বোস্টন, 7 মে : আমি এখন অ্যামেরিকার ম্যাসাচুসেটস প্রদেশের সামারভিলে আছি ৷ সামারভিল অ্যাটল্যান্টিক মহাসাগরের তীরে একটি রাজ্য ৷ যার রাজধানী বোস্টন ৷ আমার ছেলে এই শহরের বাসিন্দা ৷ তাঁর কাছেই 14 ডিসেম্বর থেকে রয়েছি আমি আর আমার স্ত্রী ৷ ছয় মাসের ভিসা নিয়ে ডিসেম্বরে ছেলের কাছে ঘুরতে আসি ৷ এখন ভিসার মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে ৷ মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু এখনও কোন জবাব মেলেনি ৷ জুন মাসে শেষ হয়ে যাবে ভিসার মেয়াদ ৷ এদিকে শোনা যাচ্ছে এখানে লকডাউন 18 মে থেকে বাড়িয়ে 29 মে করা হতে পারে ৷ তবে এখন পর্যন্ত কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হয়নি ৷ ঘরেই বন্ধ আছি ৷ আমার বয়স 70-এর উপর । স্ত্রীরও 60-এর উপর ৷ তাই আমাদের বলা হয়েছে ঘরেই থাকতে ৷
আমার অনেক ইচ্ছে ছিল মেজর লিগ সকার দেখার কিন্তু আর হয়ে উঠল না ৷ ভেবেছিলাম বোস্টনে আছি যখন এই সুযোগে একবার দেখেই ফেলব । নিউইয়র্কেও ঘুরতে যাব ভেবেছিলাম সেটাও হল না ৷ আমরা সবাই জানি নিউইয়র্কে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ৷ অনেকেই মনে করছেন আরেক দফায় আসতে পারে কোরোনা সংক্রমণ ৷ যদি তা হয় সেক্ষেত্রে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে ৷
কিন্তু আমার চিন্তা আমি কী করে দেশে ফিরব? আমাদের ফিরে যাওয়াটাই এখন অনিশ্চিত ৷ 7 তারিখ থেকে 13 তারিখে আমরা দেশে ফিরতে পারি ৷ ভারত সরকারের এটা ভালো উদ্যোগ ৷ কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের ফিরে যাওয়াটা খুব মুশকিল ৷ তাঁর কারণ অনেক টাকার ব্যাপার । সেই সঙ্গে দেশে ফিরেও কোথায় যাব তা নিয়েও সংশয় আছে ৷ বরং এখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে ৷ সেই সঙ্গে যেহেতু আমরা বাড়িতেই আছি সেহেতু অনেকটাই নিশ্চিন্ত ৷
কিন্তু আমার মনটা পড়ে রয়েছে কলকাতায় ৷ ফুটবল জগতে ৷ সারা পৃথিবীতে ফুটবল খেলা এখন বন্ধ ৷ TV-তে সব বন্ধ, কিছুই দেখতে পাচ্ছি না ৷কলকাতা লিগ বন্ধ ৷ জেলার খেলাগুলি বন্ধ ৷ শুধু আমার একটাই যোগাযোগ ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে বিভিন্ন রেফারি ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি ৷ ওইটুকুই যা আনন্দ ৷ কিন্তু একটা দুশ্চিন্তা তো থেকেই যায় ৷ 3 মে আমার দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এখন কবে, কখন, কীভাবে দেশে ফিরব তা জানা নেই ৷