রিষড়া, 7 মার্চ: রাজমিস্ত্রির সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই কি প্রাণ খোয়াতে হল গৃহবধূকে ? আর সেই ঘটনা দেখে ফেলাতেই প্রাণ গেল মহিলার 10 বছরের মেয়ের ? রিষড়ার দেওয়ানজি স্ট্রিটের একটি আবাসনে মা-মেয়ের খুনের ঘটনায় আপাতত এই দু’টি প্রশ্নই ভাবাচ্ছে পুলিশকে ৷ ঘটনায় ধৃত তিন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এর জবাব পেতে চাইছে তারা ৷
গত শুক্রবার হুগলির রিষড়ার একটি ফ্ল্য়াট থেকে উদ্ধার হয় ঝুমা চট্টোপাধ্য়ায় (35) ও তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা চট্টোপাধ্য়ায়ের (10) দেহ ৷ তদন্তে নেমে মাত্র 24 ঘণ্টার মধ্যেই তিন যুবককে গ্রেফতার করে রিষড়া থানার পুলিশ ৷ ধৃতরা সকলেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এবং পেশায় রাজমিস্ত্রি ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল নম্বর ট্র্য়াক করে অভিযুক্তদের হদিশ মেলে ৷ শনিবার তাদের মধ্যে দু’জনকে বর্ধমান এবং একজনকে মুর্শিদাবাদ থেকে পাকড়াও করা হয় ৷ রবিবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সকলকেই 10 দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ৷
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধৃত তিন রাজমিস্ত্রির মধ্যে একজনের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ঝুমার ৷ ঝুমার স্বামী অয়ন চট্টোপাধ্য়ায় দমকলকর্মী ৷ পেশাগত কারণেই অন্যত্র থাকতে হয় তাঁকে ৷ মাঝমধ্যে ছুটি পেলে তবেই রিষড়ার ফ্ল্য়াটে আসেন তিনি ৷ যেখানে মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ঝুমা ৷ সূত্রের খবর, ঝুমাদের ফ্ল্য়াটের আশপাশেই কোথাও নির্মাণকাজ করতে এসেছিল ওই রাজমিস্ত্রি ৷ সেখানেই আলাপ হয় দু’জনের ৷ পরে যা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে ৷ এমনকী, ঝুমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেয় ওই যুবক ৷ তার কাছ থেকে বেশ কয়েক দফায় মোটা টাকাও নেন ঝুমা ৷ কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্য়ান করেন তিনি ৷ এরপরই ঝুমাকে দেওয়া টাকা ফেরত চায় ওই যুবক ৷ কিন্তু ঝুমা তা ফেরাতে অস্বীকার করেন ৷ মনে করা হচ্ছে, এই টানাপোড়েনের জেরেই শেষমেশ ঝুমাকে খুন করে ওই যুবক ৷ প্রাণ খোয়াতে হয় ঝুমার মেয়েকেও ৷ দু’জনকেই শ্বাসরোধ করে মারা হয় ৷
আরও পড়ুন: নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন, যুবককে ফাঁসির সাজা দিল বোলপুর আদালত
পুলিশের অনুমান, গত শুক্রবার মা-মেয়ের দেহ উদ্ধার হলেও খুন দু’টি করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে কোনও এক সময়ে ৷ তারপর দেহ দু’টির উপর চাদর চাপা দিয়ে ফ্ল্য়াটের দরজায় তালা ঝুলিয়ে চম্পট দেয় আততায়ীরা ৷ দীর্ঘক্ষণ ফ্ল্য়াট বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের ৷ খবর যায় পুলিশের কাছে ৷ তারপরই দরজা ভেঙে দেহ দু’টি উদ্ধার করে পুলিশ ৷ ঝুমার স্বামী অয়নকে জেরার সময় প্রথম পেশায় রাজমিস্ত্রি এক যুবকের কথা জানতে পারে তারা ৷ পরে ঝুমার মোবাইলের কল ডিটেইলস ঘেঁটেও এ বিষয়ে সূত্র পাওয়া যায় ৷ মেলে অভিযুক্তদের নম্বর ৷ সেই নম্বরগুলি ট্র্য়াক করেই জানা যায় তাদের অবস্থান ৷