ETV Bharat / state

কাস্তেচরার কলোনিতে পরিযায়ীদের রক্ষক গ্রামবাসীরাই !

প্রতিবছর সুদূর লাতিন অ্যামেরিকা থেকে বাংলাদেশ-মায়ানমার, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, জাপান ও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে উড়ে আসে ব্ল্যাক হেডেড হোয়াইট আইবিস । আসে নানুরের এই পাপুড়ি গ্রামেও ।

birbhum
কাস্তেচরা
author img

By

Published : Oct 15, 2020, 9:50 PM IST

নানুর (বীরভূম ) , 15 অক্টোবর : কাস্তেচরার কলোনি । পাখিদের নামেই গ্রামের পরিচয় । খাদ্য সংগ্রহ এবং প্রজননের কারণে সুদূর লাতিন অ্যামেরিকা থেকে বীরভূমের পাপুড়ি গ্রামে উড়ে আসে এই বিশেষ প্রজাতির পাখি । পরিযায়ী হলেও এই পাখিকে স্থায়ী অতিথি বলেই ভেবে নিয়েছে গ্রামবাসী । আসলে ব্ল্যাক হেডেড হোয়াইট আইবিস নামের পাখিটিরই স্থানীয় নাম কাস্তেচরা ।

IUCN জানিয়েছে, সংখ্যায় কমে যাচ্ছে এই পাখি । তবে এই গ্রামে তারা সুরক্ষিত । নির্দিষ্ট সময়ে তারা আসে । প্রজনন সম্পন্ন করে এবং ফিরে যায় । সুদূর লাতিন অ্যামেরিকা থেকে ভারত, অনেকটা পথ পেরিয়ে আসে তারা ।

প্রতিবছর সুদূর লাতিন অ্যামেরিকা থেকে বাংলাদেশ-মায়ানমার, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, জাপান ও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে উড়ে আসে তারা । আসে নানুরের এই পাপুড়ি গ্রামেও । বীরভূমের নানুর থানার পাপুড়ি গ্রামে ।

kastechora
বীরভূমের আকাশে উড়ে বেড়ায় ওরা

তাল, তেঁতুল প্রভৃতি গাছে বাসা তৈরি করে ব্ল্যাক হেডেড হোয়াইট আইবিস বা কাস্তেচরা । পাখিটি দৈর্ঘ্যে কম বেশি 75 সেন্টিমিটার । এদের ডানা 35 সেন্টিমিটার মতো । ঠোঁটটি বেশ বড় । প্রায় সাড়ে 15 সেন্টিমিটার দীর্ঘ । কাস্তের মতো বাঁকা ঠোঁট । বলা হয়, তাই না কি এই পাখির নাম কাস্তেচরা । তবে কেন এই নামকরণ সেই নিয়ে অনেক মতামত আছে ।

গলা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো । বাকি দেহটি সাদা । মূলত খাদ্য সংগ্রহ ও প্রজননের জন্য এই পাখি পরিযান করে থাকে । প্রতিবছর জুন-জুলাই মাসে এই গ্রামে আসে পাখির দল । নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বাচ্চা সহ ফের ফিরে যায় ।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নানুরের এই পাপুড়ি গ্রামটি ভারতে আইবিসদের বৃহৎ কলোনি হিসেবে পরিচিত । সম্প্রতি এই পাখি সংখ্যায় কমে যাওয়ায় IUCN এই প্রজাতিকে বিপন্ন বা বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে । আইবিস বহু রকমের হয় । কিন্তু ব্ল্যাক হেডেড হোয়াইট আইবিস সংখ্যায় খুব কম ।

পরিযায়ীদের রক্ষক গ্রামবাসীরাই

পক্ষী গবেষক বা প্রাণীবিদ উর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে লামি দি বলেন, "ভারতবর্ষের মধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যায় নানুরের পাপুড়ি গ্রামে এই পাখি আসে । তাই এটাকে কাস্তেচরা বৃহৎ কলোনি হিসেবে ধরা হয় । সম্প্রতি IUCN এই পাখিকে রেড ডেটা লিস্টের মধ্যে রেখেছে । অর্থাৎ বিপন্নপ্রায় পাখি এটি ।"

বহু বছর ধরে এই গ্রামে আসতে থাকায় এক প্রকার জীবনচক্র গড়ে তুলেছে পাখির দল । গ্রামের মানুষের কাছে অতিপরিচিত হয়ে উঠেছে । প্রথমদিকে এই পাখি যখন আসতে শুরু করে তখন তাদের মেরে মাংস খাওয়ার একটা প্রবণতা ছিল । বর্তমানের সচেতনতা বেড়েছে । এই পাখি পাপুড়ি গ্রামে খুবই সুরক্ষিত । গ্রামবাসীরা কাউকে মারতে দেন না বা বহিরাগত মানুষকে ছবি তুলতে দেন না ।

সাধারণত জলাভূমি, ধান জমি, জল থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে এই পাখি । প্রজননের সময় প্রচুর পরিমাণে খাদ্য লাগে এদের । পর্যাপ্ত খাদ্য মেলায় স্বাচ্ছন্দ্যে এই গ্রামে বাস করে পাখির দল । গ্রামের এক একটি গাছে ঝাঁক বেঁধে বসে থাকতে দেখা যায় এদের । সে এক অপরূপ দৃশ্য ।

গ্রামবাসীদের মধ্যে নুরুল হক জানান, 1991 সাল থেকে এই পাখিকে গ্রামে আসতে দেখছি । গ্রামজুড়ে ছেয়ে থাকে । আমাদের গ্রামের কেউ ওদের বিরক্ত করে না, আর বিরক্ত করে না বলেই প্রতিবছর এই গ্রামে এসে থাকে ওরা ।

