ফুরফুরা শরিফ, ২৭ মার্চ : "তৃণমূল কংগ্রেস হিন্দু ও মুসলিমের মধ্যে ভাগাভাগি করছে। এরা কমিউনাল মাইন্ডের লোক। ওদের থেকে জনগণের দূরে থাকা দরকার।" তৃণমূল কংগ্রেস ও সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বললেন হুগলির ফুরফুরার পীর আব্বাস সিদ্দিকি। তিনি অভিযোগ করেন, শ্রীরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তথা বিদায়ি সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি ফুরফুরার কোনও উন্নয়ন করেননি। তাই ফুরফুরার ধর্মীয় সংগঠনের তরফে ভোটের প্রচারের সময় কল্যাণবাবুকে কালো পতাকা দেখানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কল্যাণবাবু নিজের প্রচারের রাস্তা পরিবর্তন করেন। তাই এই কর্মসূচি সফল হয়নি।
আব্বাস সিদ্দিকি বলেন, "কল্যাণ ব্যানার্জি আমাদের এলাকার 10 বছরের সাংসদ। তিনি লোকসভায় একবারও ফুরফুরায় রেলের কথা তোলেননি। উন্নয়ন পরিষদকে নিয়ে একটি নাটক চলছে। কিছুই উন্নয়ন হয় না। এটা রাজনীতির একটি অংশ। জুম্মার শেষদিনে ফুরফুরা শরিফে 1 কোটি লোক হয়েছিল। 72 ঘণ্টার মধ্যে একবারও উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসেননি। ওই তিনদিনের অনুষ্ঠানে ফুরফুরা শরিফে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। সরকারের তরফে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। সামান্য কিছু আলো দেওয়া হয়। এখানকার হাসপাতাল নিয়েও প্রচুর নাটক চলছে। ভালো ভালো ডাক্তারদের জাঙ্গিপাড়া ও অন্যান্য জায়গায় ট্রান্সফার করা হয়। এখানে ITI কলেজ হওয়ার কথা ছিল। সেটাও জাঙ্গিপাড়ায় করা হল। ফুরফুরায় এই কলেজটি হলে হিন্দু মুসলিম একসাথে পড়াশোনা করতে পারত। ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি হত। এখানে এক শ্রেণির মানুষ আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে। আজ এই সব মানুষের চরিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই। এরা কমিউনাল মাইন্ডের লোক।"
শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ ব্যানার্জি গতকাল বিকেলে ফুরফুরায় নির্বাচনী প্রচারে যান। ফুরফুরার একটি ধর্মীয় সংগঠন তাঁকে কালো পতাকা দেখানোর পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু কল্যাণবাবু প্রচারের রাস্তা পরিবর্তন করেন। তাই এই কর্মসূচি সফল হয়নি। তবে সংগঠনের সদস্যরা তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান।
প্রচারের রাস্তা পরিবর্তনের ব্যাপারে আব্বাস সিদ্দিকি বলেন, "উনি হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। ফুরফুরায় মুখ দেখাতে পারবেন না বলেই রাস্তা পরিবর্তন করেছেন। তাঁকে কালো পতাকা দেখানো আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। কারণ তিনি 10 বছরের সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও লোকসভায় ফুরফুরা রেল প্রকল্পের কথা একবারও বলেননি। ফুরফুরা হল মুসলিমদের পীঠস্থান। এই রকম কমিউনাল মাইন্ড MP আমাদের এলাকায় চাই না।"
যদিও আব্বাস সিদ্দিকির বক্তব্যে তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি নন কল্যাণ ব্যানার্জি। বলেন, "দিদি (মমতা ব্যানার্জি) বা দীনেশদা (দীনেশ ত্রিবেদি) যতদিন রেলমন্ত্রী ছিলেন, ততদিন রেল প্রকল্পের কাজ চলছিল। মোদি সরকার আসার পর রেল প্রকল্পের কাজ একদম বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের রেলমন্ত্রী হলে ফের কাজ শুরু হবে।"
ফুরফুরার উন্নয়ন নিয়ে কল্যাণবাবু বলেন, "ওখানে উন্নয়নের জন্য 10 কোটি টাকা দিয়েছে উন্নয়ন পরিষদ।" পীর আব্বাস সিদ্দিকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ওর কথা আমি ধরি না। CPI(M)-এর জলসায় গিয়ে প্রচার করে আসছে। আর বিক্ষোভ কোথাও আমি দেখতে পাইনি। ওখানে বিরোধীই নেই।"