নরেন্দ্রপুর, 27 জুলাই: সদ্যোজাতের দাম দু’লক্ষ ! দক্ষিণ 24 পরগনার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার একটি ঘটনায় এমনই অভিযোগ উঠেছে ৷ ওই ঘটনায় সদ্যোজাত সন্তানকে দু’লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে ৷ পুলিশ অভিযুক্ত মা-সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ৷ ধৃতদের মধ্যে সদ্যোজাতর ক্রেতা রয়েছেন ৷ আর এক দম্পতি রয়েছেন, যাঁরা ওই সদ্যোজাতকে বিক্রিতে মধ্যস্থতা করেছেন ৷ অভিযুক্তরা আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করলেও সদ্যোজাতের বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ৷
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যে কেন সদ্যোজাত সন্তানকে বিক্রি করতে চাইলেন মা ? প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই মহিলার স্বামী অনেক আগেই মারা গিয়েছেন ৷ তার পর তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন ৷ তার জেরেই হয়ে পড়েন সন্তানসম্ভবা ৷ বিধবা মহিলা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় এলাকায় কানাঘুষো শুরু হয় ৷ তার পরই ওই মহিলা অনাগত সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ৷
পুলিশের দাবি, তখনই বিষয়টি জানতে পারেন তাপস মণ্ডল ও শান্তি মণ্ডল নামে এক দম্পতি ৷ শান্তি আয়ার কাজ করেন ৷ সেই সূত্রে তাঁর অনেকের সঙ্গে পরিচয় রয়েছে ৷ সেই রকমই একজন পঞ্চসায়র এলাকার বাসিন্দা ঝুমা মাঝি ৷ তিনি নিঃসন্তান ৷ তাই শান্তির মাধ্যমে তিনি যোগাযোগ করেন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার সঙ্গে ৷ ঠিক হয় দু’লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিনি ওই মহিলার সন্তানকে নেবেন ৷ সেই মতো জমি বিক্রি করেন তিনি ৷ তার পর সন্তান জন্মের 11 দিন পর তাকে বাড়ি নিয়ে যান ৷
এই বিষয়টিও জানাজানি হয় ওই মহিলার যেখানে বাড়ি, সেই এলাকার৷ মহিলারই এক প্রতিবেশী খবর দেন পুলিশে ৷ শুরু হয় তদন্ত৷ ঘটনার জড়িত চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য ৷ পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় ওই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ৷ চারজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ তদন্তকারীদের তরফে জানা গিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ৷ অভিযুক্তরা কতটা সত্যি কথা বলছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ এর পিছনে কোনও শিশুপাচার চক্র আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: চার মেয়ের বাবার কাছে 10 হাজার টাকায় শিশু বিক্রি করল চোর ! গ্রেফতার চোর ও বাবা
যদিও অভিযুক্তরা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ ওই মহিলার দাবি, তিনি সন্তানকে বিক্রি করেননি ৷ শুধু মানুষ করার জন্য সন্তানকে ঝুমা মাঝির কাছে দিয়েছিলেন ৷ ঝুমা মাঝিও সদ্যোজাতকে কেনার কথা অস্বীকার করেছেন ৷ তাঁর দাবি, বাচ্চাটিকে তিনি মানুষ করার জন্য নিয়েছিলেন ৷ মেয়েটির ঋণ সংক্রান্ত আরও সমস্যা রয়েছে ৷ সেই কারণে মেয়েটিকে দু’লক্ষ টাকা তিনি দিয়েছেন ৷ অন্য়দিকে শান্তি মণ্ডল ও তাপস মণ্ডলও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ তাঁদের দাবি, ঝুমা নিঃসন্তান হওয়ায় তাঁরা মধ্যস্থতা করেছিলেন ৷ এর জন্য তাঁদের কোনও আর্থিক লাভ হয়নি ৷