দার্জিলিং, 22 মার্চ: ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জ্বলছে আগুন (Dumping Ground Fire)। তার জেরে বন্ধ জঞ্জাল অপসারণ প্রক্রিয়া । আবর্জনার স্তূপে ভরে উঠছে শৈলরানি ! এমনই এক দুর্বিসহ সমস্যার মধ্যে পড়েছে দার্জিলিং । একমাত্র ডাম্পিং গ্রাউন্ডে দিনরাত জ্বলছে আগুন। আর বিষাক্ত গ্যাসের ধোঁয়ায় ঢাকছে পাহাড়। দূষিত হচ্ছে পাহাড়ের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আর অন্যদিকে, আগুন না-নেভায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ময়লা ফেলা বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় পাহাড়বাসীরা। যার জেরে গত এক সপ্তাহ ধরে আবর্জনার স্তূপে মুখ ঢাকছে পাহাড়।
যেই পাহাড়ের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য দেশ-বিদেশের পর্যটকরা ছুটে আসেন। আজ সেই পাহাড়ের অলি-গলিতে জমে রয়েছে গত সাতদিনের আবর্জনার স্তূপ। আর তাতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পৌরসভা, জিটিএ ও জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। দ্রুত সমস্যার সমাধান না-করলে একদিকে যেমন ডাম্পিং গ্রাউন্ডের বিষাক্ত গ্যাসে লাগা ধোঁয়া থেকে অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে পাহাড়ের বাতাস। অন্যদিকে, জঞ্জাল অপসারণ বন্ধ থাকায় তৈরি হবে আবর্জনার পাহাড়।
দার্জিলিংয়ের একমাত্র নোংরা আবর্জনার ডাম্পিং গ্রাউন্ডটি অবস্থিত কার্শিয়াংয়ে। কাশেলটন চা বাগান সংলগ্ন চাইনা ওজি এলাকায় রয়েছে ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডটি। যেখানে রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় তৈরি হওয়ার কথা আবর্জনা ধ্বংসের কারখানা। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় সেখানে আপাতত পুরো পাহাড়ের আবর্জনা ফেলা হয়। কিন্তু, গত সাতদিন ধরে ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জ্বলছে আগুন। একাধিকবার দমকল ওই আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন। মাঝে আগুন কমলে আবার জ্বলে ওঠে।
আরও পড়ুন: জ্বলছে বাঁকুড়ার একাধিক জঙ্গল ! আগুন লাগোনা হচ্ছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর
এমনকি টানা বৃষ্টিও নেভাতে পারেনি সেই আগুন। যার জেরে পুরো এলাকা বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। প্রভাব পড়েছে এলাকাজুড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আর্থ মুভার দিয়ে জঞ্জালের স্তূপ সরিয়ে নেভানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু তাতেও লাভের লাভ কিছু হয়নি। আর আগুন না-নেভায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডের আশেপাশে থাকা দাঁড়াগাঁও, ফাটকের মতো গ্রামের বাসিন্দারা ময়লার গাড়ির যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, আগুন না-নিভলে নতুন করে কোনও আবর্জনা সেখানে তাঁরা ফেলতে দেবেন না। আর এসবের জেরে কার্শিয়াং তো বটেই, দার্জিলিংয়ের একাধিক জায়গায় জমেছে আবর্জনার স্তূপ।
ডাম্পিং গ্রাউন্ডের পাশে থাকা গ্রামবাসী সন্তোষ পাহাড়ি জানান, বিষাক্ত গ্যাসে ওই আগুন লাগায় সেটা নেভানো যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় নতুন করে আবর্জনা ফেললে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আশেপাশের মানুষ থাকতে পারছেন না। আগে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করা হোক। কার্শিয়াংয়ের ব্যবসায়ী গায়ত্রী থাটালের কথায়, সাতদিন ধরে শহরের জঞ্জাল অপসারণ বন্ধ রয়েছে। এলাকায় সব জায়গায় একই অবস্থা। বৃষ্টিতে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। আরও এক গ্রামবাসী নর্দেন রুম্বা বলেন, "কার্শিয়াংয়ের এই পরিস্থিতি দেখার মতো নয়। সাতদিন ধরে এই সমস্যা চলছে। অলিতে গলিতে জঞ্জাল জমে রয়েছে। দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা করা হোক।" কার্শিয়াং পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সুভাষ প্রধানের কথায়, গত কয়েকদিন ধরে এই আগুন জ্বলছে। আমরা গিয়েও দেখেছি। সমস্যা সমাধানের দ্রুত চেষ্টা করা হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: এশিয়ার সবচেয়ে বড় মিষ্টি জলের বাদাবনে আগুন ! উদ্বিগ্ন বনদফতর