এবছরও পাপুড়িতে এসেছে পাখির দল । বাসা বেঁধেছে । উড়ে বেড়াচ্ছে বীরভূমের আকাশে । তাদের দেখে কে বলবে তারা পরিযায়ী, তারা যেন এই গ্রামেরই একজন ।

নানুর (বীরভূম ) , 15 অক্টোবর : কাস্তেচরার কলোনি । পাখিদের নামেই গ্রামের পরিচয় । খাদ্য সংগ্রহ এবং প্রজননের কারণে সুদূর লাতিন অ্যামেরিকা থেকে বীরভূমের পাপুড়ি গ্রামে উড়ে আসে এই বিশেষ প্রজাতির পাখি । পরিযায়ী হলেও এই পাখিকে স্থায়ী অতিথি বলেই ভেবে নিয়েছে গ্রামবাসী । আসলে ব্ল্যাক হেডেড হোয়াইট আইবিস নামের পাখিটিরই স্থানীয় নাম কাস্তেচরা ।

IUCN জানিয়েছে, সংখ্যায় কমে যাচ্ছে এই পাখি । তবে এই গ্রামে তারা সুরক্ষিত । নির্দিষ্ট সময়ে তারা আসে । প্রজনন সম্পন্ন করে এবং ফিরে যায় । সুদূর লাতিন অ্যামেরিকা থেকে ভারত, অনেকটা পথ পেরিয়ে আসে তারা ।

প্রতিবছর সুদূর লাতিন অ্যামেরিকা থেকে বাংলাদেশ-মায়ানমার, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, জাপান ও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে উড়ে আসে তারা । আসে নানুরের এই পাপুড়ি গ্রামেও । বীরভূমের নানুর থানার পাপুড়ি গ্রামে ।

kastechora
বীরভূমের আকাশে উড়ে বেড়ায় ওরা

তাল, তেঁতুল প্রভৃতি গাছে বাসা তৈরি করে ব্ল্যাক হেডেড হোয়াইট আইবিস বা কাস্তেচরা । পাখিটি দৈর্ঘ্যে কম বেশি 75 সেন্টিমিটার । এদের ডানা 35 সেন্টিমিটার মতো । ঠোঁটটি বেশ বড় । প্রায় সাড়ে 15 সেন্টিমিটার দীর্ঘ । কাস্তের মতো বাঁকা ঠোঁট । বলা হয়, তাই না কি এই পাখির নাম কাস্তেচরা । তবে কেন এই নামকরণ সেই নিয়ে অনেক মতামত আছে ।

গলা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো । বাকি দেহটি সাদা । মূলত খাদ্য সংগ্রহ ও প্রজননের জন্য এই পাখি পরিযান করে থাকে । প্রতিবছর জুন-জুলাই মাসে এই গ্রামে আসে পাখির দল । নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বাচ্চা সহ ফের ফিরে যায় ।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নানুরের এই পাপুড়ি গ্রামটি ভারতে আইবিসদের বৃহৎ কলোনি হিসেবে পরিচিত । সম্প্রতি এই পাখি সংখ্যায় কমে যাওয়ায় IUCN এই প্রজাতিকে বিপন্ন বা বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে । আইবিস বহু রকমের হয় । কিন্তু ব্ল্যাক হেডেড হোয়াইট আইবিস সংখ্যায় খুব কম ।

পরিযায়ীদের রক্ষক গ্রামবাসীরাই

পক্ষী গবেষক বা প্রাণীবিদ উর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে লামি দি বলেন, "ভারতবর্ষের মধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যায় নানুরের পাপুড়ি গ্রামে এই পাখি আসে । তাই এটাকে কাস্তেচরা বৃহৎ কলোনি হিসেবে ধরা হয় । সম্প্রতি IUCN এই পাখিকে রেড ডেটা লিস্টের মধ্যে রেখেছে । অর্থাৎ বিপন্নপ্রায় পাখি এটি ।"

বহু বছর ধরে এই গ্রামে আসতে থাকায় এক প্রকার জীবনচক্র গড়ে তুলেছে পাখির দল । গ্রামের মানুষের কাছে অতিপরিচিত হয়ে উঠেছে । প্রথমদিকে এই পাখি যখন আসতে শুরু করে তখন তাদের মেরে মাংস খাওয়ার একটা প্রবণতা ছিল । বর্তমানের সচেতনতা বেড়েছে । এই পাখি পাপুড়ি গ্রামে খুবই সুরক্ষিত । গ্রামবাসীরা কাউকে মারতে দেন না বা বহিরাগত মানুষকে ছবি তুলতে দেন না ।

সাধারণত জলাভূমি, ধান জমি, জল থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে এই পাখি । প্রজননের সময় প্রচুর পরিমাণে খাদ্য লাগে এদের । পর্যাপ্ত খাদ্য মেলায় স্বাচ্ছন্দ্যে এই গ্রামে বাস করে পাখির দল । গ্রামের এক একটি গাছে ঝাঁক বেঁধে বসে থাকতে দেখা যায় এদের । সে এক অপরূপ দৃশ্য ।

গ্রামবাসীদের মধ্যে নুরুল হক জানান, 1991 সাল থেকে এই পাখিকে গ্রামে আসতে দেখছি । গ্রামজুড়ে ছেয়ে থাকে । আমাদের গ্রামের কেউ ওদের বিরক্ত করে না, আর বিরক্ত করে না বলেই প্রতিবছর এই গ্রামে এসে থাকে ওরা ।

এবছরও পাপুড়িতে এসেছে পাখির দল । বাসা বেঁধেছে । উড়ে বেড়াচ্ছে বীরভূমের আকাশে । তাদের দেখে কে বলবে তারা পরিযায়ী, তারা যেন এই গ্রামেরই একজন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.