দক্ষিণ 24 পরগনা, 30 মার্চ : প্রথমে অপহরণের নাটক এবং পরে মুক্তিপণ চেয়ে বাবা ও মা’কে ফোন ৷ এই কীর্তি করে সোনারপুর থানার পুলিশের ফাঁদে ধরা পড়ল এক যুবক ৷ অভিযুক্ত যুবকের নাম অভিজিৎ সাহা ৷ গত 24 মার্চ দুপুরবেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান অভিজিৎ ৷ তারপর আর রাতে বাড়ি ফেরেননি ৷ পরের দিন অর্থাৎ 25 মার্চ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তাঁর মা শুক্লা সাহার ফোনে একটি নম্বর থেকে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে ৷ মোট 1 লক্ষ 40 হাজার টাকা চাওয়া হয় সেই মুক্তিপণে ৷ আর তা না দিলে ছেলেকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় ৷ টাকা দিতে একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হবে বলেও জানানো হয় শুক্লাদেবীকে ৷
শুক্লা সাহা ছেলের অপহরণের ফোন পেয়েই সোনারপুর থানায় অভিযোগ জানান ৷ অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ তদন্তকারীদের পরামর্শে শুক্লাদেবী অপহরণকারীদের টাকা দেওয়ার কথা বলেন ৷ অপহরণকারীরা 29 মার্চ সোমবার বিকেলে টাকা নিয়ে টালিগঞ্জ মেট্রোর সামনে আসতে বলে ৷ পরিবারের সঙ্গে সাদা পোশাকে পুলিশও সেখানে হাজির ছিল ৷ সেখানেই হাতেনাতে অভিজিৎকে ধরে ফেলে সোনারপুর থানার পুলিশ ৷ এই ঘটনায় অভিজিৎকে তার এক বন্ধুও সাহায্য করেছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ ৷ তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন : কানপুরে ব্যস্ত রাস্তায় অপহরণ, দেখেও দেখল না কেউ !
কেন অভিজিৎ অপহরণের গল্প ফাঁদল? জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, লকডাউনের আগে অভিজিৎ একটি মোবাইল কোম্পানিতে কাজ করতেন ৷ কিন্তু, বর্তমানে সেই চাকরি নেই তাঁর ৷ অভিজিতের বাবা রাধেশ্যাম সাহা রেলের প্রাক্তন কর্মী ছিলেন ৷ অভিজিতের স্ত্রী ও আড়াই বছরের একটি সন্তান আছে ৷ সম্প্রতি অভিজিৎ রাজপুরের এক তরুণীর প্রেমে পড়ে ৷ প্রেমিকাকে উপহার, বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো ও খাওয়াদাওয়াতেই লক্ষাধিক টাকা বন্ধুদের কাছে দেনা করে ফেলে সে ৷ বন্ধুরা সেই টাকা চাইলে বাবার কাছ থেকে টাকা আদায়ে অপহরণের নাটক করে অভিজিৎ ৷ তবে, শেষ পর্যন্ত পুলিশের তৎপরতায় পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে যায় ৷ অভিজিৎ এই কয়েকদিন টালিগঞ্জ এলাকাতেই একটি হোটেলে ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