বোলপুর, 9 ডিসেম্বর: বিকল্প পৌষমেলা (Alternative Poush Mela) নিয়ে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের তত্ত্বাবধানে বৈঠক করল বীরভূম জেলা প্রশাসন । পরিবেশ আদালতের নির্দেশে 2017 সাল থেকে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় বাজি পোড়ানো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ সেই রীতি ফের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বিকল্প পৌষমেলায় ৷ জানালেন মন্ত্রী (Chandranath Sinha)। এছাড়াও তিনি জানান, বিশ্বভারতীর সঙ্গে অন্তঃদ্বন্দ্বের জন্য বিকল্প পৌষমেলায় রাজ্য সরকারকে সহযোগিতা করছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট (Birbhum News)।
শুক্রবার বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরের সভাকক্ষে বিকল্প পৌষমেলা নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বীরভূম জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) সুরজিৎ দে, এমডিপিও নিখিল আগরওয়াল, মহকুমাশাসক অয়ন নাথ, পৌরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ প্রমুখ ৷ এছাড়াও বৈঠকে ছিলেন বোলপুর পৌরসভার কাউন্সিলররা, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের প্রতিনিধিরা, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকেরা, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার প্রমুখ ৷ এ বছর শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের তত্ত্বাবধানে হবে বিকল্প মেলাটি । সহযোগিতা করবে বোলপুর পৌরসভা, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ, কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেট ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ।
প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় 24 ডিসেম্বর অর্থাৎ 8 পৌষ বাজি পোড়ানোর রেওয়াজ ছিল ৷ পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তের দায়ের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করে ৷ সেইমতো 2017 সাল থেকে পৌষ উৎসবের অনুষ্ঠান সূচি থেকে বাদ পড়েছিল বাজি পোড়ানোর রীতি ৷ তবে বিকল্প পৌষমেলায় বাজি পোড়ানোর রীতি ফিরিয়ে আনা হচ্ছে । এ দিনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ৷ তিনি বলেন, "বাজি পোড়ানোর জন্য যা যা অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন সেগুলি নেওয়া হবে ।" 23 ডিসেম্বর থেকে 6 দিন চলবে এই মেলা ।
আরও পড়ুন: পৌষমেলার জন্য পূর্বপল্লির মাঠ ভাড়া চাইবে বোলপুর পৌরসভা
2019 সালে শেষ বার পূর্বপল্লীর মাঠে হয়েছিল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা । 2020 সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য মেলার আয়োজন সম্ভব হয়নি ৷ 2021 সালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সকলেই আশা করেছিল কোভিড বিধি মেনে ছোট করে হলেও ঐতিহ্য বাঁচাতে মেলা করবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । কিন্তু সে বছর মেলা না করায় বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প মেলা করেছিল বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও বোলপুর পৌরসভা ।
এ বছরও পৌষমেলা হবে, নাকি হবে না, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেয়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । মেলা সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে মেলা করার বিষটি পুনঃবিবেচনা করে দেখতে বলেছে ।
প্রসঙ্গত, 23 ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় পৌষমেলা ৷ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ অর্থাৎ পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত অব্যাহত থাকল ।