ETV Bharat / state

Designer Lamp : ডিজাইনার প্রদীপ তৈরি করে অন্ধকার ঘোচাতে তৎপর দুলালী

এ এক হার না মানার কাহিনী ৷ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও এই বাজারে এখনও প্রদীপ তৈরি করে সংসারের হাল ফেরাতে তৎপর বুনিয়াদপুরের দুলালী পাল ৷ আগে সাধারণ প্রদীপ বানালেও এখন ইউটিউব দেখে ডিজাইনার প্রদীপ বানিয়ে তা ভিনরাজ্যে পাঠাচ্ছেন তিনি ৷ আলোর উৎসবের আগে তাই দম ফেলার ফুরসত নেই তাঁর ৷ সেই দুলালীর সঙ্গে কথা বলল ইটিভি ভারত ৷

দুলালীর তৈরি ডিজাইনার প্রদীপ
দুলালীর তৈরি ডিজাইনার প্রদীপ
author img

By

Published : Oct 26, 2021, 3:30 PM IST

বংশীহারি, 26 অক্টোবর : আসছে আলোর উৎসব ৷ আর কয়েকদিন পরেই রকমারি আলোয় সেজে উঠবে চারিদিক ৷ তবে প্রযুক্তির ব্যবহারে হার মেনেছে কায়িক শ্রম ৷ হাতে তৈরি সাধারণ মাটির প্রদীপের জায়গা নিয়েছে চিনা লাইট ৷ দোকানে বিক্রি হচ্ছে সেইসব টুনি লাইট ৷ ঝিকমিক করা সেই নজরকাড়া আলোই বেশি টানছে ক্রেতাদের ৷ কারণ প্রদীপ জ্বালাতে গেলে সরষের তেল, সলতে এসবেরও প্রয়োজন ৷ তাই ঝক্কি এড়াতে এখন বাজারচলতি রকমারি বৈদ্যতিক লাইটের উপরেই বেশি ঝুঁকছে আম বাঙালি ৷

তবুও এই বাজারে টিকে থাকার লড়াইয়ে হার মানতে রাজি নন বংশীহারির বুনিয়াদপুর পৌরসভার 9নং ওয়ার্ডের পালপাড়ার বাসিন্দা দুলালী পাল ৷ আগে সাধারণ মাটির প্রদীপ বানালেও তার এখন আর অত চাহিদা নেই ৷ চার বছর আগে ইউটিউবে ডিজাইনার প্রদীপ বানানোর ভিডিয়ো নজরে আসে ৷ তারপর থেকে নিজেই তা দেখে বাড়িতে বসেই ডিজাইনার প্রদীপ তৈরি করছেন ৷ ইতিমধ্যেই প্রদীপ তৈরিতে বেশ হাত পাকিয়েও ফেলেছেন তিনি ৷ তাঁর তৈরি প্রদীপ ইতিমধ্যেই পাড়ি দিয়েছে মহারাষ্ট্র, নাগপুর ও রাঁচিতে ৷ এ রাজ্যে এই ডিজাইনার প্রদীপের তেমন চাহিদা না থাকলেও ভিনরাজ্যে এর বেশ কদর রয়েছে বলে জানান মৃৎশিল্পী দুলালী পাল ৷

প্রদীপ রং করতে ব্যস্ত দুলালী
প্রদীপ রং করতে ব্যস্ত দুলালী

আরও পড়ুন : অন্ধ্রপ্রদেশের এই গ্রামে দীপাবলিতে 200 বছর জ্বলেনি প্রদীপ

প্রদীপ পুড়িয়ে শক্ত করার জন্য আলাদা ভাটি তৈরি করেন বাড়িতে । মাটি নরম করে, ছাঁচে প্রদীপ বানিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে, রং করে রোদে শুকানো ৷ সবটাই নিজের হাতে করেন দুলালীদেবী । প্রথম বছর নাগপুর ও মহারাষ্ট্র মিলিয়ে প্রায় সাত হাজার প্রদীপ বিক্রি করেছিলেন তিনি । এই প্রদীপ বিক্রি করেই সংসারের হাল ধরেছেন দুলালী ৷ কিন্তু করোনা আবহে দু'বছর চাহিদা না থাকায় খুব কম সংখ্যক প্রদীপ বানিয়েছিলেন বলে জানান তিনি ৷

তাঁর কথায়, "ভিনরাজ্য থেকে পাইকার না আসায় জেলার বিভিন্ন দশকর্মা দোকানে ডিজাইনার প্রদীপ বিক্রি করে সেভাবে লাভ হয়নি । শুধুমাত্র রং ও পরিশ্রমের কিছুটা খরচ উঠেছে । তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ভয়ে ভয়ে তিন মাস আগে থেকে সংসারের কাজের ফাঁকে তিন হাজার ছাঁচের রঙিন প্রদীপ বানাই । এক হাজার প্রদীপ তিন টাকা প্রতি পিস দরে রাঁচি পাঠিয়েছি । বাকি প্রদীপগুলি রং করছি । উৎসবের আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি । কবে অবশিষ্ট প্রদীপ বিক্রি হবে সেই অনিশ্চয়তায় দিন গুনছি ।"

আরও পড়ুন : টুনি বাল্বের সঙ্গে পাল্লা দিতে টেরাকোটার প্রদীপ কালিয়াগঞ্জে

স্বামী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে দুলালীদেবীর সংসার । সারাবছর বিভিন্ন ছাঁচের মূর্তি বানিয়ে কোনওরকমে পেট চলে । নিজে স্কুলের গণ্ডি পেরোতে না পারলেও দুই ছেলে ও এক মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার লক্ষে স্বামী উত্তম পাল ও দুলালীদেবী অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন ৷ পৌরসভায় থেকেও কাঁচা ঘরে বাস করছেন । কয়েকবার বন্যায় সর্বশান্ত হয়েও সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত থেকেছেন ।

তবে তাতে দুঃখ নেই ৷ ভিনরাজ্যে এই প্রদীপের কদর বাড়ায় খুশি দুলালী ৷ চাইছেন আরও বিক্রি বাড়ুক ৷ করোনায় এ বছর প্রদীপ অন্য রাজ্যে বেশি না গেলেও, ধীরে ধীরে এই প্রদীপের চাহিদা বাড়বে বলেই আত্মবিশ্বাসী তিনি ৷ আলোর উৎসবে তাই আলোয় ফিরতে এখন দম ফেলার সময় নেই দুলালীর ৷

আরও পড়ুন : আঁধারে আলোর প্রদীপ গড়ার কারিগররা

বংশীহারি, 26 অক্টোবর : আসছে আলোর উৎসব ৷ আর কয়েকদিন পরেই রকমারি আলোয় সেজে উঠবে চারিদিক ৷ তবে প্রযুক্তির ব্যবহারে হার মেনেছে কায়িক শ্রম ৷ হাতে তৈরি সাধারণ মাটির প্রদীপের জায়গা নিয়েছে চিনা লাইট ৷ দোকানে বিক্রি হচ্ছে সেইসব টুনি লাইট ৷ ঝিকমিক করা সেই নজরকাড়া আলোই বেশি টানছে ক্রেতাদের ৷ কারণ প্রদীপ জ্বালাতে গেলে সরষের তেল, সলতে এসবেরও প্রয়োজন ৷ তাই ঝক্কি এড়াতে এখন বাজারচলতি রকমারি বৈদ্যতিক লাইটের উপরেই বেশি ঝুঁকছে আম বাঙালি ৷

তবুও এই বাজারে টিকে থাকার লড়াইয়ে হার মানতে রাজি নন বংশীহারির বুনিয়াদপুর পৌরসভার 9নং ওয়ার্ডের পালপাড়ার বাসিন্দা দুলালী পাল ৷ আগে সাধারণ মাটির প্রদীপ বানালেও তার এখন আর অত চাহিদা নেই ৷ চার বছর আগে ইউটিউবে ডিজাইনার প্রদীপ বানানোর ভিডিয়ো নজরে আসে ৷ তারপর থেকে নিজেই তা দেখে বাড়িতে বসেই ডিজাইনার প্রদীপ তৈরি করছেন ৷ ইতিমধ্যেই প্রদীপ তৈরিতে বেশ হাত পাকিয়েও ফেলেছেন তিনি ৷ তাঁর তৈরি প্রদীপ ইতিমধ্যেই পাড়ি দিয়েছে মহারাষ্ট্র, নাগপুর ও রাঁচিতে ৷ এ রাজ্যে এই ডিজাইনার প্রদীপের তেমন চাহিদা না থাকলেও ভিনরাজ্যে এর বেশ কদর রয়েছে বলে জানান মৃৎশিল্পী দুলালী পাল ৷

প্রদীপ রং করতে ব্যস্ত দুলালী
প্রদীপ রং করতে ব্যস্ত দুলালী

আরও পড়ুন : অন্ধ্রপ্রদেশের এই গ্রামে দীপাবলিতে 200 বছর জ্বলেনি প্রদীপ

প্রদীপ পুড়িয়ে শক্ত করার জন্য আলাদা ভাটি তৈরি করেন বাড়িতে । মাটি নরম করে, ছাঁচে প্রদীপ বানিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে, রং করে রোদে শুকানো ৷ সবটাই নিজের হাতে করেন দুলালীদেবী । প্রথম বছর নাগপুর ও মহারাষ্ট্র মিলিয়ে প্রায় সাত হাজার প্রদীপ বিক্রি করেছিলেন তিনি । এই প্রদীপ বিক্রি করেই সংসারের হাল ধরেছেন দুলালী ৷ কিন্তু করোনা আবহে দু'বছর চাহিদা না থাকায় খুব কম সংখ্যক প্রদীপ বানিয়েছিলেন বলে জানান তিনি ৷

তাঁর কথায়, "ভিনরাজ্য থেকে পাইকার না আসায় জেলার বিভিন্ন দশকর্মা দোকানে ডিজাইনার প্রদীপ বিক্রি করে সেভাবে লাভ হয়নি । শুধুমাত্র রং ও পরিশ্রমের কিছুটা খরচ উঠেছে । তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ভয়ে ভয়ে তিন মাস আগে থেকে সংসারের কাজের ফাঁকে তিন হাজার ছাঁচের রঙিন প্রদীপ বানাই । এক হাজার প্রদীপ তিন টাকা প্রতি পিস দরে রাঁচি পাঠিয়েছি । বাকি প্রদীপগুলি রং করছি । উৎসবের আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি । কবে অবশিষ্ট প্রদীপ বিক্রি হবে সেই অনিশ্চয়তায় দিন গুনছি ।"

আরও পড়ুন : টুনি বাল্বের সঙ্গে পাল্লা দিতে টেরাকোটার প্রদীপ কালিয়াগঞ্জে

স্বামী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে দুলালীদেবীর সংসার । সারাবছর বিভিন্ন ছাঁচের মূর্তি বানিয়ে কোনওরকমে পেট চলে । নিজে স্কুলের গণ্ডি পেরোতে না পারলেও দুই ছেলে ও এক মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার লক্ষে স্বামী উত্তম পাল ও দুলালীদেবী অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন ৷ পৌরসভায় থেকেও কাঁচা ঘরে বাস করছেন । কয়েকবার বন্যায় সর্বশান্ত হয়েও সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত থেকেছেন ।

তবে তাতে দুঃখ নেই ৷ ভিনরাজ্যে এই প্রদীপের কদর বাড়ায় খুশি দুলালী ৷ চাইছেন আরও বিক্রি বাড়ুক ৷ করোনায় এ বছর প্রদীপ অন্য রাজ্যে বেশি না গেলেও, ধীরে ধীরে এই প্রদীপের চাহিদা বাড়বে বলেই আত্মবিশ্বাসী তিনি ৷ আলোর উৎসবে তাই আলোয় ফিরতে এখন দম ফেলার সময় নেই দুলালীর ৷

আরও পড়ুন : আঁধারে আলোর প্রদীপ গড়ার কারিগররা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.