কলকাতা : আজ বিশ্ব সংগীত দিবস । একমাত্র সংগীতই মানুষকে সব ধরনের গ্লানি থেকে মুক্ত করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা । তাই মিউজ়িক থেরাপিকেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ থেরাপির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে । আজকের এই বিশেষ দিনে একাধিক শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ETV ভারত ।
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী : সময় থেকেই জন্ম সংগীতের । এইটাই হল সবচেয়ে চিন্তার ও বোঝার বিষয় । যে সংগীত ছিল প্রকৃতিতে, তাকে বয়ে এনেছে নিজের মনে । কল্পনার মাধ্যমে তাকে সাজানো হয়েছে । সব দেশেই এই নিয়ম । আমাদের দেশে যেমন রাগ সংগীত । ঠিক তেমনই পাশ্চাত্য দেশ তাদের মতো করে সংগীত তৈরি করেছে । প্রকৃতির রূপ ও কল্পনা নিয়ে তৈরি করেছেন তাঁরা । আমরা গিয়েছি প্রকৃতির আত্মার ভিতরে । সেই গভীরতা থেকে ভারতীয় রাগ সংগীতের সৃষ্টি ।
আচার্য সঞ্জয় চক্রবর্তী : এখনও পর্যন্ত যত রকমের বিজ্ঞান আবিষ্কার হয়েছে, তার মধ্যে সংগীত সবচেয়ে প্রাচীনতম বিজ্ঞান । যা এখনও পর্যন্ত বর্তমান । প্রকৃতি সেইসব জিনিসকেই টিকিয়ে রাখে, যা সে মনে করে টিকিয়ে রাখার দরকার । সেই জন্যেই সংগীত সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বিজ্ঞান, যাকে প্রকৃতি নিজের স্বার্থে বাঁচিয়ে রেখেছে । তবে আমি মনে করি ওয়ার্ল্ড মিউজ়িক ডে ব্যবসায়িক কারণে বানানো একটা দিন । বা বলা যেতে পারে, সারাজীবন যেটা আছে তার জন্য একটা বিশেষ দিন । সংগীতের সুর, তাল, লয়, তিনটেই সময় । সময়ের সবকিছুর উপরে যদি সংগীত চলে আসে, তাহলে তো পৃথিবীতে অপরাধ বলে কিছু থাকবে না । অসুন্দর বলে কিছু থাকবে না । পৃথিবী চলবে কীভাবে ? সুন্দরকেই বা সুন্দর বলবে কে ? ওই জন্য সকলে সংগীতের দিকে যায় না । যেমন ধরুন, গত কয়েক মাস কী খারাপ সময় যাচ্ছে কোরোনা ভাইরাসের জন্য । এটা তৈরি করা । এর প্রয়োজন ছিল না ।
হৈমন্তী শুক্লা : আমরা যাঁরা গান বাজনা নিয়ে সারাজীবন কাটালাম, সেখানে দাঁড়িয়ে আলাদা একটা ওয়ার্ল্ড মিউজ়িক ডে আমি ভাবতেই পারি না । আমার সারা পৃথিবী গানের । ছোটোবেলা থেকে ওটা ছাড়া কিছু জানি না । ওতেই মুক্তি, ওতেই সবকিছু । বিশেষ করে আমি তো সেই অর্থে সংসারী না । আমার গানের সংসার । আমার বাড়িটায় কেউ এলে বুঝতে পারবে, গানই গান । আজকাল মিউজ়িক থেরাপি বেরিয়েছে, কতকিছু বেরিয়েছে...মিউজ়িক মানুষকে অনেক সুখ দেয়, শান্তি দেয় । সেই মানসিক শান্তি আর কিছুতে পাওয়া যায় বলে আমার মনে হয় না । মানুষ সংগীতের মধ্যে সবকিছু ভুলে থাকতে পারে । আমরা যখন গান করি, বিষয়টা মেডিটেশনের মতো হয়ে যায় । তাই আমাদের আলাদা করে মেডিটেশন করতেও হয় না । ওটার মধ্যে ঢুকে গেলে জগৎ সংসারের আর কিছুই মনে থাকে না । তাই আমার কাছে প্রত্যেকদিনই ওয়ার্ল্ড মিউজ়িক ডে ।