রায়গঞ্জ, 19 জানুয়ারি: রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের মর্গের বাইরে একটি কাঠের বেঞ্চে মাথা নিচু করে বসে রয়েছেন এক মহিলা ৷ চোখমুখ থমথমে ৷ সংবাদ মাধ্যমকে দেখে আরও যেন গুটিয়ে গেলেন তিনি ৷ মহিলার নাম আফরোজা খাতুন ৷ শনিবার গোয়ালপোখরে পুলিশের গুলিতে নিহত পলাতক বন্দি সাজ্জাক আলমের স্ত্রী ইনি ৷
স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে কয়েকজন আত্মীয়ের সঙ্গে মর্গে এসেছেন, দেহ শনাক্তকরণ ও নিয়ে যাওয়ার জন্য ৷ কিন্তু, স্বামীর মৃত্যুতেও তিনি নির্বিকার ৷ গত পাঁচবছরে তাঁর সাজ্জাকের সঙ্গে দেখাই হয়নি ৷ পরিবারের খোঁজও নেননি তিনি ৷ আর তারপর ডাকাতি-সহ নানান অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গত কয়েকবছর সাজ্জাক জেলে ছিলেন ৷
আর তারপর গত বুধবার গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়া এলাকায় দুই পুলিশ কর্মীকে গুলি করে পালান সাজ্জাক আলম ৷ এই ঘটনা নিয়ে সাজ্জাকের স্ত্রীর বক্তব্য, "আমি জানি না ওঁর অপরাধ সম্পর্কে ৷ আমার সঙ্গে বহুবছর দেখা নেই ৷ শুনেছি পুলিশকে গুলি করে পালিয়েছিল ৷ তাই পুলিশ ওঁকে গুলি করেছে ৷"
এ নিয়ে সাজ্জাকের আত্মীয় তফিজুল হক বলেন, "সাজ্জাক কেমন ছিল, তা আমি জানি না ৷ কখনও ওঁকে দেখিনি ৷ দেড় বছর হল আমার বিয়ে হয়েছে ৷ শুধু ওঁর নামটাই শুনেছি ৷ সাজ্জাক পুলিশকে গুলি করে পালিয়েছে, এখবর পুলিশ আমাদের জানিয়েছিল ৷ গতকাল শুনলাম সাজ্জাককে পুলিশ গুলি করেছে ৷"
উল্লেখ্য, বুধবার এক সঙ্গীর মদতে দুই পুলিশ কর্মীকে গুলি করে পালান সাজ্জাক আলম ৷ তার পরের দিন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার শিলিগুড়ি থেকে বাহিনীর উদ্দেশে বার্তা দেন, "এবার অপরাধীরা একবার গুলি চালালে, আমরা চারগুণ গুলি চালাব ৷ তার জন্যই আমাদের ট্রেনিং হয়েছে ৷"
পুলিশ সূত্রে খবর, ডিজি-র সেই বার্তার পরপরই 24-48 ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন সাজ্জাক এবং তাঁর সঙ্গীদের ধরতে ৷ তারপরেই শনিবার সকালে গোয়ালপোখরে দিয়ে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে সাজ্জাকের মৃত্যু হয় ৷ রবিবার ময়নাতদন্তের পর তাঁর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৷