বালুরঘাট, ৯ মার্চ : বালুরঘাট নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রের সৌন্দর্যায়নের বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে বিপাকে পড়লেন বালুরঘাটের সাংসদ অর্পিতা ঘোষের ঘনিষ্ঠ নাট্য নির্দেশক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। মহিষবাথানের হস্তশিল্পীদের পাওনা অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ নিয়ে জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হলেন কুশমণ্ডি-মহিষাবাথান হস্তশিল্প সমবায় সমিতি। সমিতির সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা পরেশ সরকার ডাক মারফত জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দেবেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন।
২ তারিখ উদ্বোধন হয়েছে ১২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৮ হাজার ২৭৫ টাকা ব্যয়ে তৈরি বালুরঘাট নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রের।
নাট্যচর্চা কেন্দ্রটি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের তরফে সরাসরি তৈরি করা হলেও এই কেন্দ্রের সৌন্দর্যায়নের তত্ত্বাবধানে ছিলেন সাংসদ অর্পিতা ঘোষ ও দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। দেবেশবাবু প্রায়ই বালুরঘাটে এসে ওই কাজ খতিয়ে দেখতেন। মূলত তাঁর উদ্যোগেই নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রে মহিষবাথানের হস্তশিল্প দিয়ে নানা কারুকার্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আর এই কাজেরই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। হস্তশিল্প সমবায় সমিতির সম্পাদক পরেশ সরকার দেবেশবাবুর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া নিয়ে অর্পিতা ঘোষ ও বিপ্লব মিত্র শিবির বিভক্ত হয়ে গেছে। জেলা তৃণমূলের একাংশ অর্পিতা ঘোষকেই ফের প্রার্থী হিসেবে চাইছে। আবার আরেকটা অংশ প্রার্থী হিসেবে চাইছে বিপ্লব মিত্রকে।
এনিয়ে সোশাল মিডিয়ায় অর্পিতা ঘোষকে বহিরাগত এবং বিপ্লব মিত্রকে ভূমিপুত্র হিসেবে দাবি করে চলছে জোর প্রচার। দুই শিবিরের লড়াই প্রায় সব ক্ষেত্রেই নজরে আসছে। এরই মাঝে সাংসদ ঘনিষ্ঠ নাট্য ব্যক্তিত্ব দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা রাজনৈতিক চাল বলেই মনে করছেন অনেকে।
এবিষয়ে পরেশ সরকার বলেন, "দেবেশবাবুর কথাতেই প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকার হস্তশিল্প সামগ্রী ওই নাট্যচর্চা কেন্দ্রটিতে দেওয়া হয়েছিল। এর বিল করেও দেওয়া হয়েছিল। ওই টাকা সম্ভবত তুলেও নিয়েছেন দেবেশবাবু। কিন্তু আমাদের মাত্র ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চাইতে গেলে গালাগাল করা হচ্ছে। গরীব হস্তশিল্পীদের বঞ্চনার সুবিচার পেতেই পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।"
এই অভিযোগের কথা শুনে হতবাক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। বলেন, "ঠিকাদার সংস্থার তরফে পাওয়া ৮০ হাজার টাকা ওই সমবায় সমিতিতে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পরে আর কোনও দাবির কথা জানি না। ভোটের আগে এমন অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হচ্ছে।
" সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, "বিষয়টা জানা ছিল না। ওই সমবায় সমিতি আমার কাছে অভিযোগ জানালে আগেই সমস্যা মেটানো হত। তবে দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে।"