনিং লেটার দেওয়া হয় ৷ তারপর মাঝখানে টাকা আনতে বাড়ি গিয়েছিলাম ৷ এখন কমিউনিটি হলেই আছি ৷ তার জন্য পৌরপ্রশাসককে দরখাস্ত করে অনুমতিও নিয়েছি ৷"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : চুঁচুড়া পৌরসভায় কর্মী নিয়োগে অস্বচ্ছতার কথা স্বীকার কল্যাণের, নিয়োগপত্র বাতিলের নির্দেশ

বিক্ষোভরত অস্থায়ী মজদুর রাধেশ্যাম শঙ্খ বণিক বলেন, "নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা সত্ত্বেও কোনও কিছুই মানছেন না পৌরপ্রশাসক গৌরিকান্ত মুখোপাধ্যায় । বেশ কয়েকজনকে পৌরসভার কমিউনিটি হলগুলিতে বহাল তবিয়তে রেখে দিয়েছে । যতক্ষণ না এই নিয়োগ বাতিল করা হবে ততক্ষণ এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে ।"

এই বিষয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, "আমি পৌরসভার এই ব্যাপারের মধ্যে নেই । যারা আন্দোলন করছে তারাও আমার কাছে আসেনি । নিয়োগ দেওয়া ও বাতিল করা সবটাই সরকারের ব্যাপার । এর মধ্যে চেয়ারম্যানের কোনও ভূমিকা নেই । সরকার বলেছে চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছে ৷ সরকার বলেছে চেয়ারম্যান তাড়িয়ে দেবে । এখানে চেয়ারম্যান জামাই আদরের কেউ না । এই আন্দোলন পৌরসভার গেটে করে সাধারণ মানুষের সমস্যা তৈরি করছে । এর পিছনে CPI(M) ও BJP-র মদত আছে । অস্থায়ী কর্মীরা কোনওদিন ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পায়নি । এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত ছাড়া কিছু না ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.