কলকাতা, 23 নভেম্বর: বাংলায় পুরুষ টেবিল টেনিসে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলার অপর নাম অঙ্কুর ভট্টাচার্য। রাজ্যস্তরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া যাঁর কাছে একরকম অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া রাজ্য টেবিল টেনিস টুর্নামেন্টে অঙ্কুরের মাথায় দ্বিমুকুট। রাজ্য পেরিয়ে জাতীয় স্তরেও পদকের তালিকায় নাম তোলা অভ্যাস করেছে সে। এর আগে গোয়ায় অনুষ্ঠিত শেষ জাতীয় গেমসে চারটে পদক জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় অখুশি। বিশেষ করে পুরুষদের ডাবলস ফাইনালে সোনা জিততে না-পারার আক্ষেপ এখনও ভুলতে পারেনি।
এবার রাজ্য জাতীয় স্তর পেরিয়ে অঙ্কুর স্লোভানিয়ার পথে। সেখানে যুব বিশ্বকাপে অংশ নিতে রওনা হল সে। এই নিয়ে তৃতীয়বার যুব বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে সে। একটি বছর বাদ দিলে 2015 সাল থেকে রাজ্য স্তরের যে কোনও টুর্নামেন্টে অঙ্কুর চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছে। তবে রাজ্য স্তর নয় অঙ্কুরের চোখ এখন আর্ন্তজাতিক পদকে। বাবা অংশুমান এবং মা কুন্তলী ভট্টাচার্য দু'জনেই টেবিল টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। দু'জনের স্বপ্ন পূরণের গুরুদায়িত্ব এখন অঙ্কুরের কাঁধে। চাপ নয় সাফল্যের নেশা অঙ্কুরকে রাজ্য জাতীয় আর্ন্তজাতিক স্তরে ছুটিয়ে বেড়াচ্ছে।
ক্রিকেটের ভক্ত বছর সতেরোর ছেলেটি অলিম্পিক পদকের স্বপ্ন দেখে। তার জন্য তাড়াহুড়ো করতে নারাজ। বরং ধাপে ধাপে এগোতে চায়। বিদেশে খেলতে যাওয়া নতুন নয়। পর্তুগালও খেলে এসেছে। বিশ্বের প্রথম সারির খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা অঙ্কুরকে আরও পরিশীলিত করেছে। তাঁর এই উন্নতি নজর টেনেছে জাতীয় গেমসে বাংলা দলের কোচ সৌরভ চক্রবর্তীর। বলছিলেন, "ছেলেটা ভালো খেলোয়াড়। অনেক দূর যাওয়ার মশলা রয়েছে। তবে আরও উন্নতি দরকার। বাচ্চা ছেলে অনেক সময় পড়ে রয়েছে। একথা বলতে হবে অনেক পরিণত অঙ্কুর।"
রাজারহাটে নিজের বাড়িতে টেবিল টেনিস বোর্ড রয়েছে। শুধু তাই নয় ছোটখাটো জিম রয়েছে। সেখানেই কার্যত সারা দিন প্র্যাকটিস করে চলেছে অঙ্কুর। তার প্র্যাকটিসে ব্যক্তিগত কোচের ভূমিকা পালন করে চলেন বাবা অংশুমান ভট্টাচার্য। "বাবা আমার সবচেয়ে বড় সমালোচক। ভুল ত্রুটি হলে আমি যেখানেই খেলতে যাই বাবার সঙ্গে কথা বলি। তাঁর পরামর্শেই আমি ভুলগুলো শুধরে নিই," বলল অঙ্কুর। ছেলের খেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন অংশুমানও।
বলছেন, "টেবিল টেনিস খেলার জন্য খরচ প্রচুর। ভালো স্পনসর না-থাকলে একজন খেলোয়াড়ের স্বপ্নপূরণ হওয়া সমস্যা। ওর পারফরম্যান্স ওর হয়ে কথা বলছে। তাই স্পনসর পেলে সুবিধা হয়। রাজ্য সরকার যদি সাহায্য করত তাহলে সুবিধা হত।" যাকে ঘিরে স্বপ্নের আবর্ত সেই অঙ্কুরও আত্মবিশ্বাসী। বলছে, "বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে শুধু খেলা নয় জয়ও পেয়েছি। আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে খেলার জন্য শুধু টেকনিক নয় শারীরিক সক্ষমতাও জরুরি। সেটাতে আমি কিছুটা পিছিয়ে। বাড়তি নজরও দিচ্ছি। স্লোভানিয়াতে আমি পদক জয়ের লক্ষ্যে নামব। আপাতত জাতীয় খেতাব, এশিয়ান গেনস কমনওয়েলথ পার করে অলিম্পিকে সফল হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছি।"
আরও পড়ুন: