নরেন্দ্রপুর, 30 জুলাই : শেষ দেখা গিয়েছিল রবিবার ৷ তারপর আজ ট্রলিবন্দী অবস্থায় নরেন্দ্রপুরের তেউড়িয়ার বাগানবাড়ি থেকে উদ্ধার হয় প্রদীপ বিশ্বাস ও আল্পনা বিশ্বাসের মৃতদেহ ৷ 22 বছর ধরেই ওই বাগানবাড়িতে কেয়ার টেকারের কাজ করতেন ওই দম্পতি ৷ কিন্তু কেন এই খুন তা নিয়ে এখন ধোঁয়াশায় পুলিশ ৷ তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, এই খুন একজনের পক্ষে সম্ভব নয় ৷ একাধিকজন এই দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত ৷
দীপঙ্কর দেসহ মোট সাতজন নরেন্দ্রপুরের তিউড়িয়ার ওই বাগানবাড়িটি কেনেন ৷ সেখানে 1997 সাল থেকে কেয়ার টেকারের কাজ করতেন প্রদীপ ও আল্পনা ৷ আগে ট্যাংরায় থাকতেন ওই দম্পতি ৷ মাসে এক-দু'বার প্রদীপ বিশ্বাসের ভাই জয় বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী এসে ওই দম্পতির সঙ্গে বাগানবাড়িতে দেখা করে যেতেন ৷ রবিবার স্থানীয় কয়েকজন প্রদীপ ও আল্পনাকে শেষবারের মতো দেখেন ৷ তারপর থেকে আর খোঁজ নেই ওই দম্পতির ৷ ফোনে দাদাকে না পেয়ে আজ বাগানবাড়িতে আসেন প্রদীপের ভাই জয় ৷ বাড়ির মেইন গেট ভিতর থেকে বন্ধ ছিল ৷ সন্দেহ হয় জয়ের ৷ তিনি বাগানবাড়ির পিছনের দিকে যান ৷ দেখান, দরজা ভাঙা ৷ বারান্দায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ ৷ পান দুর্গন্ধও ৷ পুলিশে খবর দেন জয় ৷
নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থানে আসে ৷ বাগগানবাড়ির ভিতরে পুলিশকর্মীরা দেখেন, বিছানায় রক্তের দাগ ৷ পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জামাকাপড় ৷ ঘরের শৌচালয়ের সামনে দুটি ট্রলি ব্যাগ দেখা যায় ৷ ট্রলি খুলতেই সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ে প্রদীপ ও আল্পনার মৃতদেহ ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসেন SP বারুইপুর রাশিদ মুনির খান ৷ তিনি জানান, দেহদুটি পচতে শুরু করে দিয়েছে ৷ সম্ভবত, দু-তিনদিন আগে মৃত্যু হয়েছে দম্পতির ৷
পুলিশ সুপার রাশিদ মুনির খান বলেন, "একাধিক জায়গায় রক্তের দাগ পাওয়া গেছে ৷ ফরেন্সিককে খবর দেওয়া হয়েছে ৷ তারা তদন্তের স্বার্থে সেই রক্তের নমুনাগুলি নিয়ে পরীক্ষা করবে ৷ বাড়ি থেকে কিছু লুট হয়েছে বলে মনে হয় না ৷ কারণ আলমারিতে 2500 টাকা রাখা ছিল ৷ সেটা এখনও রয়েছে ৷ তবে, এই বাড়ির এক অংশীদার দীপঙ্কর দে জানিয়েছেন, একটি টি.ভি সেট ছিল ৷ সেটা নেই ৷ তাই ঠিক কী কারণে এই খুন করা হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না ৷ শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ৷ যদি লুটের বিষয় হত তাহলে ওই দম্পতিকে মেরে ট্রলিতে ভরে রেখে যেত না ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই স্পষ্টভাবে কিছু বলা যাবে ৷"