বালুরঘাট, 19 ফেব্রুয়ারি : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই স্কুল দপ্তর ও প্রশাসনের কাছে । গতকাল থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা । এদিকে এবারের দক্ষিণ দিনাজপুরের মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কত তা সঠিকভাবে জানাতে পারল না জেলা প্রশাসন বা জেলা স্কুল শিক্ষা দপ্তর । যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক । বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে আসা পরীক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছে । যার ফলে জেলা স্কুল শিক্ষা দপ্তর সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারছেন না বলে কটাক্ষ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সংঘের সদস্যদের । যদিও এবিষয়ে ক্যামেরার সামনে কোনও কিছুই বলতে চাননি জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মৃণ্ময় ঘোষ ।
প্রত্যেকবারই মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে কত পরীক্ষার্থী রয়েছে তা জেলা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয় । কত পুরুষ ও মহিলা পরীক্ষার্থী রয়েছে তাও জানানো হয় । তবে এবার প্রথম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিসংখ্যান জানানো হয়নি । সরকারি যে সার্কুলার বেরিয়েছে সেখানেও সঠিক পরিসংখ্যান উল্লেখ নেই । প্রায় 19 হাজার পরীক্ষার্থী জেলায় রয়েছে বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে । সরকারি সেই সার্কুলারে পুরুষ ও মহিলা পরীক্ষার্থীর কোনও পরিসংখ্যান উল্লেখ নেই । যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় মোট 19 হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে 10 হাজার 800 জন মহিলা পরীক্ষার্থী এবং 8 হাজার 200 পরীক্ষার্থী । সরকারি সার্কুলারে পরিসংখ্যান না থাকায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক । এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় মোট 55টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে । যার মধ্যে 11টি মূল পরীক্ষা কেন্দ্র এবং 44টি সাব পরীক্ষা কেন্দ্র । প্রত্যেক পরীক্ষা কেন্দ্রেই সরকারের অবজারভার নিয়োগ থাকছে । এছাড়াও পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংঘের জেলা যুগ্ম সম্পাদক শুভেন্দু কুমার বক্সি বলেন, ‘‘দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিনটি বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে । জেলার বেশ কিছু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বিভিন্ন মিশন খোলা হচ্ছে । তিনি যেই এলাকায় স্কুল করেন সেখানে প্রচুর এমন মিশন খোলা হয়েছে । এমন কী বাংলাদেশ থেকেও অবৈধভাবে এপারে এসে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছে । এদের মধ্যে অনেকেই সেই পরীক্ষায় বসে না । এর ফলে সঠিক তথ্য দেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয় জেলা প্রশাসন ও জেলা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের । তাই ‘প্রায়’ কথাটি ব্যবহার করতে এবং কথার চালাকি করতে হচ্ছে স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে । এ নিয়ে আমরা 2018 সালের জুন মাসে তৎকালীন জেলা স্কুল পরিদর্শক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলাম ৷’’
অন্যদিকে এই বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মৃণ্ময় ঘোষ জানান, তাঁদের কাছে কোনও বার সেভাবে পরিসংখ্যান আসে না । তাই কত পরীক্ষার্থী রয়েছে তা বলা সম্ভব হয় না । এই বিষয়ে তৃণমূলের শিক্ষা সেলের কনভেনার উজ্জ্বল পোশাক জানান, কত পরীক্ষার্থী রয়েছে তা আগেভাগে বলা মুশকিল হয় । কারণ দেখা গেছে কখনও টেস্ট পরীক্ষায় অনেকেই অকৃতকার্য হয় । আবার অনেকেই ভালো পরীক্ষার জন্য পরীক্ষা ড্রপ দেয় । এর ফলে পরিসংখ্যানটা আগেই মেলে না । যারা এমন অভিযোগ করছেন তারা হয়তো পুরো বিষয়টা জানেন না । বা জেনেশুনে বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন বলে উজ্জ্বলবাবু পালটা মন্তব্য করেন ।