কুমারগঞ্জ, 8 জানুয়ারি: ভালো পাত্র পেলে মেয়ের বিয়ে দেবেন ভেবেছিলেন বাবা-মা । মঙ্গলবার মেয়েকে দেখতে আসার কথা ছিল পাত্রপক্ষের ৷ বিষয়টি 'প্রেমিক' মাহবুর রহমানকে জানিয়েছিল সেই কিশোরী ৷ তারপর মাহবুরের কথায় বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে ৷ রবিবার ফুলবাড়িতে চাদর কিনতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয় ৷ সঙ্গে নিয়েছিল প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি ৷ ইচ্ছে ছিল মাহবুরকে বিয়ে সংসার পাতবে ৷ কল্পনাও করতে পারেনি যার কথায় ভরসা করে ঘর ছাড়ছে সে কতটা পাশবিক । সোমবার সকালে কুমারগঞ্জ ব্লকের সাফারনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলঘর এলাকা থেকে উদ্ধার হয় সেই কিশোরীর অগ্নিদগ্ধ দেহ ৷ ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, গণধর্ষণ করার পর গলার নলি কেটে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল কিশোরীর দেহ । পুলিশের দাবি অপরাধে মূল ভূমিকা ছিল মাহবুরের ।
পুলিশ তদন্তে নেমে সোমবার বিকেলেই দু'জন ও পরে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে । ধৃতরা হল মাহবুর রহমান, পঙ্কজ বর্মণ ও আরও এক ব্যক্তি যে কিশোরীর দূর সম্পর্কের আত্মীয় ৷ গোয়ায় শ্রমিকের কাজ করত কুমারগঞ্জের এই তিন যুবক । কিছু দিন আগে তারা বাড়ি ফেরে । কিশোরীর সঙ্গে মাহবুরের সম্পর্ক ছিল । রবিবার তাঁকে ফুলবাড়ি আসতে বলেছিল মাহবুর ।
মাহবুরের কথা মতো কিশোরী রবিবার ফুলবাড়ি যায় । সেখান থেকে মাহবুর বাইকে চাপিয়ে তাকে বেলঘর নিয়ে যায় ৷ অন্য একটি বাইকে ছিল অপর দুই অভিযুক্ত । অভিযুক্তরা যেহেতু সকলেই কিশোরীর পূর্ব পরিচিত তাই তার কোনও সন্দেহ হয়নি । সারাদিন ঘোরার পর রাতে মদ্যপান করে মাহবুর ও তার সঙ্গীরা । তারপরে মাহবুর ও পঙ্কজ প্রথমে ধর্ষণ করে কিশোরীকে । প্রবল ঠান্ডা ও নির্যাতনের জেরে অচৈতন্য হয়ে পড়ে ওই কিশোরী । অজ্ঞান অবস্থায় তখন তাকে ধর্ষণ করে তার সেই দূর সম্পর্কের আত্মীয় । এরপর চাকু দিয়ে কিশোরীর নলি কেটে তাকে খুন করে মাহবুর । দেহ যাতে শনাক্ত না করা যায় সেজন্য পেট্রোল ঢেলে কিশোরীর দেহ আগুনে পুড়িয়ে দেয় । ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য পেয়েছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ ।
এই সংক্রান্ত আরও পড়ুন : কুমারগঞ্জে কিশোরী খুনের ঘটনায় আটক 2, তৃতীয়জনের খোঁজে পুলিশ
মঙ্গলবার ধৃতদের বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে 10 দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন বিচারক । পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, "এখনও তদন্ত চলছে । অভিযুক্ত তিনজনকেই আরও জেরা করা হবে ।"