দার্জিলিং, 15 জানুয়ারি: দার্জিলিং চিড়িয়াখানার মুকুটে যোগ হল নয়া পালক ৷ দেশের মধ্যে প্রথম বায়ো ব্যাংকিং ফেসিলিটি ও পশুদের মিউজিয়াম তৈরি করে নজির স্থাপন করল দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিকাল পার্ক । যা এখনও করতে পারেনি দেশের অন্যান্য কোনও চিড়িয়াখানা ৷
কেন্দ্রীয় জু অথরিটির অধীন কনসোর্টিয়াম অফ জু'স অ্যান্ড বায়ো ব্যাংকিংয়ের অধীনে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় এই বায়ো ব্যাংক তৈরি করা হয়েছে । সঙ্গে ওই মিউজিয়ামটিও । তাতে খরচ হয়েছে প্রায় কোটি টাকা । এই বায়ো ব্যাংকে বিলুপ্তপ্রায় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতির প্রাণীদের ডিএনএ, জিনোম, গ্যামেটের মতো অংশের নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হবে । আর সেই নমুনা দিয়েই আগামীতে গবেষণা করার সুযোগ থাকবে । মূলত প্রাণীদের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রাণীদের মিউটেশনের কারণ ও প্রভাব, জীব বৈচিত্র্য-সহ একাধিক বিষয়ে গবেষণা করা যাবে সেই সব নমুনা দিয়ে । পাশাপাশি মৃত প্রাণীদের শরীর ও কঙ্কাল সংরক্ষণ করা হবে ওই মিউজিয়ামে ।
এই বিষয়ে দার্জিলিং চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর বাসবরাজ হোলেইয়াচি ইটিভি ভারতকে বলেন, "কেন্দ্রীয় জু অথরিটির কনসোর্টিয়াম অফ জুয়ের অনুমোদনে রাজ্য বনদফতরের সহযোগিতা ও জু অথরিটির গাইডলাইন মেনে এই বায়ো ব্যাংক তৈরি করা হয়েছে । দেশের প্রথম কোনও চিড়িয়াখানায় এই বায়ো ব্যাংক ও মিউজিয়াম তৈরি করা হল । এই বায়ো ব্যাংকে বিভিন্ন প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে রাখা হবে । যা আগামীতে নানা গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে ।"
সলিটারি নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের সম্পাদক ও পশু বিশেষজ্ঞ কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, "এটা বন দফতরের আসাধারণ উদ্যোগ ৷ দেশের মধ্যে প্রথম বায়ো ব্যাংক করা হচ্ছে দার্জিলিংয়ে ৷ এই বায়ো ব্যাংক আগামীতে অভূতপূর্ব কাজে আসবে । বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণীদের জীব বৈচিত্র্য, তাদের মিউটেশন, জলবায়ুর প্রভাব, বিলুপ্তের কারণ, রোগের ক্ষেত্রে গবেষণা করা যাবে ।"
দার্জিলিং চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বায়ো ব্যাংকের নমুনা দিয়ে কেন্দ্রীয় জু অথরিটির অনুমোদনে আগামীতে গবেষণা করা যাবে । বায়ো ব্যাংকে অন্তত 40 থেকে 45 বছর পর্যন্ত নমুনা সংরক্ষণ করে রাখা যাবে । প্রথম পর্যায়ে 9টি প্রজাতির প্রায় 20টি নমুনা সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে । পাশাপাশি মিউজিয়ামেও পাহাড়ি বিভিন্ন প্রজাতির দেহাংশ ও কঙ্কাল সংরক্ষণ করা হয়েছে ।
চিড়িয়াখানার পাশাপাশি পর্যটকদের জন্যও ওই মিউজিয়ামটি খুলে দেওয়া হয়েছে । দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় বিলুপ্তপ্রায় শিডিউল ওয়ান প্রজাতির প্রায় 19টি প্রাণী রয়েছে । যার মধ্যে রেড পান্ডা, স্নো লেপার্ড, সাইবেরিয়ান টাইগার ও মিশমি টাকিনের মতো প্রাণী রয়েছে । সেইসব প্রাণীর ডিএনএ, জিনোম ও গ্যামেট ইতিমধ্যে সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ।