শিলিগুড়ি, 5 নভেম্বর : রবিবার শিলিগুড়ির এক নার্সিংহোমে শিশুমৃত্যুর জেরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছিল এক তৃণমূল নেতা ও স্থানীয়দের বিরুদ্ধে । এবার বৃদ্ধার মৃত্যুর জেরে অন্য এক নার্সিংহোম থেকে দেহ নিতে অস্বীকার করল মৃতার পরিজনরা ৷ চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে নার্সিংহোম চত্বরে দিনভর ধরনা দেয় পরিজনরা ৷ পুলিশের আশ্বাসে গভীর রাতে ধরনা তুলে নেন বিক্ষুব্ধরা ৷
গত 26 অক্টোবর রাজগঞ্জের আমবাড়ি–কামারভিটার বাসিন্দা দিনমণি রায় (65) স্কুটির ধাক্কায় যখম হন । বৃদ্ধাকে সেদিনই ফুলবাড়ির এই নার্সিংহোমে নিয়ে আসা হয় । নার্সিংহোমের পরামর্শ মেনে, প্যাকেজের আওতায় চিকিৎসা শুরু হয় বৃদ্ধার । রোগীর মাথার অস্ত্রোপচার করার কথা জানায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ । অস্ত্রোপচারও হয় ৷ কিন্তু তারপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে রোগীর । কোমায় চলে যান তিনি । তারপর তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় । গতকাল সকালে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানায় । এরপরই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন পরিজনরা ।
মৃতা দিনমণি রায়ের ছেলে শংকর রায় উত্তর দিনাজপুরের রামগঞ্জ হাইস্কুলের শিক্ষক ৷ তিনি বলেন, "এখানে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মাকে এনেছিলাম । আমাদের ভুল বুঝিয়ে ও মানসিকভাবে দুর্বল করে মাকে ভরতি করানো হয় । প্রয়োজন ছাড়াই মায়ের মাথার অপারেশন করা হয় । আর এতেই ভুল চিকিৎসায় মায়ের মৃত্যু হল । আমরা বলেছিলাম, পরিকাঠামো না থাকলে ভরতি না নিতে । কিন্তু পরিকাঠামো ও চিকিৎসক ছাড়াই মাকে ওরা এখানে মাকে রেখে দিল ৷ আমরা এর সঠিক জবাব চাই ।"
শংকরবাবুর পাশাপাশি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন মৃতার পরিবার পরিজনরা ৷ মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানানোর দাবিতে গতকাল সকাল থেকে নার্সিংহোম চত্বরে ধরনায় বসে তারা ৷ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছে তারা ৷ এদিকে ধরনার জেরে নার্সিংহোম চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায় ৷ সেখানে মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী । যদিও গভীররাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের আশ্বাসে ধরনা উঠে যায় ৷
এনিয়ে নার্সিংহোমের প্রশাসক কেশব চ্যাটার্জি বলেন, "গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয় । আমরা চেষ্টা করেছিলাম । পরিজনের সঙ্গে কথা বলেই অস্ত্রোপচার করা হয় । রোগীর রক্তচাপ অস্বাভাবিক হারে কমে যায় । আটটা নাগাদ মৃত্যু হয় রোগীর ।"