বালুরঘাট, 18 সেপ্টেম্বর : একসঙ্গে 30টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে মৃত্যু হল বালুরঘাট সদর ট্র্যাফিকের OC সুদীপ্তকুমার দাসের । গতরাতে বিষয়টি পরিবারের নজরে আসতেই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক সুদীপ্তবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । কুমারগঞ্জের এক মহিলা সিভিক কর্মীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে সুদীপ্তবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি তাঁর স্ত্রী সোমা দাসের । বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বালুরঘাট থানার পুলিশ ।
সুদীপ্তকুমার দাসের বাড়ি মালদা জেলায় । 1997 সালে তিনি পুলিশের চাকরি পান । 1999 সালে তিনি বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রী সোমা দাস মালদা জেলার বাসিন্দা । দীর্ঘদিন ধরে সুদীপ্তবাবু দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি গঙ্গারামপুর ট্র্যাফিক, তপন থানার OC ছিলেন । দীর্ঘদিন কুমারগঞ্জ থানার OC-র পদে কাজ করেছেন । প্রায় বছর দেড়েক আগে বালুরঘাট সদর ট্র্যাফিকের OC হিসেবে কাজে যোগ দেন । তিনি বালুরঘাট পুলিশ কোয়ার্টারে থাকলেও, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে গঙ্গারামপুর পুলিশ কোয়ার্টারে থাকতেন । আট দিন আগে সুদীপ্তবাবু স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে ডেকে নেন তাঁর বালুরঘাটের কোয়ার্টারে । গতরাতে বাড়ি ফেরার পর বাড়িতে সবার সঙ্গে ভালোভাবে কথাও বলেন । পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এরপরই তিনি একসঙ্গে 30টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন । হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে বাধা দেন সুদীপ্তবাবু। তিনি ঘুমিয়ে পড়লে বালুরঘাট থানার পুলিশকে ফোন করে হাসপাতালে নিয়ে যান সোমাদেবী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শুক্রবার মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।
সোমাদেবীর দাবি, কুমারগঞ্জে এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সুদীপ্তবাবু । বালুরঘাটের কোয়ার্টারে ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের যাতায়াত ছিল অবাধ। এদিকে বালুরঘাট সদর ট্র্যাফিকে কাজে যোগ দেওয়ার পর এই সম্পর্কের কথা জানতে পারেন স্ত্রী সোমাদেবী। বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয় দাম্পত্য কলহ । অন্যদিকে কুমারগঞ্জের ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার দিনদিন সুদীপ্তবাবুকে ব্ল্যাকমেল করতে থাকেন বলে অভিযোগ । অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই হাজার হাজার টাকা দাবিও করতেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ।
এবিষয়ে পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, গতরাত তিনটের দিকে ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ জানানো সম্ভব হবে।