জয়নগর, 3 জানুয়ারি: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ ৷ তার মধ্যে প্রাচীনতম হল নবান্ন উৎসব । আজও বাংলায় বেঁচে এই উৎসব ৷ বাঙালির ঘরে ঘরে পালিত হয় নবান্ন উৎসব (Nabanna Utsav) ৷ আগেকার দিনে জমিতে এক ফসলি ধান চাষ হত । তবে যতদিন যাচ্ছে তত বিভিন্ন ধরনের ধানের বৈচিত্র্য বেড়েছে । কিন্তু আজও গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে চলে আসছে নবান্ন উৎসব ৷ এই উৎসবে মেতে ওঠেন সকলে ৷ সারা বছর জমিতে ফসল ফলান কৃষকরা ৷ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অন্নের অভাব হতে দেন না । গ্রাম বাংলা থেকে চাল পৌঁছে যায় প্রত্যেকের ঘরে ঘরে ৷ হেমন্তকালে ধান কেটে ঘরে তোলেন চাষিরা ৷ সেই নতুন ধানের চাল থেকে মুড়ি-খই, পিঠে-পুলি তৈরি করে খাওয়া হয় ৷ তাকেই বলে নবান্ন উৎসব ৷
এখনও সেই বাংলার নবান্ন উৎসবকে টিকিয়ে রেখেছে চাষিরা । শহর নয়, গ্রাম বাংলার জীবনরূপ হয়ে বেঁচে রয়েছে এই উৎসব। এই নতুন ধান দিয়ে তৈরি হয় চাল-মুড়ি-খই ৷ এছাড়াও চাল দিয়ে পৌষ পার্বণের পিঠে-পুলি পায়েস এবং নানা রকমের আরও অনেক খাবার বানানো হয় । গ্রাম বাংলার গৃহস্থ ঘরের মেয়েরা আগে অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে ঢেঁকিতে ধান ভেঙে চাল তৈরি করত । তবে এখন সময় বদলেছে ৷ এসেছে মেশিন, তাতেই পেশাই করে হয় ধান থেকে চাল (Nabanna Utsav still celebrated in Bengal) ৷ ঋতু অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের ধান চাষ হয় জমিতে সারা বছর । সেই ধান থেকে পাওয়া চাল দিয়ে ঘরে ঘরে ভাতের সঙ্গে হাঁস মুরগি, ডাল, দুধ, ডিম থেকে নলেন গুড় দিয়ে খাওয়া হয় ৷ এগুলি হল নবান্নের চির পরিচিত গ্রামীণ খাবার ৷ আজও বাংলায় সেই রীতিতে চলে আসছে ।
আরও পড়ুন: বাংলার থেকে তিনগুণ বেশি টাকা রোজগার করেন পঞ্জাবের কৃষকরা, প্রকাশ্যে নাবার্ডের রিপোর্ট
নবান্ন আসলে খিদে জয় করার উৎসব ৷ অর্থাৎ ধান-চালের অভাব, খাদ্যের অভাব, গরম ভাতের বাস্তবতা, দুর্ভিক্ষ, অকাল যুদ্ধ, মন্বন্তর ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ-এর বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়াই করার কথা ৷ গ্রাম্য চাষিরা অনেক লড়াই আর স্বজন হারিয়ে গ্রামে ফিরে এসে নতুন জীবনকে অঙ্গীকার করে এই নবান্ন উৎসবে মেতে উঠেছিল । সেই রীতি মেনে আজও গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে বেঁচে রয়েছে নবান্ন উৎসব।
আরও পড়ুন: নকল বীজ, কয়েক হাজার বিঘা জমিতে মটরশুঁটি চাষ করে বিপাকে 500 চাষি