আলিপুরদুয়ার, 2 সেপ্টেম্বর : শেষকৃত্যের বাকি আর কয়েক মুহূর্ত । শ্মশান জুড়ে কান্নার রোল । ব্রাহ্মণের নির্দেশে মৃতদেহ চুল্লির পথে । আচমকাই সৎকারের ঠিক আগেই নড়ে উঠল মৃতদেহ । ঘি, মধু মাখা নগ্ন মৃতদেহ কাঁধে চাপিয়ে শ্মশান থেকে সোজা নিয়ে আসা হল জেলা হাসপাতালে । কিন্তু সেখানে ফের রোগীকে মৃত ঘোষণা করা হয় ৷
শ্মশান ফেরত মৃতদেহ সরাসরি হাসপাতালের CCU-তে ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মৃতের পরিবারের বিরুদ্ধে । মৃত ব্যক্তির পরিবারের এই কাজ দেখে শ্মশান যাত্রী হিসেবে সেখানে থাকা জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, টাউনব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় ততক্ষণে পিছুটান দিয়েছেন ।
এদিকে শ্মশানে মৃতদেহ বেঁচে ওঠার খবর চাউর হতেই জেলা হাসপাতালে ভিড় জমাতে থাকেন উৎসুক জনতা । বুধবার সকাল আটটায় আলিপুদুয়ার জেলা হাসপাতালে এই ঘটনার সূত্রপাত । আলিপুদুয়ার পৌরসভার 11 নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা কল্যাণ বাগচীর (81) মৃত্যু হয় জেলা হাসপাতালে । কল্যাণবাবুর মৃতদেহ ঘণ্টা তিনেক আলিপুদুয়ার হাসপাতালে রেখে সকাল 11টা নাগাদ তুলে দেওয়া হয় তাঁর পরিবারের হাতে ।
দুপুর বারোটা নাগাদ কল্যাণবাবুর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুদুয়ার পৌরসভার শোভাগঞ্জের বৈদ্যুতিন চুল্লিতে । এরপর সৎকারের যাবতীয় প্রথা মেনে মৃতদেহ চুল্লিতে ঢোকানোর আগেই মৃতদেহ বেশ কয়েকবার নড়ে ওঠে বলে দাবি মৃতের পরিবারের । সঙ্গে সঙ্গেই সেই মৃতদেহ চুল্লিতে না ঢুকিয়ে নিয়ে আসা হয় জেলা হাসপাতালে ।
অভিযোগ, জেলা হাসপাতালের CCU কেয়ার ইউনিটে সেই মৃতদেহ জোর করে ঢুকিয়ে দেয় তাঁর পরিবারের লোক । এই ঘটনায় হাসপাতাল জুড়ে হইচই পড়ে যায় । মৃতব্যক্তি জীবিত দাবি করে হাসপাতালে শোরগোল শুরু করে মৃতের পরিবার । যদিও শ্মশান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা ব্যক্তিকে ফের মৃত বলে ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
আলিপুদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মণ বলেন, ‘‘এটা ওই পরিবারের ভুল ধারণা । মৃতের পরিবার এটা অন্যায় কাজ করেছে । মৃতদেহটিকে হুজ্জুতি করে CCU-তে ঢুকিয়ে দিয়েছে । এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার পুলিশকে জানানো হয়েছে ।’’
আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ জানায় পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে । আলিপুরদুয়ার পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি শ্মশানে গিয়েছিলাম তবে ফিরে এসেছি । কী হয়েছে জানি না ।’’ এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘আমি শ্মশানের বাইরে থেকে ফিরে এসেছি ।’’