ডায়মন্ড হারবার, 29 সেপ্টেম্বর : ঘূর্ণিঝড় গুলাবের প্রভাব এরাজ্যে না পড়লেও স্বস্তি নেই বাংলার । ঘূর্ণবাতের জেরে সোমবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে । জেলার উপকূল তীরবর্তী এলাকায় অনেক জায়গায় শুরু হয়েছে ঝোড়ো হওয়ার দাপট । ইতিমধ্যেই জেলার গ্রাম থেকে শহরতলি বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে । টানা বৃষ্টির জেরে সুন্দবনে বহু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে । রায়দিঘি বিধানসভার মথুরাপুর-1 ব্লকে আবাদ ভগবানপুর অঞ্চলের হরিণডাঙাতে মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে, তবে প্রাণহানি হয়নি ।
অন্যদিকে সাগর ও পাথরপ্রতিমায় টানা বৃষ্টিতে ভেঙেছে বহু মাটির বাড়ি ও বিদ্যুতের খুঁটি । জেলা প্রশাসনের পক্ষ থকে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে । ডায়মন্ড হারবার পৌরসভার এলাকা-সহ বারুইপুর, ক্যানিং, গোসাবা, সোনারপুর, ভাঙড়, কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানার বেশকিছু এলাকা জলমগ্ন । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জল সরানোর জন্য কুইক রেসপন্স দল বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে । স্থানীয় বিডিও ও প্রশাসনের আধিকারিকরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন । খোলা রাখা হয়েছে ফ্লাড সেন্টারগুলি । ইতিমধ্যে বহু মানুষকে নিয়ে আসা হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে । আজ ডায়মন্ড হারবারের প্রশাসন ভবনে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক । দক্ষিণ 24 পরগনা জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, "ইতিমধ্যে বহু মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে । সব রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত জেলা প্রশাসন ।"
এদিন সকালে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও জল জমতে শুরু করে জেলার বিভিন্ন রাস্তায় । ব্যস্ততম রাস্তাগুলি জলের তলায় যাওয়ায় যান চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে । দুর্বল নিকাশি ব্যবস্থার জেরে ডায়মন্ড হারবার, সোনারপুর, বারুইপুর, ক্যানিং, সাগর কাকদ্বীপ বিভিন্ন এলাকা জলবন্দি । এই বৃষ্টির জেরে সুন্দরবন এবং সংলগ্ন গ্রামগুলিতে চাষের জমিও জলমগ্ন হয়েছে । সুন্দরবনের সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ এবং বিভিন্ন দ্বীপে জল জমে থাকলেও বাঁধ ভাঙার কোনও খবর পাওয়া যায়নি । তবে বারুইপুর পুরসভার পঞ্চাননতলা থেকে অক্ষয় সংঘ পর্যন্ত বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং মাস্টারপাড়া, মাটারাট-বাদামতলা মোড়ও জলে ডুবে গিয়েছে । রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার বৈকুণ্ঠপুর, নরেন্দ্রপুর, সুভাষগ্রাম স্টেশন, সুভাষ পার্ক, নন্দন কলোনি, মিশনপল্লি এলাকাতেও হাঁটু সমান জল ।
ডায়মন্ড হারবার পৌরসভার 6, 7, 9, 10, 11, 12 ও 13 নম্বর ওয়ার্ড-সহ বেশকিছু ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়েছে । ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে জল জমে থাকায় ভোগান্তির মুখে পড়েছেন রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়রা । ঘূর্ণাবর্ত এবং মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় হওয়ায় আগামী 24 ঘণ্টা বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর । অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে উপকূল এবং দ্বীপাঞ্চলের বহু নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে । প্রশাসনের পক্ষ থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সরানোর কাজ চালাচ্ছে । পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ কয়েক ঘণ্টা লাগবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ।
আরও পড়ুন : Mousuni Island Tourism: নাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মৌসুনি পর্যটন, পুজোর মুখে মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের