পোলবা, 20 ফেব্রুয়ারি: মাটির বাড়িতে টালির চাল ৷ ঘরে সর্বসাকুল্যে রয়েছে তিনটি বাল্ব ৷ শীতকাল বলে পাখারও প্রয়োজন হচ্ছে না ৷ এতেই বিদ্যুতের যা বিল এসেছে তাতে চোখে অন্ধকার দেখছেন পেশায় ক্ষেতমজুর সুরাই মূর্মূ ৷ নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে লক্ষাধিক টাকার বিল চোকাতে হচ্ছে হুগলির পোলবার দনার পাড়ার বাসিন্দা সুরাই মুর্মূকে ৷
পোলবার দনার পাড়ার বাসিন্দা সুরাই মুর্মূ অন্যের জমিতে চাষ করে কোনও মতে সংসার চালান । টালির চালের মাটির বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার ৷ মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে আগেই । কঠিন অসুখে ভুগে বছরখানেক আগে মৃত্যু হয়েছে একমাত্র ছেলের ৷ টাকার অভাবে ছেলের তৈরি পাকা বাড়ি অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে । এই অবস্থায় মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো নেমে এসেছে বিদ্যুতের বিল ৷ অভাবের সংসারে লক্ষাধিক টাকার বিদ্যুৎ বিল আসায় অথৈ জলে পড়েছেন ওই প্রান্তিক চাষি ৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন ৷ সেখানে একজন প্রান্তিক চাষির বিদ্যুতের বিল নাকি লক্ষাধিক টাকা ৷ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মিটার রিডিং । সেই অনুযায়ী টাকার অঙ্কটাও বেড়ে চলেছে । বারবার পোলবার বিদ্যুৎ দপ্তরে গিয়েও লাভ হচ্ছে না ৷ বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের কথায় কিছু টাকা জমা দিলেও বর্তমানে কোনও টাকা দিতে পারছেন না তিনি ।
সুরাই মূর্মূর বাড়ির বিদ্যুতের মিটার রিডিংয়ে দেখা গিয়েছে 13 দিনে 3000 ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে । প্রশ্নটা সেখানেই ৷ শীতের সময়ে মাত্র তিনটি LED বাল্বে এত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয় কীভাবে? পোলবার বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিক সুবীর রায় বলেন, "সুরাই মূর্মূকে আমরা লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলেছি । বিষয়টি অবশ্যই আমরা খতিয়ে দেখব । আগের বকেয়া টাকা না দেওয়া কারণে এত পরিমাণে বিল আসতে পারে । না হলে মিটারে সমস্যা থাকতে পারে ৷ আমরা তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব ।"