কলকাতা, 11 জানুয়ারি: শুরু হয়েছে 'এপিজে কলকাতা সাহিত্য উৎসব' ৷ অ্যালেন পার্কে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সঙ্গীতশিল্পী ঊষা উত্থুপ ৷ অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয় প্রয়াত স্বনামধন্য পরিচালক শ্যাম বেনেগলকে ৷ সাহিত্য উৎসবের শুরুতে গান গেয়ে আসর জমিয়ে দেন পদ্মভূষণে সম্মানিত শিল্পী ৷
পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয়েছে প্রখ্যাত অভিনেত্রী তথা গায়িকা ইলা অরুণের আত্মজীবনী 'পর্দে কে পিছে'। নিজের আত্মজীবনী প্রকাশে শহরে হাজির ছিলেন তিনি। ষোড়শ এপিজে কলকাতা সাহিত্য উৎসবে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিনয় শর্মার সঙ্গে কথোপকথনে ইলা অরুণ তাঁর জীবন, কেরিয়ারের নানা দিক তুলে ধরেন।
বইটিতে গায়িকার শৈশব থেকে বর্তমান অবধি নানা অধ্যায় বর্ণিত হয়েছে। তাঁর জীবনের ওঠাপড়া, সাফল্য-ব্যার্থতা, আনন্দ-হতাশার দলিল হয়ে উঠেছে বইটি। রাজস্থানের গ্রাম থেকে উঠে এসে বলিউডের চকচকে দুনিয়ায় কীভাবে পা রাখলেন তিনি, তারও কাহিনি বর্ণিত হয়েছে বইটিতে।
ইলা অরুণ এবং বিনয় শর্মার কথোপকথনের সময়ে ইলা অরুণ বলেন, " অনেকে আমার গাওয়া সেই বিখ্যাত বলিউড গানের উল্লেখ করে আমাকে বইটির নাম 'চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়' দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমি তাতে রাজি হইনি। আমি নাম দিয়েছি 'পর্দে কে পিছে'। এখানে 'পর্দা' হল সেই পর্দার প্রতীক যা শিল্পীকে শ্রোতাদের থেকে আলাদা করে এবং আমার শৈল্পিক যাত্রার সারমর্মকে ধারণ করে। লোকে বলে যে আমরা নাকি কেবল আইটেম নম্বরের জন্যই গান করি। কিন্তু আমাদেরও একটি পরিচয় আছে। তারা সেটা স্বীকার করতে চায় না। "
প্রসঙ্গত, ইলা অরুণ 'ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা'তে লেখাপড়া করেন। সেই সময় খুব কাছ থেকে দেখেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটককে। তাঁর সঙ্গে এক সময়ের স্মৃতি ভাগ করে নিয়ে ইলা অরুণ বলেন, "ঋত্বিক ঘটক আমাকে বলেছিলেন আমি থিয়েটার করতে করতে মারা যাব। সেই সময়ে আমি জানতামও না যে উনি কে। কিন্তু তাঁর কথাগুলো এভাবে ভবিষ্যদ্বাণী হয়ে যাবে আমি ভাবিনি।"
সিনেমা তো বটেই একাধিক মেগা সিরিয়ালেও অভিনয় করেছেন ইলা অরুণ। এমনকী সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। 'ওয়েলকাম টু সজ্জনপুর', 'শাদি কে সাইড এফেক্টস', 'লমহে', 'চায়না গেট', 'যোধা আকবর'-সহ একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন 'মুঝসে দোস্তি করোগি' ছবিতে। এ ছাড়াও বলিউডের অজস্র গান তাঁর কণ্ঠে সমাদৃত হয়েছে।
12 জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এই সাহিত্য উৎসব ৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন মডেল তথা অভিনেতা মিলন্দ সুমন ও তাঁর স্ত্রী অঙ্কিতা সোমান ৷ কিপ মুভিং নামে তাঁদের একটি বই প্রকাশিত হয় এইদিন ৷ স্বাস্থ্য নিয়ে ভীষণই সচেতন তারকা দম্পতি ৷ মিলন্দ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে জানান, তিনি আগে দৌড়তে পছন্দ করতেন না ৷ কিন্তু 2004 সালে মুম্বই ম্যারাথন তাঁর জীবন বদলে দেয় ৷ তিনি প্রায় 21 কিলোমিটার দৌড়েছিলেন সেবার ৷ অন্যদিকে অঙ্কিতা জানান, অনুপ্রেরণা জীবনে আসবে যাবে কিন্তু নিয়মানুবর্তিতা থাকলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব ৷