কোচবিহার, ৪জুলাই : প্রায় 1 মাস ধরে নাবালিকা নিখোঁজ । মেয়ের সন্ধানে অনশনে বসেছে পরিবার । কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ এলাকার ঘটনা । গতকাল রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ সরকার মেখলিগঞ্জে এসেছিলেন । স্থানীয় থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে । মেয়েটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা হচ্ছে । আজ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফের মেখলিগঞ্জে আসবেন । তিনি মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজতরফ এলাকার বাসিন্দা তনুশ্রী বিশ্বাসের সঙ্গে ধুপগুড়ির গ্যাদন এলাকার বাসিন্দা সীতানাথ কীর্তনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল । মাঝখানে কিছুদিনের জন্য সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হলেও ফের সম্পর্কে জড়ায় তনুশ্রী ও সিতানাথ । 5 জুন (বুধবার) তনুশ্রীকে ফোন করে সীতানাথের বন্ধু তুলসি মণ্ডল । এরপরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় তনুশ্রী । চ্যাংরাবান্ধায় তনুশ্রী ও তুলসিকে একসঙ্গে দেখে তনুশ্রীর আত্মীয়রা । তারপর থেকেই ফোনে আর পাওয়া যায়নি তনুশ্রীকে ।
11 জুন (মঙ্গলবার) তনুশ্রীর প্রেমিক সীতানাথ সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মেখলিগঞ্জ থানায় অপহরণ করে পাচারের অভিযোগ দায়ের করে তনুশ্রীর পরিবার । সীতানাথ ছাড়া আরও পাঁচ অভিযুক্ত হল তুলসি মণ্ডল, প্রেমা কির্তনিয়া, প্রাণগোবিন্দ কির্তনিয়া, রামপ্রসাদ কির্তনিয়া ও পূর্ণ কির্তনিয়া । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে 5 জুন চ্যাংরাবান্ধার পর তনুশ্রীর ফোন লোকেশন ছিল ধুপগুড়ি । তারপর জলপাইগুড়ি । এরপরেই বন্ধ হয়ে যায় তনুশ্রীর মোবাইল ফোন ।
15 জুন পুলিশ সীতানাথ কীর্তনিয়াকে গ্রেপ্তার করে । 20 জুন গ্রেপ্তার করা হয় সীতানাথের বন্ধু পূর্ণ কীর্তনিয়াকে । গ্রেপ্তারের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পলাতক প্রেমা, প্রাণগোবিন্দ, তুলসি ও রামপ্রসাদ । কিন্তু কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তনুশ্রীর । তাই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে 27 জুন (বৃহস্পতিবার) মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে অনশনে বসে তনুশ্রীর পরিবার । অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তাঁরা ।
তনুশ্রীর বাবা গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, "মেয়েকে পাচার করে দিয়েছে না মেরে ফেলেছে, কিছুই তো বুঝতে পারছি না । থানায় অভিযোগ করেছিলাম । ওরা দু'জনকে ধরেছে কিন্তু বাকিদের এখনও ধরতে পারেনি । তাই অনশনে বসেছি । আমি মেয়েকে ফিরে পেতে চাই ।"
খবর পেয়ে গতরাতে ঘটনাস্থানে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ সরকার । আজ ফের তিনি মেখলিগঞ্জে আসবেন । কথা বলবেন তনুশ্রীর পরিবারের সঙ্গে ।