ETV Bharat / state

আশ্রমে দুস্থদের জীবন গড়ছেন "অমল স্যার" - Teachers Day

বাসন্তীর রাখালচন্দ্র সেবাশ্রমে দুস্থদের বড় করে তুলছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অমল পণ্ডিত । দীর্ঘ 30 বছর ধরে একাজ করে চলছেন তিনি ।

রাখালচন্দ্র সেবাশ্রম
author img

By

Published : Sep 6, 2019, 11:41 AM IST

Updated : Sep 6, 2019, 3:10 PM IST

বাসন্তী, 6 সেপ্টেম্বর : ওদের কারও বাবা নেই । কারও বা নেই মা । কাউকে খুব ছোটো অবস্থাতেই রাস্তার ধারে ফেলে রেখে গেছিল বাড়ির লোকেরা । বর্তমানে ওদের ঠিকানা বাসন্তীর রাখালচন্দ্র সেবাশ্রম । সেখানে ওদের বাবা-মা বা শিক্ষাগুরু একজনই, তিনি অমল পণ্ডিত । দীর্ঘ 30 বছর ধরে দুস্থ শিশুদের রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার কাজ করে চলেছেন এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ।

মহেশপুর যশোদা বিদ্যাপীঠের মাস্টারমশাই ছিলেন অমলবাবু । শুধুমাত্র স্কুলে ছাত্র মানুষ করায় সন্তুষ্ট হননি । চেয়েছিলেন শুধু শিক্ষা নয়, ওদের জীবন গড়ে দেব । সেই শুরু । 1990 সালে তৈরি করেন সেবাশ্রম । বাবা রাখালচন্দ্র পণ্ডিতের নামে নাম রাখেন রাখালচন্দ্র সেবাশ্রম । সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেমেয়েদের কাছে টেনে নেন । আশ্রমেই শুরু হয় জীবন গড়ার কাজ । পড়াশোনা, ছবি আঁকা, গানবাজনা এমন কী খেলাধুলোতেও যাতে সমান পারদর্শী হয় ছাত্র-ছাত্রীরা, সেদিকে কড়া নজর অমল স্যারের ।

ashram
নিয়ম মেনে রোজ সকালে প্রার্থনা

তবে, সাফল্যের সঙ্গে থাবা বসায় প্রতিবন্ধকতাও । 2015 সালে স্কুল থেকে অবসর নেওয়ার পর শুরু হয় আর্থিক টানাটানি । একার পেনশনে 30 জন ছেলে-মেয়ে মানুষ করা দুষ্কর হয়ে ওঠে । সাহায্যে যে কেউ এগিয়ে আসছে না তা নয় । গ্রামবাসীরা কেউ দিচ্ছেন সবজি, কেউ বা চাল-ডাল-আনাজ দিয়ে সাহায্য করেন আবাসিকদের । তবে তা আর প্রয়োজনের তুলনায় কতটুকু ।

সেবাশ্রমে দুস্থদের বড় করে তুলছেন অমল পণ্ডিত

আশ্রমের অনেকেই আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত । কেউ অধ্যাপক, কেউ ডাক্তার, কেউ বা ইঞ্জিনিয়র । অমলবাবু বলেন, "একসময় ওদের কত গালমন্দ করেছি । অথচ আজ ওদের সফল হতে দেখলে চোখে জল আসে । নির্জনে বসে কাঁদি । তবে সবাই যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র হয়েছে তা নয় ৷ কিন্তু ভালো মানুষ তো করতে পেরেছি ।"

ashram
একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া

আর্থিক সমস্যার চক্রব্যুহ ক্রমশই ঘিরে ধরছে তাঁর স্বপ্নকে । তাঁর চিন্তুা যতদিন তিনি আছেন ততদিন, তারপর ? তাঁর কথায়, "আমার যা কিছু আছে, সবই যে দিতে চাই । কিন্তু, নেওয়ার মতো মানুষও তো থাকতে হবে ।"

বাসন্তী, 6 সেপ্টেম্বর : ওদের কারও বাবা নেই । কারও বা নেই মা । কাউকে খুব ছোটো অবস্থাতেই রাস্তার ধারে ফেলে রেখে গেছিল বাড়ির লোকেরা । বর্তমানে ওদের ঠিকানা বাসন্তীর রাখালচন্দ্র সেবাশ্রম । সেখানে ওদের বাবা-মা বা শিক্ষাগুরু একজনই, তিনি অমল পণ্ডিত । দীর্ঘ 30 বছর ধরে দুস্থ শিশুদের রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার কাজ করে চলেছেন এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ।

মহেশপুর যশোদা বিদ্যাপীঠের মাস্টারমশাই ছিলেন অমলবাবু । শুধুমাত্র স্কুলে ছাত্র মানুষ করায় সন্তুষ্ট হননি । চেয়েছিলেন শুধু শিক্ষা নয়, ওদের জীবন গড়ে দেব । সেই শুরু । 1990 সালে তৈরি করেন সেবাশ্রম । বাবা রাখালচন্দ্র পণ্ডিতের নামে নাম রাখেন রাখালচন্দ্র সেবাশ্রম । সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেমেয়েদের কাছে টেনে নেন । আশ্রমেই শুরু হয় জীবন গড়ার কাজ । পড়াশোনা, ছবি আঁকা, গানবাজনা এমন কী খেলাধুলোতেও যাতে সমান পারদর্শী হয় ছাত্র-ছাত্রীরা, সেদিকে কড়া নজর অমল স্যারের ।

ashram
নিয়ম মেনে রোজ সকালে প্রার্থনা

তবে, সাফল্যের সঙ্গে থাবা বসায় প্রতিবন্ধকতাও । 2015 সালে স্কুল থেকে অবসর নেওয়ার পর শুরু হয় আর্থিক টানাটানি । একার পেনশনে 30 জন ছেলে-মেয়ে মানুষ করা দুষ্কর হয়ে ওঠে । সাহায্যে যে কেউ এগিয়ে আসছে না তা নয় । গ্রামবাসীরা কেউ দিচ্ছেন সবজি, কেউ বা চাল-ডাল-আনাজ দিয়ে সাহায্য করেন আবাসিকদের । তবে তা আর প্রয়োজনের তুলনায় কতটুকু ।

সেবাশ্রমে দুস্থদের বড় করে তুলছেন অমল পণ্ডিত

আশ্রমের অনেকেই আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত । কেউ অধ্যাপক, কেউ ডাক্তার, কেউ বা ইঞ্জিনিয়র । অমলবাবু বলেন, "একসময় ওদের কত গালমন্দ করেছি । অথচ আজ ওদের সফল হতে দেখলে চোখে জল আসে । নির্জনে বসে কাঁদি । তবে সবাই যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র হয়েছে তা নয় ৷ কিন্তু ভালো মানুষ তো করতে পেরেছি ।"

ashram
একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া

আর্থিক সমস্যার চক্রব্যুহ ক্রমশই ঘিরে ধরছে তাঁর স্বপ্নকে । তাঁর চিন্তুা যতদিন তিনি আছেন ততদিন, তারপর ? তাঁর কথায়, "আমার যা কিছু আছে, সবই যে দিতে চাই । কিন্তু, নেওয়ার মতো মানুষও তো থাকতে হবে ।"

Intro:কারো বাবা নেই, কারো বা মা নেই, কারো আবার বাবা মা কেউই নেই। কেউ বা কোন শিশুকে ঝঞ্ঝাট ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন। বর্তমানে এমন প্রায় তিরিশজন শিশুর ঠিকানা বাসন্তী ব্লকের ভরতগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেশপুর গ্রামে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এই গ্রামে অমল পন্ডিত নামক এক অবসরপ্রাপ্ত মাষ্টারমশাইয়ের বাবার নামে তৈরি আশ্রমই তাদের ঠিকানা। এই আশ্রমেই অমল স্যার মানুষ করে চলেছেন সুন্দরবনের এইসব দুঃস্থদের।

মহেশপুর যশোদা বিদ্যাপীঠে শিক্ষকতা করতেন। বিয়ে করেননি। পাছে এইসব শিশুদের দেখভালে কোনরকম খামতি পড়ে সেই কারনে। পিতৃসম শিক্ষক ডঃ সুধীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের কাছ থেকেই পেয়েছিলেন সমাজসেবা করার রসদ। পেয়েছিলেন সমাজের দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা। তার সেই কারনেই, স্কুল শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার পর আর বেশি দেরি করেননি। প্রায় তিরিশ বছর আগে ১৯৯০ সালে বাসন্তীর এই ভরতগড় গ্রামে বাবা রাখাল চন্দ্র পন্ডিতের নামেই তৈরি করেন এই রাখালচন্দ্র সেবাশ্রম। একে একে এই সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের আদিবাসী ও দুঃস্থ পরিবার থেকে শিশুরা আসতে শুরু করে আমল স্যারের কাছে। পরম স্নেহে তাদেরকে আপন করে নিয়ে এই আশ্রমেই শিক্ষাদান শুরু করেন অমল পন্ডিত। পড়াশুনা থেকে শুরু করে ছবি আঁকা, গানবাজনা এমনকি খেলাধুলার বিষয়টি ও স্যার নিজে হাতে তদারকি করতে শুরু করেন। এই আশ্রমেই তাদের খাওয়া দাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করেন মাষ্টারমশাই।

প্রথমে দু চারজনকে নিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ছাত্র সংখ্যা। স্যারের সান্নিধ্য পেতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দুঃস্থ ছেলেরা আসতে শুরু করে এই সেবাশ্রমে। নিজের চাকরির বেতনের সবটাই এই আশ্রমের পিছনে ব্যয় করেও যেন হিমশিম খেতে শুরু করেন অমল স্যার। সেই সময় গ্রামের বেশকিছু গ্রামবাসী পাশে দাঁড়ান তার। নিজেদের বাড়ির চাষের সব্জি, চাল দিয়ে আশ্রমের আবাসিক ছাত্রদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন অনেকেই। এখনো পর্যন্ত গ্রামের বহু মানুষ এই কাজে অমল স্যারকে সাহায্য করে যাচ্ছেন। কেউ জিনিষপত্র দিয়ে তো কেউ কায়িক শ্রম দিয়ে।

এই আশ্রমে থেকে পড়াশুনা করে অনেকেই আজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত। কেউ বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করছেন তো কেউ স্কুল শিক্ষক হয়েছেন। আবার কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন, কীর্তনিয়া হয়েছেন। সেই সব ছাত্রদের অনেকেই নিজেদের সাধ্যমতো স্যারের এই সমাজসেবার কাজে পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছেন এই শিক্ষক। কারন ২০১৫ সালে স্কুলের শিক্ষকতার চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। এক ধাক্কায় বেতন অনেকখানি কমে যাওয়ায় আশ্রম চালাতে যথেষ্ট হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। তার অবর্তমানে কিভাবে এই আশ্রম চলবে তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত বছর চৌষট্টির এই মানুষটি।Body:Intro তে কপি দিলাম Conclusion:একটু দেখবেন।
Last Updated : Sep 6, 2019, 3:10 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.