বাঁকুড়া, 6 জুন : বাঁকুড়ার সংখ্যালঘু একটি গ্রাম পুনিশোল ৷ একটা সময় এই গ্রামে ছেলেমেয়েরা পড়াশুনোর নাম শুনলে পিছপা হত । এক দশক আগেও এই গ্রামে চোর ছ্যাঁচড়ের ভয়ে কেউ পা দিতেন না ৷ সংখ্যালঘু প্রধান এই গ্রামটি একটা সময় ‘মিনি চম্বল’ হিসেবে পরিচিত ছিল । সেই গ্রামই এবার খবরে উঠে এল কৃতী ছাত্রের হাত ধরে ৷ যা কেউ ভাবতে পারেননি এতদিন ৷
পুনিশোল গ্রামের এক হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে আলতামাস আজিজ খান ৷ এবার মাধ্যমিকে 661 নম্বর পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ৷ মোট 94.42 শতাংশ নম্বর, যা এই গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে অকল্পনীয় ছিল ৷ আলতামাসের এই সাফল্যে খুশি পুরো গ্রাম ৷ এই কৃতীর বাবা আব্দুল আজিজ খান পেশায় একজন দিনমজুর ৷ তিন ছেলে এবং এক মেয়ে নিয়ে অভাব অনটনের সংসার ৷ তার মধ্যেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন : Bratya Basu Ranks 8th in Madhyamik : 'ব্রাত্য বসু' মাধ্যমিকে অষ্টম ! কী করে হল এমনটা ? জানুন...
সংসারের হাল ধরতে অনেক ক্ষেত্রে আলতামাসকেও মাটি কাটতে কোদাল হাতে বেরিয়ে যেতে হয়েছে । কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পড়াশুনো করত সে । বেশি সময় ধরে পড়াশুনোর ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না তার, কারণ সংসারের অনটন দূর করতে তাকেও বেরিয়ে যেতে হতো কাজ করতে ।
আলতামাসের বাবা বলেন, "অভাবের তাড়নায় ছেলেকে ঠিকমত টিউশন দিতে পারিনি ৷ তা সত্ত্বেও ছেলের এই সাফল্যে বেজায় খুশি । কিন্তু এরপর ছেলের খরচ কীভাবে চালাব ? আমার যা মজুরি তাতে তো সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয় ৷"
ভবিষ্যতে আলতামাসের ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ৷ তবে তাতে অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়ালে ? তবে আর কী, যদি কেউ সাহায্য করে তবে ভাল নইলে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে ৷ সটান উত্তর আলতামাসের ৷ তার কথায়, গ্রামের বহু মানুষ চিকিৎসার অভাবে কষ্ট করে বেঁচে আছেন ৷ তাঁদের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকঠাক পৌঁছে দেবার জন্য ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ৷ গ্রামের ছেলের স্বপ্ন সফল করতে তাই কোনও সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে আসুক এটাই প্রার্থনা আলতামাসের পরিবার ও গ্রামবাসীদের ৷
আরও পড়ুন : Kiran Dutta : মাধ্যমিকে আউটস্ট্যান্ডিং রেজাল্ট বং গাইয়ের, মার্কশিট পোস্ট করে দিলেন বার্তা