গঙ্গাসাগর, 6 জানুয়ারি : 8 জানুয়ারি দেশজুড়ে CAA ও NRC-র প্রতিবাদে ধর্মঘট ডেকেছে বামপন্থী সংগঠনগুলি ৷ রাজ্যে সেই বনধকে সমর্থন করেছে কংগ্রেসও ৷ কিন্তু, সেই বনধকে সমর্থন করেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি স্পষ্ট করে দেন, এরাজ্যে বনধ করতে দেবেন না ৷ 11 জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা ৷ সেই মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ মুখ্যমন্ত্রী আসেন কপিলমুনির আশ্রমে ৷ সেখানে বনধ নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "CAA, NRC, NPR-এর বিরোধিতা চলছে, চলবে ৷ কিন্তু তার জন্য রাজ্যে কোনও বনধ হবে না ৷ ধর্মঘট আমরা সমর্থন করি না ৷ শুধু আজ নয় ৷ যখন থেকে আমরা ক্ষমতায় এসেছি তখন থেকেই ৷ "
NRC ও CAA-র বিরোধিতায় রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ করছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কলকাতাসহ একাধিক জায়গায় মিছিলে পা মিলিয়েছেন ৷ জানিয়েছেন, রাজ্যে CAA লাগু করতে দেবেন না ৷ বামপন্থী দলগুলিও CAA-র বিরোধিতা করেছে ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতায় বুধবার দেশজুড়ে বনধ ডেকেছে তারা ৷ কিন্তু, সেই বনধকে সমর্থন করেন না মুখ্যমন্ত্রী ৷ আজ তিনি বলেন, "ইশুটার প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে ৷ এই ইশুতে প্রতিদিন আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছি ৷ আন্দোলন চলবে ৷ আমরা CAA, NPR, NRC-র বিরুদ্ধে ৷ আমরা নাগরিকের পক্ষে, মানুষের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে ৷ যা হচ্ছে, অন্যায় হচ্ছে ৷ কিন্তু এরজন্য আমি একটা বনধ করতে যাব কেন ? এমনিতেই ইকোনমিক ডিজ়াস্টার চলছে ৷ বেকারত্ব বেড়ে গেছে ৷ আবার যদি একটা বনধ করি আবার হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট হবে ৷ তাতে তো আমার দেশের ক্ষতি ৷ আমি চাই না সাধারণ মানুষের ক্ষতি হোক ৷ বনধ তো সস্তার রাজনীতি ৷ গণতান্ত্রিক কায়দায় আন্দোলন চলুক এটা আমরা সবাই চাই ৷ সুতরাং বাংলায় কোনও বনধ হচ্ছে না ৷ "
JNU প্রসঙ্গে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ফ্যাসিস্ট স্ট্রাইক হয়েছে ৷ বর্বরতা চূড়ান্ত ৷ ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে অধ্যাপকদের উপরও আক্রমণ হয়েছে ৷ গতকালই ধিক্কার জানিয়েছি ৷ আজ অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটা প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছি ৷ কিন্তু তাঁদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷ আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে রয়েছি ৷" তিনি আরও বলেন, "একটা দল ক্ষমতায় আসার পর যদি মারধর শুরু করে , সবার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে তবে কীভাবে একটা দেশ চলবে ৷ এটা দেশের জন্য খুব খারাপ বার্তা ৷ "
গঙ্গাসাগর মেলা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমি গঙ্গাসাগরে নিয়মিত আসি ৷ এখানকার মহারাজদের সঙ্গেও কথা হয় ৷ আগে গঙ্গাসাগর মেলা থেকে কর আদায় করা হত ৷ এখন সেটা আমাদের সরকারের তরফে তুলে নেওয়া হয়েছে ৷ গঙ্গাসাগরে এখনও পর্যন্ত যা উন্নয়ন হয়েছে সবটাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার করেছে ৷ 11 জানুয়ারি থেকে 17 জানুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে যে সকল তীর্থ যাত্রীরা আসবেন সবার জন্য 5 লাখ করে বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ মেলা পরিচালনা করতে প্রশাসন আশ্রমের সঙ্গে এক জোট হয়ে কাজ করবে ৷ "