ETV Bharat / state

আরজি কর-কাণ্ডে রায় কোন পথে ? চিন্তায় একাকী সঞ্জয়, মুখে তুলছেন না খাবার-ওষুধ - RG KAR RAPE AND MURDER VERDICT

আরজি কর-কাণ্ডে আদালতের রায়দানের আগে চিন্তা ! জীবনযাত্রায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে সঞ্জয় রায়ের ৷ তাঁর উপর রাখা হয়েছে বিশেষ নজরদারি ৷

ETV BHARAT
চিন্তায় একাকী সঞ্জয়, মুখে তুলছেন না খাবার-ওষুধ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 15, 2025, 6:50 PM IST

কলকাতা, 15 জানুয়ারি: হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন । আগামী 18 জানুয়ারি, অর্থাৎ আগামী শনিবার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রায়দান করবে শিয়ালদা আদালত । সেই সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই জীবনযাত্রায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ৷ প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রের খবর, ক্রমে নিজেকে একা করে নিচ্ছেন তিনি । খাওয়া-দাওয়াও একপ্রকার শিকেয় তুলে দিয়েছেন ৷ এমনকি রোজকার ওষুধপত্রও খাচ্ছেন না প্রাক্তন এই সিভিক ভলান্টিয়ার ৷

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় রায়কে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ সেলে রাখা হয়েছে । তবে রায়দানের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই খাওয়া-দাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন তিনি ৷ এমনকি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রেক্ষিতে সঞ্জয় রায়ের যে রোজকার ওষুধপত্র চলে, তিনি সেই সব ওষুধপত্রও নাকি খাচ্ছেন না ৷

ETV BHARAT
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে সঞ্জয় রায়ের (নিজস্ব চিত্র)

এছাড়াও সঞ্জয় রায়ের উপর বিশেষভাবে নজরদারির ব্যবস্থা করেছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ৷ তার অন্যতম কারণ হল, আগামী 18 তারিখ শিয়ালদা আদালত কী রায় দিতে চলেছে, সেই বিষয় নিয়ে সাংঘাতিক কৌতূহলী প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের অন্যান্য বন্দিরাও । সেই কারণেই কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে সঞ্জয়কে একটি পৃথক সেলে রাখা হয়েছে ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক আধিকারিক এবিষয়ে বলেন, "এই অবস্থায় আমরা সঞ্জয়ের উপর বিশেষ ভাবে নজরদারি রাখার বন্দোবস্ত করেছি । এমনকি সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টলেশন করে তাঁর গতিবিধির উপরও নজর রাখা হচ্ছে । সংশ্লিষ্ট সেলে আর অন্য কাউকে রাখা হচ্ছে না । এছাড়াও তাঁর সঙ্গে সবাইকে দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না । এই বিষয়ে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে ৷"

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রের খবর, আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আগামী 18 জানুয়ারি শিয়ালদা আদালত কী রায় ঘোষণা করতে পারে, তার কথা চিন্তা করেই সঞ্জয় নিজেকে কার্যত একা করে ফেলেছেন । এক্ষেত্রে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফেও যাবতীয় সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে ।

গত 9 অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল সেই হাসপাতালেরই এক তরুণী চিকিৎসকের দেহ । সেই ঘটনা রাজ্য তথা দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেয় ৷ পুলিশি তদন্তে জানা যায়, তরুণী ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে । পরে কলকাতা পুলিশ তদন্তে নেমে তাদের এক সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে । তবে এই ঘটনার তদন্তভার পরবর্তী সময়ে আদালতের তরফ থেকে তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কাঁধে ।

পরবর্তী সময়ে কলকাতা পুলিশের হেফাজত থেকে সঞ্জয়কে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই । চলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ । এছাড়াও একাধিক তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে আরজি করের ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখানে তথ্য-তালাশ করতে থাকেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা । এছাড়াও বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে ইতিমধ্যেই সেগুলি বাইরের রাজ্যে গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে ।

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয় যে, আরজি করে ওই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কারও সেভাবে যোগ তারা পায়নি । এমনকি আরজি কর হাসপাতালের চারতলার ইমারজেন্সি বিল্ডিংয়ের যে সেমিনার হল থেকে ওই তরুণী চিকিৎসকের দেহ পাওয়া গিয়েছিল, সেটি ঘটনাস্থল নাও হতে পারে, এমনটাও উল্লেখ করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে । এরপরেই শুরু হয় সঞ্জয় রায়ের ট্রায়াল পর্ব । আর এই ট্রায়াল পর্ব চলাকালীন আদালতে প্রবেশ ও বেরোনোর সময় একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা যায় সঞ্জয় রায়কে । তাঁর মুখ বন্ধ করতে মরিয়া চেষ্টা চালাতে দেখা গিয়েছে কলকাতা পুলিশকে ।

এরপরেই শিয়ালদা আদালতে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করে সিবিআই । পরবর্তী সময়ে আদালত জানায়, আগামী 18 জানুয়ারি আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রায় দেওয়া হবে । আর সেই রায় দেওয়ার দিন ধার্য হওয়ার পরেই সঞ্জয় রায়ের মধ্যে একাধিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে বলে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে । এই অবস্থায় যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্যই সঞ্জয় রায়ের উপর এবার বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ।

কলকাতা, 15 জানুয়ারি: হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন । আগামী 18 জানুয়ারি, অর্থাৎ আগামী শনিবার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রায়দান করবে শিয়ালদা আদালত । সেই সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই জীবনযাত্রায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ৷ প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রের খবর, ক্রমে নিজেকে একা করে নিচ্ছেন তিনি । খাওয়া-দাওয়াও একপ্রকার শিকেয় তুলে দিয়েছেন ৷ এমনকি রোজকার ওষুধপত্রও খাচ্ছেন না প্রাক্তন এই সিভিক ভলান্টিয়ার ৷

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় রায়কে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ সেলে রাখা হয়েছে । তবে রায়দানের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই খাওয়া-দাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন তিনি ৷ এমনকি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রেক্ষিতে সঞ্জয় রায়ের যে রোজকার ওষুধপত্র চলে, তিনি সেই সব ওষুধপত্রও নাকি খাচ্ছেন না ৷

ETV BHARAT
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে সঞ্জয় রায়ের (নিজস্ব চিত্র)

এছাড়াও সঞ্জয় রায়ের উপর বিশেষভাবে নজরদারির ব্যবস্থা করেছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ৷ তার অন্যতম কারণ হল, আগামী 18 তারিখ শিয়ালদা আদালত কী রায় দিতে চলেছে, সেই বিষয় নিয়ে সাংঘাতিক কৌতূহলী প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের অন্যান্য বন্দিরাও । সেই কারণেই কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে সঞ্জয়কে একটি পৃথক সেলে রাখা হয়েছে ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক আধিকারিক এবিষয়ে বলেন, "এই অবস্থায় আমরা সঞ্জয়ের উপর বিশেষ ভাবে নজরদারি রাখার বন্দোবস্ত করেছি । এমনকি সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টলেশন করে তাঁর গতিবিধির উপরও নজর রাখা হচ্ছে । সংশ্লিষ্ট সেলে আর অন্য কাউকে রাখা হচ্ছে না । এছাড়াও তাঁর সঙ্গে সবাইকে দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না । এই বিষয়ে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে ৷"

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রের খবর, আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আগামী 18 জানুয়ারি শিয়ালদা আদালত কী রায় ঘোষণা করতে পারে, তার কথা চিন্তা করেই সঞ্জয় নিজেকে কার্যত একা করে ফেলেছেন । এক্ষেত্রে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফেও যাবতীয় সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে ।

গত 9 অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল সেই হাসপাতালেরই এক তরুণী চিকিৎসকের দেহ । সেই ঘটনা রাজ্য তথা দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেয় ৷ পুলিশি তদন্তে জানা যায়, তরুণী ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে । পরে কলকাতা পুলিশ তদন্তে নেমে তাদের এক সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে । তবে এই ঘটনার তদন্তভার পরবর্তী সময়ে আদালতের তরফ থেকে তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কাঁধে ।

পরবর্তী সময়ে কলকাতা পুলিশের হেফাজত থেকে সঞ্জয়কে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই । চলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ । এছাড়াও একাধিক তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে আরজি করের ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখানে তথ্য-তালাশ করতে থাকেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা । এছাড়াও বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে ইতিমধ্যেই সেগুলি বাইরের রাজ্যে গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে ।

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয় যে, আরজি করে ওই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কারও সেভাবে যোগ তারা পায়নি । এমনকি আরজি কর হাসপাতালের চারতলার ইমারজেন্সি বিল্ডিংয়ের যে সেমিনার হল থেকে ওই তরুণী চিকিৎসকের দেহ পাওয়া গিয়েছিল, সেটি ঘটনাস্থল নাও হতে পারে, এমনটাও উল্লেখ করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে । এরপরেই শুরু হয় সঞ্জয় রায়ের ট্রায়াল পর্ব । আর এই ট্রায়াল পর্ব চলাকালীন আদালতে প্রবেশ ও বেরোনোর সময় একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা যায় সঞ্জয় রায়কে । তাঁর মুখ বন্ধ করতে মরিয়া চেষ্টা চালাতে দেখা গিয়েছে কলকাতা পুলিশকে ।

এরপরেই শিয়ালদা আদালতে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করে সিবিআই । পরবর্তী সময়ে আদালত জানায়, আগামী 18 জানুয়ারি আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রায় দেওয়া হবে । আর সেই রায় দেওয়ার দিন ধার্য হওয়ার পরেই সঞ্জয় রায়ের মধ্যে একাধিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে বলে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে । এই অবস্থায় যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্যই সঞ্জয় রায়ের উপর এবার বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.