বোলপুর, 16 নভেম্বর: ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি সংক্রান্ত বিতর্কিত ফলক কেন্দ্রীয় সরকার সরানোর নির্দেশ দিতেই খুশির হাওয়া শান্তিনিকেতনে ৷ এই ফলকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তাই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় হিসেবেই দেখছেন ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটির শিল্পমন্ত্রী তথা বীরভূম জেলা তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা চন্দ্রনাথ সিংহ । অন্যদিকে বিজেপির জাতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা চাইছেন, এই ফলক বিতর্কের এবার অবসান হোক ৷
উল্লেখ্য, শান্তিনেকতনকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা দিয়েছে ৷ তার পরই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্রভবন ও গৌরপ্রাঙ্গণে তিনটি শ্বেত পাথরের ফলক বসানো হয় ৷ সেখানে আচার্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উপাচার্য হিসেবে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম ছিল ৷ কিন্তু যে শান্তিনিকেতনের সঙ্গে জড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সেই কবিগুরুর নাম ফলকে না থাকায় বিতর্ক ছড়ায় ৷
চারিদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকেই আক্রমণের নিশানা করে সবপক্ষ ৷ স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই নিয়ে মুখ খোলেন ৷ ফলক না সরানো পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষণা করেন ৷ তার পর গত 27 অক্টোবর থেকে 9 নভেম্বর পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ করে তৃণমূল কংগ্রেস ৷
এরই মাঝে মেয়াদ শেষ হয় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ৷ আর তিনি বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে প্রাক্তন হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে শিক্ষমন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে যে ওই বিতর্কিত ফলক সরিয়ে দিতে হবে ৷ বদলে নতুন ফলক বসানো হবে ৷ আর নতুন ফলক কেমন হবে তার জন্য ছ’জন অধ্যাপককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে । তাই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের জয় হল বলে মনে করছেন চন্দ্রনাথ সিং ৷
রাজ্যের ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটির শিল্পমন্ত্রী বলেন, "এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় ৷ কবিগুরুকে বাদ দিয়ে কিছুই হয় না । তখনকার উপাচার্য নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই ফলক বসিয়েছিলেন । আমরা দিদির নির্দেশে আন্দোলন করেছি 14 দিন ৷ তাই এই জয় তৃণমূলের জয় ৷ আর ফলক বদল করা হবে এতে সবাই খুশি ।"
তবে শুধু তৃণমূল কংগ্রেস নয়, সেই সময় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সমালোচনা করেছিলেন অনুপম হাজরাও ৷ তাই কেন্দ্রের নির্দেশ আসার পর এই বিতর্ক নিয়ে বিজেপির জাতীয় সম্পাদক বলেন, "বিদ্যুৎ চক্রবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে তৈলমর্দন করতে এই ফলক বসিয়েছিলেন ৷ যাতে নিজের মেয়াদ বাড়ে ৷ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুমতি ছাড়াই এই ফলক বসানো হয়েছিল ৷ এরপর রবীন্দ্র অনুরাগী ও শান্তিনিকেতনবাসীর মনের মতো ফলক বসবে ৷ তাই ফলক বিতর্কের ইতি এখানেই টানা হোক ।"
আরও পড়ুন: