জয়নগর, 5 নভেম্বর: সময় বদলেছে, সঙ্গে বদলেছে মানুষের পছন্দ থেকে চাহিদা ৷ একসময় চিরাচরিত প্রদীপের চাহিদা ছিল খুব বেশি ৷ এখন সেসব অতীত ৷ চিরাচরিত প্রদীপের চাহিদা কম থাকায় তাই ডিজাইনার প্রদীপ বানানোর দিকেই ঝুঁকছেন মৃৎশিল্পীরা ৷ কারুকার্য করা প্রদীপের উপরেই বেশি ভরসা করছেন তাঁরা ।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো শেষ হয়েছে । এরপর দীপাবলি বা কালীপুজোতে মাতবে গোটা দেশ । আর দীপাবলি মানেই আলোর উৎসব ৷ গৃহস্থ বাড়িতে আলো জ্বালানোর জন্য ব্যবহার হবে মাটির প্রদীপ ৷ আবার অনেকেই গৃহসজ্জার ব্যবহার করবে টেরাকোটার আদলে গড়া মাটির প্রদীপও । আর তাই দীপাবলির আগে বিভিন্ন ডিজাইনের মাটির প্রদীপ তৈরিতে ব্যস্ত দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বকুলতলা থানা এলাকার গৌরহাট কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা । এখানকার মৃৎশিল্পীরা মূলত টেরাকোটার আদলে নানা ধরনের প্রদীপ তৈরি করেন ৷ আর সেই কাজেই দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই মৃৎশিল্পীরা ।
আগের তুলনায় বাজারে অনেকটাই কমেছে চিনা টুনি লাইটের দাপট । কয়েক বছর আগে লাদাখ সীমান্তে চিনা হানায় ভারতীয় সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর ঘটনায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছিল । এর জেরে চিনা পণ্য বয়কট । আর যার জেরে ভারতের বাজারে অনেকটাই কমেছে চিনা টুনির বিকিকিনি । এতদিন দীপাবলির উৎসবে বাড়ির আলোকসজ্জার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চিনা টুনির ব্যবহার দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছিল ৷ পাল্লা দিয়েই ততই মাটির প্রতি ব্যবহার কমছিল ৷ চাহিদা কমায় মাটির প্রদীপ তৈরির পেশায় যুক্ত মৃৎশিল্পীদের কর্মসংস্থানের উপর তার প্রভাব পড়েছিল ৷ আর চিনা টুনি দাপট কমতেই তাই মুখে হাসি চওড়া হয়েছে মৃৎশিল্পী মহলের ।
আরও পড়ুন: মাটি ছেড়ে হুগলিতে 'সুপারহিট' গোবরের প্রদীপ, তৈরি করছেন গ্রামের মহিলারা
জয়নগর কুমোরপাড়া গ্রামের শিল্পীরা সাবেকি প্রদীপ বানানোর পাশাপাশি এবারেও নিত্যনতুন ডিজাইনের টেরাকোটা আদলের প্রদীপ তৈরি করছেন ৷ আর দীপাবলি উৎসবের দিন এগিয়ে আসতে মাটির প্রদীপ করার কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে । মৃৎশিল্পী সুশীল পাল বলেন, "বিভিন্ন নকশার প্রদীপ তৈরি করি ৷ দুর্গাপুজো থেকে প্রদীপের চাহিদা থাকে ৷ তবে কালীপুজোর আগে সেই চাহিদা আরও বাড়ে ৷ 50 বছর ধরে প্রদীপ তৈরি করছি আমি ৷ বর্তমানে মাটির দাম বেড়েছে, সঙ্গে প্রদীপের দামও বাড়িয়েছি আমরা ৷" মনোরঞ্জন পাল বলেন, "মাটির প্রদীপের চাহিদা আছে ৷ তবে খরচা অনুযায়ী দাম পাচ্ছি না জিনিসের ৷ সরকারের তরফে সাহায্য পেলে ভালো হয় ৷"