বংশিহারি (দক্ষিণ দিনাজপুর), 27 মে : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারি ব্লকের গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ফান্ড থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স কেনা হয়েছিল 2017 সালে । 5 লক্ষ টাকা খরচ করে কেনা ওই অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার না করার অভিযোগ উঠেছে ৷ ফলে গ্যারাজে পড়ে থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট হচ্ছে । অভিযোগ, গত চার বছর ধরে বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত অ্যাম্বুলেন্সটি রাস্তায় নামানোর কোনও উদ্যোগ নেয়নি ৷ বারবার নানা অজুহাত দেখিয়ে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে । করোনা পরিস্থিতিতে গ্রামেগঞ্জে অ্যাম্বুলেন্সের অভাব দেখা দিয়েছে ৷ স্বাস্থ্য দফতরও গ্রাম থেকে করোনা আক্রান্তদের হাসপাতলে আনতে হিমশিম খাচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতের ঘরে সরকারি সম্পত্তি পড়ে নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।
2017 সালে বংশীহারি ব্লকের গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিআইএমের দখলে এসেছিল ৷ ওই বছরের 6 জুলাই এই অ্যাম্বুলেন্স কেনা হয় । সেই সময় হরিরামপুর বিধানসভার তৎকালীন বিধায়ক রফিকুল ইসলাম এই অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্বোধন করেছিলেন । তার কয়েকদিন পরেই আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পঞ্চায়েতের প্রধান সহ 5 সিপিআইএম সদস্য দলবদল করে তৃণমূলে যোগদান করেন ৷ সেই সঙ্গেই পঞ্চায়েতের দখল নেয় তৃণমূল ৷ তারপর থেকেই সেই অ্যাম্বুলেন্সটি আজ অবধি সাধারণ মানুষের কোনও কাজে লাগেনি ৷ বরং সেটি পঞ্চায়েতের গ্যারেজে তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ ।
বর্তমানে করোনার সময় বহু মানুষ অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে হাসপাতালে যেতে পারছেন না ৷ যদি এই অ্যাম্বুলেন্সটি চালু থাকত তাহলে সাধারণ মানুষের কাজে লাগত । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে আধিকারিকদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি । 2020 সালে সিপিআইএমের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা সহ আরও অন্যান্য দাবি নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে ডেপুটেশন দেওয়া হয় ।
লকডাউনের কারণে এখন কেউ তেমনভাবে অফিসে আসছেন না ৷ ফলে মানুষের চরম বিপদের দিনেও সরকারি টাকায় কেনা এই অ্যাম্বুলেন্স ঘরে পড়েই নষ্ট হচ্ছে । এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ সরকার বলেন, ‘‘আমাদের এই গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে 2017 সালে একটি অ্যাম্বুলেন্স কেনা হয়েছিল ৷ কিন্তু, তা এখনও পর্যন্ত সেটিকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি ৷ পঞ্চায়েতের গ্যারাজে তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৷ আমাদের গ্রামের লোকজনের অনেক অসুবিধা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স না থাকার জন্য । আমরা চাই গ্রাম পঞ্চায়েত তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করুক ৷’’
আরও পড়ুন :করোনা আক্রান্তের দেহ পড়ে রইল হাসপাতালের গেটে, পালালেন অ্যাম্বুলেন্স চালক
সিপিআইএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য অরুণকুমার দাস জানান, প্রায় ৪ বছর আগে সে সময়কার সিপিআইএম পরিচালিত গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষজন নিজেরা চাঁদা তুলে 5 লাখ টাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স কিনে, তা গ্রাম পঞ্চায়েতকে দান করেন । বিগত 2017 সালের 6 জুলাই প্রচুর লোকের উপস্থিতিতে বেশ ঘটা করে অ্যাম্বুলেন্সটির উদ্বোধন হয় । উদ্বোধনের পর থেকেই অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে রয়েছে ৷ বংশীহারি ব্লকের বিডিও সুদেষ্ণা পাল জানান, তিনি বিষয়টি আরটিওকে জানাবেন ৷ যাতে খুব তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা যায় ।